অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ভ্রান্তিমূলক মনের অসুখ বা প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়া

ভ্রান্তিমূলক মনের অসুখ বা প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়া

কেউ যদি বলেন পাশের বাড়িতে একটা যন্ত্র বসিয়ে তাঁর শত্রুপক্ষ তাঁর মনের ভাবনাচিন্তা ইত্যাদি সব জেনে নিচ্ছেন কিংবা বিশেষ কোনও প্রক্রিয়া দ্বারা তাঁর মনে কুপ্রবৃত্তি আনয়নের চেষ্টা করছে তা হলে আত্মীয়স্বজনেরা বিশেষ খোঁজখবর না নিয়েই রোগীর কথা সবটা না হোক আংশিক সত্য এটা ভেবে নিতে পারেন।...পাশের বাড়িতে খোঁজখবর নিয়ে লাভ নেই। তারা গেলেই তো সেটা গোপন করে ফেলবে আর আজ বিজ্ঞানের যুগে অনেকে এটা অবাস্তব বলে মনে করেন নাদূর থেকে অন্যের মনকে প্রভাবিত করা যায়, এই মধ্যযুগীয় ধারণার পরিপোষক হিসেবে ভুয়ো বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্যারাসাইকোলজিস্টরা খাড়া করে থাকেন। যাতে অন্ধ কুসংস্কার এবং অবাস্তব ঘটনা বিজ্ঞান অনুমোদিত হয়ে মর্যাদা লাভ করতে পারে — এ নিয়ে প্যারাসাইকোলজিস্টরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সাঁইবাবা, ইউরিগেলার ইত্যাদির অলৌকিক কীর্তিকলাপ অবাস্তব ও বিশ্বাস-অযোগ্য বলে প্রমাণিত হলেও আমাদের রোগীদের আত্মীয়স্বজনরা এখনও রোগীর মতোই ভ্রান্ত ধারণা সত্য বলে মনে করছেন। কাজেই সাধুসন্তদের, যাঁরা জাদুবিদ্যার প্রভাবে তথাকথিত অলৌকিক শক্তির অধিকারী বলে নিজেদের জাহির করেন, তাঁদের স্বরূপ উদঘাটন করা বস্তবাদী চিকিত্সকদের প্রাথমিক কর্তব্য বলে আমরা মনে করি। তা সত্ত্বেও কিন্তু রোগীর বক্তব্য ভ্রান্তিভিত্তিক না সত্য, তা নিরূপণ করা আত্মীয়স্বজন কেন, চিকিত্সকের পক্ষেও অনেক সময় সম্ভব হয় না।

এক জন যদি মনে করেন তাঁর স্ত্রী অসতী, তাঁর কোনও বন্ধুর সঙ্গে তাঁর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, চিকিত্সক সেই অভিযোগটি প্রথম দিকে একেবারে উড়িয়ে দিতে পারেন না। দু-একটি সেশনের পর তিনি যদি বলেন তাঁর আশি বছরের বৃদ্ধ পিতার সঙ্গে স্ত্রী ব্যভিচারে লিপ্ত তা হলে চিকিত্সক কেন, যে কোনও সুস্থ মানুষই বুঝতে পারেন যে তিনি ভ্রান্তিমূলক মনের অসুখে ভুগছেন। এই রোগীদের রোগকে প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়া বলা হয়। ভ্রান্তিমূলক সন্দেহ, অবিশ্বাস ছাড়াও স্কিজোফ্রেনিয়াগ্রস্ত রোগীদের অন্যান্য উপসর্গ এদের মধ্যে দেখা যায়। কিছু কিছু চিকিত্সক প্যারানইয়া নামে একটি আলাদা রোগের উল্লেখ করে থাকেন। এই রোগীদের ভ্রান্তিমূলক আচরণ ও কথাবার্তা মাত্র একটি বিষয়েই নিবদ্ধ থাকে। অন্যান্য দিক দিয়ে তারা স্বাভাবিক আচরণই করে। তাদের রোগ নির্ণয় কোনও কোনও সময় বেশ অসুবিধের সৃষ্টি করে। অফিসে ঠিকমতো কাজ করছে, বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখছে, তাস খেলছে; কিন্তু তার ধারণা তাকে পুলিসের লোক পথে ঘাটে সব সময় অনুসরণ করছে। কিছু লোকের পিছনে গুপ্তচরেরা লেগে থাকেন আমরা জানি। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেল, বছর কয়েক আগে তিনি রাজনৈতিক অপরাধে দণ্ডিত এক বন্ধুকে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তার নামে সেই সময় গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছে। এর পর তিনি একটি বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হন। এই সমস্যার সমাধান সহজ ছিল না। তখন বন্ধুকে আশ্রয়দানকালীন ভয় (সেই সময় তাঁর মনে ভয় এবং পলাতক রাজনৈতিক বন্ধুকে আশ্রয়দানের গর্ব দুই ই যুগপৎ উদিত হয়েছিল) তাঁকে বিচলিত করল। এই রকম ক্ষেত্রে ভয় যে ভ্রান্তিমূলক তা বুঝতে হলে তাঁর অতীত জীবনের ইতিহাস ভালো ভাবে জানা দরকার

অনেক রোগী স্বেচ্ছায় চিকিত্সকের শরণাপন্ন হতে চায় না। চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ করে, প্রয়োজন হলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে, রোগীকে চিকিত্সার জন্য মনোরোগ চিকিত্সকের কাছে নিয়ে আসতে তাঁরা তত্পর হবেন আশা করি। এই সব রোগ অচিকিৎসিত অবস্থায় দু-তিন বছর পড়ে থাকলে পরে রোগটি জটিল হয়ে ওঠে।

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate