প্রঃ কিন্তু জেলা থেকে মানুষ প্রতি দিন শহরে চিকিৎসার জন্য আসেন, তার অন্যতম কারণ হল জেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক মেলে না। এ বিষয়ে কি কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে?
ডাঃ সুব্রত মৈত্র: এই স্টাফ সমস্যা দূর করতে জেলা হাসপাতালগুলোতে ডিএনবি (ডিপ্লমেট অফ ন্যাশনাল বোর্ড) স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ভারত সরকারের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের অধীনে স্বশাসিত সংস্থা ন্যাশনল বোর্ড অফ এক্সজামিনেশন এই কোসর্টি পরিচালনা করে। কিন্তু কোর্স চালু করব বললেই তো আর হল না। এর জন্য পরিকাঠামো দরকার। পরিকাঠামো না থাকলে অনুমোদন মিলবে না। তাই বেশ কয়েকটি জেলা হাসপাতালে এই পাঠক্রমের জন্য পরিকাঠামো তৈরি করে আবেদন করা হয়। অবশেষে ৬টি জেলা হাসপাতালে এই পাঠক্রম চালু করার অনুমোদন মিলেছে। এই হাসপাতালগুলি হল, বারাসত, চুঁচুড়া, কৃষ্ণনগর, পুরুলিয়া, হাওড়া ও আসানসোল। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, তমলুক এবং সিউড়ি হাসপাতালে এই কোর্স চালু করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এই ফলে হাসপাতালে স্টাফের সমস্যা অনেকটাই কমবে। তা ছাড়া পিজি ট্রেনিং কোর্স চালু হলে জেলা হাসপাতালগুলির মানোন্নয়ন হবে। এর পাশাপাশি জেলা হাসপাতালগুলোকে মেডিক্যাল কলেজগুলোর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পাওয়াও কোনও সমস্যা হবে না। ইতিমধ্যে এর ফল মিলতে শুরু করছে। শহরের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমছে। এই প্রক্রিয়ায় আগামী দিনে চিকিৎসার জন্য শহরে ছুটে আসা বন্ধ হয়ে যাবে।
প্র: কিন্তু গুরুতর রোগ যেমন, কিডনির ডায়ালিসিস, ক্যান্সার ইত্যাদি চিকিৎসার জন্য সাধারণ মানুষকে তো এখনও বেসরকারি হাসপাতালের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। এ নিয়ে কোনও ভাবনা চিন্তা রয়েছে আপনাদের?
ডাঃ সুব্রত মৈত্র: অবশ্যই। এখন রাজ্যের অনেকগুলি হাসপাতালে আইটিএউ (ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিট) তৈরি করা হয়েছে। যেমন দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট, মালদা, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, কৃষ্ণনগর, বারাসত, চুঁচুড়া, সিউড়ি। আগামী জুলাই ২০১৫-এর মধ্যে আরও ৭০ আইটিইউ খোলা হবে। তাই আজকাল আর ডায়ালিসিসের জন্য কলকাতায় ছুটে আসতে হয় না। জেলা হাসপাতালেই সংশ্লিষ্ট বিভাগে তা করা হয়।
প্র: হাসপাতালগুলোতে নার্সের সমস্যা রয়েছ? তা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা রয়েছে আপনাদের?
ডাঃ সুব্রত মৈত্র: নার্সিং স্টাফের সমস্যা রয়েছে। কারণ, মহিলা বলে তাদের বছরে কম-বেশি একশো দিন ছুটি দিতে হয়। তাই বিকল্প হিসেবে পুরুষ নার্সদের কথা ভাবা হচ্ছে। বিশেষত যে সব ক্ষেত্রে কায়িক শ্রমের ব্যাপার রয়েছে। বিদেশে তো হাসপাতালগুলোতে মহিলাদের সঙ্গে পুরুষ নার্সিং স্টাফও রয়েছে। তাই পুরুষ নার্সিং কোর্স চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া, হাসপাতাগুলোতে আয়া রাখার চল রয়েছে। এই আয়াদের যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে ছোটখাটো নার্সিং-এর কাজে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা চলছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, আগামী দিনে স্বাস্থ্যে রাজ্য দেশের মধ্যে মডেল হয়ে যাবে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019