অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ডায়াবেটিক মায়ের গর্ভস্থ শিশুর হৃদরোগ

ডায়াবেটিক মায়ের গর্ভস্থ শিশুর হৃদরোগের ঝুঁকি সাধারণ শিশুর তুলনায় ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি। এই সব শিশুর জন্মগত হার্টের ছিদ্র, হার্টের ভাল্বের ত্রুটি, হার্টের গঠন ও রক্ত নালীর ত্রুটি, হার্ট মাসলের বাড়তি বৃদ্ধি (HCM) এবং Persistent Pulmonary Hypertention (PPH) এর মতো হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কেন হৃদরোগ হয়?- ডায়াবেটিক মায়ের শরীরে গ্লুকোজের আধিক্যই শিশুর হৃদরোগের কারণ। এছাড়া গ্লুকোজ কমানোর জন্য শিশুর অগ্নাশয় যে অতিরিক্ত ইনসুলিন নিঃসরণ করে তা থেকে শিশুর হার্ট মাসলের বাড়তি বৃদ্ধি ঘটে (HCM)। জন্ম পরবর্তী শিশুর রক্তে গ্লুকোজের স্বল্পতা, জন্মকালীন সময়ে অক্সিজেনের অভাব, শ্বাসকষ্ট, Polycythemia – এই বিষয়গুলো শিশুর PPH এর সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।

উপসর্গ ও রোগ নির্ণয়– শিশুর হৃদরোগের ধরণ অনুযায়ী তার লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন- শিশুর শ্বাসকষ্ট, শরীর নীলাভ হয়ে যাওয়া, হার্টের দ্রুত সঞ্চালন, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দনের শব্দ (murmur) ইত্যাদি। বুকের X-ray এবং Colour Doppler Echo পরীক্ষা করে শিশুর হৃদরোগ শনাক্ত করা হয়।

চিকিৎসা – জন্মের পর ডায়াবেটিক মায়ের গর্ভস্থ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হবে এবং তাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করতে হবে এবং শিশুর শ্বাসকষ্ট বা হৃদরোগের অন্যান্য উপসর্গ প্রকাশ পায় কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শিশুর হৃদরোগ থাকলে নির্দিষ্ট ওষুধের মাধ্যমে বা প্রয়োজনে সার্জারি করে (যেমন TGA) উক্ত হৃদরোগের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। কখনো কখনো এই শিশুকে শিরা পথে স্যালাইন দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে বা শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য ভেন্টিলেটর ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ – ১। গর্ভকালীন সময়ের শুরুতেই মায়ের ডায়াবেটিস আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে।

২। গর্ভকালীন সময়ে মায়ের ডায়াবেটিস সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

৩। গর্ভস্থ শিশুর হার্টের ত্রুটি আছে কিনা তা গর্ভকালীন সময়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।

৪। জন্মের পর শিশুর হৃদরোগ প্রাথমিক পর্যায়েই নির্ণয় করতে হবে এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ১৪ নভেম্বর। এবারের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- ‘স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করি, ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকি।

গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন হরমোনের প্রভাবে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভাবস্থায় প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বা জি ডি এম) বলা হয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস মা ও শিশু দু’জনেরই ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এই ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে ডায়াবেটিস নির্ণয় ও এর নিয়ন্ত্রণ। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশভেদে শতকরা ১-১৪ ভাগ মহিলার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ধরা পড়ে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি

গর্ভবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকিগুলো নিম্নরূপ :

-বয়স ২৫ বছর এর বেশী

-ওজনাধিক্য

-পরিবারের অন্যদের ডায়াবেটিস থাকা

-পূর্বে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকা বা বেশী ওজনের শিশু প্রসব

-পূর্বে গর্ভপাত/গর্ভস্থ শিশু মৃত্যু

উপরোক্ত যে কোনো একটি ঝুঁকি থাকলেই গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস শনাক্ত করার জন্য পরীক্ষা করণীয়।

ডায়াবেটিস শনাক্তকারী পরীক্ষা

গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই ঝুঁকিপূর্ণ সকল গর্ভবতী মহিলার ডায়াবেটিস শনাক্তকারী পরীক্ষা OGTT (ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট) করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে হবে। এই পরীক্ষায় খালি পেটে ও ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ২ঘণ্টা পর রক্তের সুগার পরীক্ষা করা হয়। প্রথম সাক্ষাতে এই পরীক্ষা স্বাভাবিক থাকলে গর্ভকালীন ২৪-২৮ সপ্তাহে আবার একই ভাবে পরীক্ষা করে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কিনা নিশ্চিত হতে হবে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের চিকিৎসা

