শৌচাগার ব্যবহারের সংখ্যা ও মাত্রা শোচনীয় ভাবে কম হওয়ার কারণে ভারতে ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক রোগব্যাধির প্রকোপ যেমন বেড়েছে, অন্য দিকে তেমন আশঙ্কাজনক ভাবে মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব জনসখ্যার মধ্যে উপযুক্ত ভাবে স্যানিটেশন বা স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে জীবনধারণের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত সব চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের বাস ভারতেই। সঠিক ভাবে বলতে গেলে সারা পৃথিবীর যত মানুষ উপযুক্ত শৌচাগারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত তার প্রায় এক চতুর্থাংশই ভারতের নাগরিক। যাদের সংখ্যা ৬ কোটিরও বেশি। খোলা মাঠে বা উন্মুক্ত স্থানেই তাদের প্রাকৃতিক কাজকর্ম সেরে ফেলতে হয়। শৌচাগারের অভাব এবং তা ব্যবহারের সংখ্যা অত্যধিক কম হওয়ায় ভারতে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বছরে হ্রাস পেয়েছে ৬.৪ শতাংশ হারে। স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা সম্পর্কে সমীক্ষা ও গবেষণার কাজ হয়েছে প্রচুর, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি তথা স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে জীবনধারণের উপায়ের পথে অন্তরায় কী, সে সম্পর্কে কোনও স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া এখনও পুরোপুরি সম্ভব হয়নি।
দেশের জেলাস্তরে ও জেলাভেদে শৌচাগার ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে ফারাক বা তারতম্য রয়েছে তার স্থান বা অবস্থানগত বিশ্লেষণ ও কৃতকৌশলের উপায় অনুসন্ধানের চেষ্টা করা হয়েছে এই নিবন্ধে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে স্থান ও অবস্থানগত যে স্বাভাবিক ও পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে সে সম্পর্কে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, শৌচাগারের ব্যবহারজনিত যে আচরণগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তার মূল কিন্তু প্রোথিত জেলা স্তরেই। এ ব্যাপারে স্থানীয় পর্যায়ে স্থান ও অবস্থানগত পরস্পর সম্পর্কযুক্ত স্বাভাবিক ব্যবস্থা সম্পর্কে পরীক্ষানিরীক্ষায় প্রকাশ, যে সমস্ত জেলায় পাঁচ বছর বয়সের আগেই শিশুমৃত্যুর হার খুব বেশি সেখানেই শৌচাগারের হাল বা অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। শৌচাগারের ব্যবহারের সঙ্গে উচ্চমানের আর্থসামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক যে সম্পর্ক রয়েছে, তা হিসেবের মধ্যে ধরেও স্থান বা আদর্শগত একটি মডেলের বা আদর্শের কথা বিবেচনা করা হয় শৌচাগার সম্পর্কিত গবেষণার কাজে। এই সমস্ত শৌচাগারের অবস্থান এবং জেলা পর্যায়ে এ সম্পর্কে ব্যাখ্যা থেকে প্রাথমিক ভাবে শৌচাগারের অবস্থা সম্পর্কে এক বাস্তব চিত্রের আভাস পাওয়া যায়। রাজ্যস্তরে অবশ্য এত খুঁটিনাটি ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের আভাস বা ইঙ্গিত পাওয়া যায় না।
সুত্রঃ যোজনা জানুয়ারী ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/19/2020