প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে স্বচ্ছ ভারত অভিযান কর্মসূচির ঘোষণা করেন। দেশের মানুষকে পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ার কাজে অনুপ্রাণিত করতে ওই দিন তিনি নিজে ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নামেন। সারা দেশ জুড়ে ওই দিনই ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নামেন আরও কয়েক লক্ষ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় পরিচ্ছন্নতাকে সব থেকে ওপরে স্থান দিয়েছেন। এমনকী শপথ নেওয়ার এক মাসের মধ্যেই ১৬ জুন দিল্লিতে তিনি স্বচ্ছ ভারত মিশনের কর্মসূচির কথা বলেন এবং ছ’মাসের মধ্যে দিল্লিকে ঝাঁ চকচকে করে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগের কারণ, ভারত একটি অপরিচ্ছন্ন দেশ হিসাবে পরিগণিত। ফলে বিদেশের কাছে আমাদের সম্মান ভুলুন্ঠিত। ভারতকে একটি পরিচ্ছন্ন দেশ হিসেবে তুলে ধরে সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠা করাই প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য।
দশকের পর দশক ধরে দেশে এক অপরিচ্ছন্নতার আবহ গড়ে উঠেছে এবং এ ব্যাপারে দেশবাসীর মধ্যে উদাসীনতা বাসা বেঁধেছে। শিক্ষিত, অশিক্ষিত, গরিব, বড়লোক প্রায় সকলের মধ্যেই এই উদাসীনতা লক্ষ করা যায়। নিজের বাড়ির চৌহদ্দিটুকু পরিষ্কার থাকলেই হল। নিজেদের বাড়ির নোংরাও অনেকে রাস্তায় অথবা পাশের নর্দমা বা পুকুরে ফেলছেন। আমাদের চার দিকেই নোংরা আবর্জনা থিকথিক করছে। রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে প্লাস্টিক, থার্মোকল, বাচ্চাদের ডাইপার, সারমেয়র বিষ্ঠা এবং লেখার অযোগ্য দৃশ্যদূষণের আরও অনেক উপকরণ। এমনকী মৃত ব্যক্তির শয্যা ও অন্যান্য উপকরণও ডাঁই করে রাজপথে ফেলা হচ্ছে। নির্দিষ্ট জায়গায় পুরসভার ভ্যাট বা কালেক্টিং পয়েন্ট থাকলেও এবং গৃহস্থের বাড়ি থেকে পৌরসভার তরফে বর্জ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা থাকলেও সেই সব জায়গায় না ফেলে নাগরিকরা বাড়ির সামনে বা পিছনে খোলা জায়গায়, প্রতিবেশীর খোলা জমিতে, পুকুরে, ড্রেনে এই সব আবর্জনা ফেলছেন। মানুষ থুতু বা পানের গুটকা ফেলছেন যত্রতত্র। থুতু ও পিক ফেলে হাওড়া ব্রিজের কাঠামো পর্যন্ত বিপদগ্রস্ত করে তুলেছে। এর ফলে প্রশাসনকে নড়েচড়ে বসতে হয়েছে।
সূত্র : যোজনা, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020