সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৫৫,০০০ মানুষে মারা যান জলাতঙ্ক রোগে। এদের মধ্যে অধিকাংশেরই বয়স ১৫ বছরের নীচে। আমাদের দেশে এই সংখ্যাটা প্রায় ২০,০০০। এর মধ্যে কুকুরের কামড়ে মারা যান ৯৫ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ মারা যান অন্যান্য পশুর কামড়ে। জলাতঙ্কের প্রতিষেধক থাকা সত্ত্বেও কেন এত মৃত্যু? মানুষের অজ্ঞতা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঠিক সময়ে প্রতিষেধক না পাওয়াই এ মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
কুকুর কামড়ালে ভ্রান্তধারণাবশত মানুষ কেউ কেউ চিকিৎসকের পরিবর্তে ওঝা-গুনিন, কবিরাজ, হাতুড়েদের কাছে গিয়ে তুকতাক ও ঝাড়-ফুঁক করান। কিন্তু যে কুকুরটি কামড়েছে সে মানুষটি যদি জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়, তবে এত সব কিছুর ফল মৃত্যু। কারণ জলাতঙ্কের কোনও চিকিৎসা নেই। এক বার হয়ে গেলে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত মৃত্যু।বৈজ্ঞানিক প্রতিষেধকই একমাত্র প্রতিকার।
জানা যাক জলাতঙ্ক রোগটি কী ধরনের? কুকুরের কামড়ের সাথে এর কী সম্পর্ক? কখন ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজন নেই? এবং আনুষঙ্গিক কিছু ভ্রান্ত ধারণার সঠিক উত্তর। জলাতঙ্ক (হাইড্রোফোবিয়া বা রেবিস) একটি ভাইরাসঘটিত রোগ। র্যাবডো ভাইরাস এ রোগের কারণ। জলাতঙ্ক কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। এর ফলে মৃত্যু হয়। সাধারণত কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, নেকড়ে, বেজি ইত্যাদির কামড়ের মাধ্যমে রেবিস সংক্রমিত হয়ে থাকে। আমাদের এ অঞ্চলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে রেবিস কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
এখানে একটি কথা জেনে রাখা প্রয়োজন যে সুস্থ কুকুর বা প্রাণী কামড়ালে রেবিস হয় না। রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর (পাগলা কুকুর) কামড়ালে বা ক্ষতস্থানে চেটে দিলে সে ব্যক্তি রেবিসে আক্রান্ত হন। র্যাবডো ভাইরাস শরীরে ঢুকলে ১০ দিন থেকে এক বছর পরও রোগ লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। তবে সাধারণত ২০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যেই জলাতঙ্কের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
সূত্র : দি হিন্দু, স্বাস্থ্য তথ্য ও অন্যান্য ওয়েব সাইট
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020