১৮৫০ সালে বিখ্যাত মনোরোগ চিকিত্সক গ্রেসিংগারের তত্ত্বাবধানে Observations on Cretinism নামে প্রথম একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ১৮৭৭ সালে ডাউন তাঁর যুগান্তকারী গবেষণাপত্র The Mongolian Type of ldiocy প্রকাশ করেন। ঊনবিংশ শতাব্দীতে আরও একটি উল্লেখযোগ্য পদেক্ষপ নেওয়া হয়েছিল ফ্রান্সে। যেখানে ইটার্ড নামে এক ভদ্রলোক ভিক্টর নামক একটি মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে পাঁচ বছর প্রশিক্ষণ দিয়ে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন তোলেন। এই প্রথম বোঝা গেল যে, মানসিক প্রতিবন্ধীদের উপযুক্ত ভাবে যত্ন নিয়ে প্রশিক্ষণ দিলে তাদের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়। ঠিক একই ভাবে ১৮৪৪ সালে সেগুইন ফ্রান্সে কয়েক জন মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুর ওপর কাজ করে প্রশিক্ষণ দিয়ে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করেন। তিনি এই কাজের জন্য যথেষ্ট সমাদর লাভ করেন।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে পাশাপাশি বিভিন্ন বিপরীত মতও প্রকাশিত হতে দেখা যায়। ১৯১২ সালে গর্ডাড-এর The Kallikas document-এ উল্লেখ করা হয় যে মানসিক প্রতিবন্ধকতা এবং অসামাজিক আচরণ জিনগত ভাবে বংশানুক্রমে প্রবাহিত হয়। এই মতকে পরবর্তীকালে নাতসিদের eugenics তত্ত্ব বা সৌজাত্যবিদ্যার আন্দোলন লুফে নেয় এবং অল্পস্বল্প মানসিক প্রতিবন্ধীদের সামাজিক ভাবে বিপজ্জনক ব্যক্তি বলে চিহ্নিত করে। এর ফলে মানসিক প্রতিবন্ধীদের প্রতিষ্ঠানভুক্ত করে আটকে রাখার ওপর জোর দেওয়া হয় এবং যাতে এরা বংশবিস্তার না করতে পারে এ জন্য এদের নিবীর্যকরণ করা হয়।
পরবর্তীকালে ফ্রান্স ও আমেরিকার গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পর সব ধরনের প্রতিবন্ধীদের প্রতি মানবিক আচরণ করার দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। ক্রমশ চিকিত্সা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে প্রতিবন্ধকতার কারণ গুলি আরও সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই কারণগুলি দূর করার জন্য অনেক ধরনের গবেষণাও শুরু হয়।
১৯৩৪ সালে ফলিং, ফিনাইলকিটোনইউরিয়া (PKU) রোগ আবিষ্কার করেন — যার কারণে মানসিক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। এই আবিষ্কারের সুবাদে বোঝা যায় যে সহজাত বিপাক ক্রিয়াজনিত গোলমালের জন্য PKU হয়। নবজাতকের খাবারদাবারের ব্যাপারে সাবধান হলে এই ধরনের বহু প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব এটা জানা যায়।
১৯৫০ সালে আমেরিকার অভিভাবকরা National Association of Retarded Children নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। কিছুটা এই সংগঠনের চাপে এবং বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়ার ফলে মানসিক প্রতিবন্ধকতাকে ঘিরে ওষুধ, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি, মনস্তত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব ও জিনগত চর্চা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা বাড়তে থাকে। ফলে এই সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও পারদর্শী ব্যক্তির অভাব ঘোচে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/10/2020