ঘটনা হল, কলকাতা পুরসভার কিছু এলাকায় আর্সেনিকের উপস্থিতি এর আগেও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু কিছু ডিপ টিউবওয়েল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনও সার্বিক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। উল্টে ভোটব্যাঙ্কের লক্ষ্যে বহুতলে গভীর নলকূল বসানোর ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। পুর নির্দেশিকা অমান্য করে যেখানে বোরিং করা হচ্ছে সেখানে যথেষ্ট নজরদারি নেই। এই প্রেক্ষাপটে কলকাতায় আর্সেনিক দূষিত এলাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিধায়করা এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন এর মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ করছে রাজ্য। যার উত্তরে সৌমেন মহাপাত্রের স্বীকারোক্তি, ‘কলকাতায় আর্সেনিক নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল। সমন্বয় প্রয়োজন। ম্যানেজমেন্ট ঠিক করতে হবে।’ যদিও এর বিশদ কোনও ব্যাখ্যা দেননি বিভাগীয় মন্ত্রী। প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও জল সম্পদ দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার ঢিলেঢালা মনোভাব এবং নজরদারির অভাবে নির্দিষ্ট প্রকল্প নিয়ে আর্সেনিক দূষণের মোকাবিলা করা যাচ্ছে না।
কলকাতার তুলনায় গ্রামাঞ্চলে আর্সেনিক দূষণের মোকাবিলা করা সহজ বলে মনে করছে জলসম্পদ দফতর। কারণ ভৃপৃষ্ঠের জল সংরক্ষণ, বৃষ্টির জল ধরে রাখা এবং ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের মাধ্যমে এই দূষণের মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সৌমেনবাবুর কথায়, ‘গ্রামে আরও বেশি পুকুর কেটে, বৃষ্টির জল ধরে রেখে আমরা আর্সেনিক দূষণের মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি।’ আর্সেনিক দূষণ নিয়ে এ দিন জেলাওয়াড়ি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন মন্ত্রী। আর্সেনিক দূষণ ছাড়াও ফ্লোরাইড দূষণ ও জলে লবণের মাত্রা নিয়ে সমীক্ষা রিপোর্টও এ দিন বিধানসভায় তুলে ধরেছেন সৌমেনবাবু। রাজ্যের ২৬৯ ব্লকের সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে এই মুহূর্তে মোট ৩৮টি ব্লক আর্সেনিকের দূষণের নিরিখে ‘সেমি-ক্রিটিক্যাল’। রাজ্যে মোট ৮১টি ব্লকের জলে আর্সেনিক উপস্থিতি লক্ষণীয় বলে এই রিপোর্টে বলা হয়েছে। সেমি-ক্রিটিক্যাল ব্লকগুলির মধ্যে ১৭টি ব্লক মুর্শিদাবাদে, মালদা ও হুগলি জেলায় রয়েছে দু’টি করে ব্লক, নদিয়া ও বর্ধমানে রয়েছে ৬টি ব্লক। পূর্ব মেদিনীপুরে রয়েছে ১টি ব্লক। ফ্লোরাইড কবলিত ব্লক হল ৪৯টি। মোট ৫৯ ব্লকের জলে উদ্বেগজনক মাত্রায় লবণ পাওয়া গিয়েছে। হুগলির দু’টি ব্লক গোঘাট ও খানাকুল এক সময় ক্রিটিক্যাল থাকলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে দাবি করেছেন সৌমেনবাবু।
সূত্র : এই সময়, ৪ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/7/2020