প্রাথমিক স্তরের ব্যবস্থার মধ্যে আছে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুর জন্মরোধ করা। গর্ভাবস্থায় প্রসবকালীন সময়ে যে যে সমস্যার জন্য শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে সেই সমস্যার ওপর গুরুত্ব দিয়ে চিকিত্সক যদি মায়ের যত্ন নেন তা হলে শিশু সুস্থ স্বাবাবিক হতে পারে। চিকিত্সাশাস্ত্রে গবেষণার উন্নতির ফলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় পরীক্ষা করে শিশু প্রতিবন্ধী কি না চিহ্নিত করা যায়। এই সব ক্ষেত্রে গর্ভাপাত ঘটিয়ে প্রতিবন্ধী শিশুর দীর্ঘকালীন সমস্যা দূর করা যায়।
দ্বিতীয়ত, প্রতিবন্ধী শিশু জন্মানোর পর খুব তাড়াতাড়ি তার ত্রুটিবিচ্যুতি শনাক্ত করে চিকিত্সার ব্যবস্থা করলে কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাকে অনেক খানি রোধ করা সম্ভব হয়। যেমন (PKU) যদি প্রথমেই চিহ্নিত করা যায় এবং তার জন্য খাবার ও ওষুধের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা যায়, তা হলে প্রতিবন্ধকতাকে ঠেকানো যায়।
তৃতীয়ত, যে সব শিশুর প্রতিবন্ধকতা ঠোকানো যায়নি তার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, এই পুনর্বাসনের উদ্দেশ্য প্রধানত তিনটি। এক, প্রতিবন্ধীকে সাহায্য ছাড়া চলতে শেখানো। দুই, প্রয়োজন অনুযায়ী সামান্য সাহায্যে নিয়ে চলতে শেখানো। তিন, বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যাদের সাহায্যে এদেরকে সামর্থ্য অনুযায়ী স্বনির্ভর করা যায়। প্রকৃতপক্ষে প্রতিবন্ধী শিশুদের সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা দেওয়া যাবে কি না তা নিয়ে বহু বিতর্ক আছে। মানবিক ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোক্তাদের মতে এই সব শিশুদের সমাজের মূল প্রবাহে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। এর জন্য পৃথক স্কুলের পরিবর্তে সুস্থ শিশুদের সঙ্গে একই স্কুলে শিক্ষার ব্যবস্থা দরকার। এতে সাধারণ শিশুদের মধ্যে এদের প্রতি সহমর্মিতা জেগে উঠবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে সাধারণ শিশুরা এবং সমাজের অন্যান্য মানুষ এদের এতই অবহেলার চোখে দেখে যে এতে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুর মনের ওপর যথেষ্ট চাপ পড়ে এবং তাদের বিকাশ মন্দীভূত হয়। তাই অনেকের মত হল এদের জন্য বিশেষ স্কুল প্রয়োজন। যেখানে সুষম পরিবেশে এরা কাজ শিখতে পারবে।
পরীক্ষা করে দেখা গেছে, উপযুক্ত যত্ন নিলে অল্প প্রতিবন্ধী ব্যক্তিও দশম শ্রেণী অব্দি পড়তে পারে এবং স্বনির্ভর হয়ে বাঁচতে পারে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020