গত ৫ জানুয়ারি শান্তিনিকেতনের এন্ড্রুজ পল্লিতে এলমহার্স্ট ইনিস্টিটিউটে বসেছিল বয়স্কদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিকাশপিডিয়ার স্বাস্থ্য সাগ্রহীকরণ শিবির। এই সাগ্রহীকরণ শিবিরে প্রখ্যাত চিকিৎসকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত চিকিৎসক প্রফেসর সুকুমার মুখোপাধ্যায়, ডা.অভিজিৎ তরফদার, ডা.ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়,ডা.সুদীপ চট্টোপাধ্যায় এবং ডা.দেবাশিস বসু। বিকাশপিডিয়ার তরফে শিবিরটি পরিচালনা করেন সাংবাদিক স্নেহাশিস শূর।
একেবারে শুরুতেই বিকাশপিডিয়ার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন স্নেহাশিস শূর। তিনি বলেন, বিকাশ অর্থে উন্নয়ন এবং পিডিয়া অর্থে কোষ। অর্থাৎ উন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় জ্ঞান ও তথ্যের কোষ হল বিকাশপিডিয়া। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দফতর এই নলেজ পোর্টালটি চালাচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষ সহজে যে কোনও সরকারি তথ্যের হদিশ পান। শুধু তা-ই নয়, সরকারি প্রকল্পের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের কী অভিজ্ঞতা সে সম্পর্কেও এখানে তথ্য থাকবে। অর্থাৎ এটি শুধুমাত্র একমাত্রিক ও একমুখী তথ্য জ্ঞাপন প্রক্রিয়া নয়, এটি জ্ঞানের উভমুখী সম্ভাবনাকেই তুলে ধরছে। বিকাশপিডিয়া ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ যেমন উপকৃত হবেন, সেই রকম সরকারও এর মাধ্যমে দেশের প্রকৃত অবস্থা কী, মানুষ কী চাইছেন, কোথায় প্রকল্প রূপায়ণে অসুবিধা হচ্ছে তার হদিশ পাবেন। তিনি বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার গড় সময়কাল বেড়ে গিয়েছে। আধুনিক মেডিসিন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে এর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বয়স্ক মানুষের সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরি। চিকিৎসার জোরে বড় অসুখের হাত থেকে হয়তো এক বার সে বেঁচে গেল, কিন্তু সারা বছর কী করে ভালো থাকবে সেটা গভীর অনুধাবনের বিষয়। যত দিন যাচ্ছে বয়স্ক মানুষের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা ক্রমশ গুরুতর আকার ধারণ করছে। এ ব্যাপারে মনোযোগ দিতে না পারলে সমস্যাটি জাতীয় স্তরে অসুবিধার সৃষ্টি করবে।
অধ্যাপক সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে তার কারণ স্বাস্থ্য সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। ফলে সরকার এবং ব্যক্তি মানুষের উপর ‘বার্ডেন অফ হেলথ’ ক্রমশ বাড়ছে। সমাজের কাঠামোর দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। এখন যৌথ পরিবারের অস্তিত্ব ক্রমশ ক্ষীয়মান। ফলে বয়স্ক মানুষের একাকিত্ব বাড়ছে। তাদের হতাশা গ্রাস করছে। এক দিকে শরীর অশক্ত, অন্য দিকে মানসিক শান্তির অভাব—দুইয়ে মিলে বয়স্ক মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছেন। তাদের মধ্যে ডিপ্রেসন, স্মৃতিভ্রষ্টতা বাড়ছে। এই সব রোগ চটজলদি ভালো হয় না। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু সেই চিকিৎসা তাঁর কাছে কারা পৌঁছে দেবে? অধ্যাপক মুখোপাধ্যায়ের মতে, এখন মনে রাখতে হবে শুধু মানুষের গড় আয়ুর বৃদ্ধি করে কোয়ানটিটি অফ লাইফ বাড়ালে চলবে না। একই সঙ্গে কোয়ালিটি অফ লাইফ বা জীবনযাপনের গুণমান বাড়াতে হবে।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019