মানসিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তির অভাবের তারতম্য রয়েছে। জন্ম থেকেই অথবা খুব অল্প বয়স থেকে কোনও দুর্ঘটনা বা শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। কিছু কিছু প্রতিবন্ধী শিশুর শারীরিক গঠনেও আস্বাভাবিকতা দেখা যায়।
এদের বুদ্ধির পরিমাপ করা হয় বুদ্ধ্যাঙ্ক (I.Q) নির্ণয় করে। কিন্তু প্রায়ই এই পদ্ধতিতে পরিমাপ সঠিক হয় না। যিনি পরিমাপ করছেন তিনি কী উদ্দেশ্যে এই পরিমাপ করছেন তার ওপর পরিমাপের সঠিকতা অনেকখানি নির্ভর করে।
মোটামুটি ভাবে মানসিক প্রতিবন্ধীদের চার ভাগে ভাগ করা যায়।
১) অল্প প্রতিবন্ধী (mild) যাদের I.Q. ৫০-৫৫ থেকে ৭০ এর মধ্যে।
২) মাঝারি প্রতিবন্ধী (moderate) যাদের ৩৫-৪০ থেকে ৫০-৫৫ এর মধ্যে।
৩) বেশি প্রতিবন্ধী (severe) যাদের I.Q. ২০-২৫ থেকে ৩৫-৪০ এর মধ্যে।
৪) গুরুতর প্রতিবন্ধী (profound) যাদের I.Q. ২০-২৫ এর নীচে।
প্রথম শ্রেণীর মানসিক প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা অন্যদের তুলনায় বেশি হয়। এদের মধ্যে যাদের I.Q. বেশি তাদের সঙ্গে I.Q কম এমন সাধারণ শিশুর তফাত খুব অল্পই থাকে।
তবে শুধুমাত্র I.Q. দিয়েই মানসিক প্রতিবন্ধকতার পরিমাপ করা যায় না। সাধারণত কম I.Q. এর সঙ্গে মানসিক (psychological), সামাজিক (Social) এবং শিক্ষার (Educational) সমস্যা জড়িত থাকলে মানসিক প্রতিবন্ধকতা অনেক বেশি দেখা দিতে পারে। I.Q. দিয়ে শুধু মাত্র বোঝা যায় এক জন প্রতিবন্ধী শিশু কাজে কত দূর এগোতে পারবে। কিন্তু এই শিশু সমাজের আর সবার সঙ্গে কী ভাবে মানিয়ে নিতে পারবে তা I.Q. দিয়ে বোঝা সম্ভব নয়।
মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুরা সাধারণত মন্থর বা দীর্ঘসূত্রী। জগৎ সংসারে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি তাদের মনে তেমন ভাবে প্রতিক্রিয়া তৈরি করে না, রেখাপাতও করে না। ফলে এদের অনুসন্ধিত্সাও থাকে কম। ভালোমন্দ তেমন বুঝতে পারে না বলে এদেরকে সহজেই ব্যবহার করা যায় এবং অনেক সময় এরা এ জন্য নানা অপরাধমূলক কাজের শিকার হয়ে যায়। এদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং বিমূর্ত ভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা যথেষ্ট সীমিত। সাধারণ শিশুদের তুলনায় এদের যথার্থ বৃদ্ধি ও বিকাশের স্তরে পৌঁছতে দেরি হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/23/2019