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল বিষয়গুলো হলো সঠিক খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, পরিমিত হাল্কা ব্যায়াম, নিয়মিত ডায়াবেটিসের মাত্রা নিরূপণ ও ওষুধের ডোজ নির্ধারণ, নিয়মিত গাইনি ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ।

খাদ্য তালিকা : গর্ভাবস্থায় সকলেরই সঠিক পরিমাণে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে ওজন অনুযায়ী একটি খাদ্য তালিকা মেনে চলা প্রয়োজন, সাধারণভাবে খাদ্যতালিকা মেনে চলা প্রয়োজন। সাধারণভাবে খাদ্যতালিকায় দৈনিক শতকরা ৪০ ভাগ শর্করা, ৪০ভাগ আমিষ ও ২০ ভাগ চর্বি জাতীয় খাদ্য বা ফ্যাট খাওয়া যেতে পারে। গর্ভকালীন সময়ের উপর নির্ভর করে একজন পুষ্টিবিদ অথবা ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ প্রদত্ত খাদ্য তালিকা মেনে চলা প্রয়োজন।

ব্যায়াম : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হাল্কা হাঁটার অভ্যাস থাকা ভালো, তবে কোনো অবস্থাতেই কোনো ভারি ব্যায়াম করা যাবে না।

ইনসুলিন : এখনও পর্যন্ত গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের প্রধান চিকিৎসাই হচ্ছে ইনসুলিন। সঠিক খাদ্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেও যদি ডায়াবেটিস নির্ধারিত মাত্রার (খালি পেটে ৫.৫ মিলি মোল/লি: এর বা খাবার ২ পর ৬.৫ মিলি মোল/ লি:) বেশী থাকে তবে সঙ্গে সঙ্গে ইনসুলিনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।

মনিটরিং : গ্লুকোমিটারের সাহায্যে নিয়মিত রক্তের সুগার পরীক্ষা ও ইনসুলিনের মাত্রা নির্ধারণ গর্ভকালীন ডায়াবেটিস চিকিৎসার অন্যতম প্রধান ভিত্তি, সকল গর্ভবতী মহিলারই এ বিষয়ে সঠিক শিক্ষা ও চর্চা থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও নিয়মিত রক্তচাপ মাপা, গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি পরিমাপ করাও একজন গর্ভকালীন ডায়াবেটিক মহিলার জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

প্রসব সময় নির্ধারণ : কোনো জটিলতা না থাকলে একজন গর্ভকালীন ডায়াবেটিক মহিলারও স্বাভাবিক প্রসব হতে পারে। “গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলেই সিজারিয়ান অপারেশন এর মাধ্যমে প্রসব করানো প্রয়োজন”- এ ধারনাটি সঠিক নয়। প্রসবের পর পরই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিশুকে মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে। মায়ের ডাঢাবেটিস থাকা এর জন্য কোনো বাধাই নয়।

প্রসব পরবর্তী চিকিৎসা

বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই প্রসবের পর পরই ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা কমে যায়। এজন্য প্রসবের পর পরপরই মায়ের রক্তের সুগার পরীক্ষা করে পরবর্তীতে ইনসুলিন দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসময় রক্তের সুগার স্বাভাবিক মাত্রায় থাকলে ইনসুলিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবং প্রসবপরবর্তী ৬-১২ সপ্তাহে আবার ডায়াবেটিস শনাক্তকারী পরীক্ষা করে ডায়াবেটিস আছে কিনা নিশ্চিত করতে হয়। একবার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে পরবর্তীতে ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি বেশী থাকে। সেজন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে, ভবিষ্যত ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস গর্ভকালীন সময়ে মা ও শিশু দুজনের জন্যই ঝুঁকির কারণ হতে পারে। ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রিত না থাকলে গর্ভপাত, গর্ভে শিশুর মৃত্যু, শিশুর জন্মগত ত্রুটি, শিশু মৃত্যু এবং জন্মপরবর্তী শিশুর বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যে শিশুর গর্ভাবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস থাকে পরবর্তী জীবনে সে শিশুর ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা অন্যদের চাইতে বেশী থাকে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ে ডায়াবেটিস নিরূপণ ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে একজন ডায়াবেটিক মা সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে পারেন এবং সঠিক জীবনযাত্রা মেনে চলার মাধ্যমে নিজেকে ও শিশুকে ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসমুক্ত রাখতে পারেন।

সূত্র : বিকাশপিডিয়া টীম

সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate