কেন মানুষ ভয় পায়? ব্যক্তি মানুষ কোনও একটি বিশেষ বিশ্বাস আঁকড়ে ধরে নিজেকে সুরক্ষিত করতে চায়, সেই বিশ্বাসের মূলে আঘাত পড়ছে বুঝতে পারলে সে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ভয় অনেক সময় সংক্রামক। কিছু লোককে এক দিকে ছুটতে দেখলে এবং তারা ভয় পেয়েছে মনে করলে অন্যান্য পথচারীও পলায়মান দলের অনুগামী হন। কী ঘটেছে, কেন ওরা ছুটছে, সত্যিকারের কোনও বিপদ দেখা দিয়েছে কি না এ সব প্রশ্ন তাঁদের মনে জাগে না। পরে হয়তো তাঁরা জানতে পারলেন যে দুটি ষাঁড় চৌমাথায় দাঁড়িয়ে শিং-এ শিং লাগিয়ে লড়াই করছিল অথবা বাজারের মধ্যে এক জনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, এই গুজব শুনেছিল। এই ভাবে ভয় পাওয়া ব্যক্তিরা হিস্টিরিক রোগীর মতো অনেক সময় হিংস্র হয়ে উঠতে পারেন। নিরীহ মানুষকে আঘাত করা, পথের পাশের দোকানের শো কেস ভেঙে ফেলা ইত্যাদি উন্মত্ত আচরণও এদের করতে দেখা যায়। এরা কোনও দিক থেকে বিপন্ন সেটা ওই অবস্থায় বিচার করা বা যুক্তি বুদ্ধি প্রয়োগ করে ভয়ের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করার অবস্থায় থাকে না। যদি গুজব রটে যে বাজারে ছুরিকাহত ব্যক্তিটি তাঁর নিজের সম্প্রদায়ভুক্ত, তা হলে সামনে অন্য সম্প্রদায়ভুক্ত কোনও ব্যক্তিকে দেখলে তাকে বড় দরের আঘাত করতেও কুণ্ঠিত হন না। সাম্প্রদায়িক বা গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে দাঙ্গার সময় এই ধরনের অনেক ব্যাপার ঘটে থাকে বলে আমরা জানি। এই ধরনের হিস্টিরিক ভয় তখনই বেশি ঘটে যখন রাষ্ট্র, প্রশাসক ও সমাজের সংরক্ষকরা দুর্বল এবং সামাজিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে অসমর্থ ও অক্ষম।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/28/2020