আমাদের দেশে সোয়াইন ফ্লুয়ে মৃত্যুর হার কিছুটা বেশি। ২০১৫-তে আমাদের দেশে হাজার দশেক মানুষ সোয়াইন ফ্লুয়ে আক্রান্ত। এই রোগে মৃতের সংখ্যাও ১১০০ কিছু বেশি। কেন এত মৃত্যু এই রোগে? সোয়াইন ফ্লু এ দেশে বেশি ভয়ঙ্কর, সে জন্য নয়। টেস্ট ফেসিলিটির অভাবে আসল আক্রান্তের সংখ্যাটা এ দেশে স্পষ্ট নয়, সেই কারণে। তা হলে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে এত কেন হই চই? খটকা লাগে, প্রতিষেধকের বাজার তৈরি করাটাই উদ্দেশ্য নয় তো? কে জানে! প্রতিষেধকের পক্ষে মিডিয়া যে পরিমাণ সওয়াল করে, ততটা তো দেশের নীতি নির্ধারক স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞরাও করেন না!
যক্ষ্মা, হাম, ডায়েরিয়া, অ্যানিমিয়া ব্রাত্য কেন? ক’জন খেয়াল রাখেন, এ দেশে আজও প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় এবং ফি বছর লাখ তিনেক মানুষ মারাও যান! ভাবতে পারেন এখনও যে আমাদের দেশে প্রায় ৫০০ শিশু প্রতি দিন হামের কারণে মারা যায়, সে খবর ক’জন রাখেন? প্রতি লাখ জনসংখ্যায় যে এখনও প্রতি বছর শতাধিক শিশুর প্রাণ কাড়ে স্রেফ ডায়েরিয়া, সে তথ্য কেন আড়ালে থাকে?
কই, এ সব অসুখ নিয়ে তো আলোচনা হয় না তেমন! আজও এ দেশের ৫৯ শতাংশ মহিলা কেন রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার শিকার, সে কথা কেন কেউ জোর গলায় বলে না? এই অ্যানিমিয়া শুধু মহিলার নয়, ক্ষতি করছে পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্যও। জন্মেই তো সে সব শিশু অপুষ্টির শিকার। অথচ এগুলোই আমাদের দেশে সত্যিকারের মহামারী।এসব নিয়ে কোনও চর্চাই হয় না। কিন্তু ব্রাত্য এ সব আলোচনা! রোগের প্রকোপের আসল চেহারাটাও তাই থেকে যায় অন্তরালেই। কিন্তু এ সব রোগের চিকিৎসার খরচ খুব সস্তা। যক্ষ্মার মতো রোগের চিকিৎসা তো বিনামূল্যে সরকারি পরিষেবাতেই হয়। ফলে এ সব রোগের চিকিত্সায় বাণিজ্যের পরিসর খুব সঙ্কীর্ণ। হইচই না-হওয়ার নেপথ্যে কি সেটাই কারণ?
সূত্র : এই সময়, ১৭ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/22/2020