পুরুষ ও মহিলা দু’জনেই যদি থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হন, তাহলে প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই সুস্থ বাচ্চার জন্ম হয়। তার মানে মাত্র ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর সেই কারণেই বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে পিয়ারলেস হসপিটাল অ্যান্ড বি কে রায় রিসার্চ সেন্টার তাদের নিজস্ব উদ্যোগে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার জন্য ‘জিন সিকোয়েন্সিং’-র কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করল। উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোগ্লোবিনোপ্যাথির বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রশান্ত চৌধুরি, মেডিকেল ও জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাঃ সুজিত কর পুরকায়স্থ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ডাঃ অনুপম বসু প্রমুখ। কেন মানুষ জিন সিকোএন্সিং পদ্ধতিতে চিকিৎসা করাবেন? উত্তরে ডাঃ চৌধুরি বলেন, প্রতি একশো জনের এইচপিএলসি পরীক্ষা করালে দশ জনের মধ্যে পরীক্ষার রিপোর্টে সামান্য পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় এবং সেই পার্থক্যের জন্য যদি কেউ পরীক্ষা করার পরেও রিপোর্ট স্বাভাবিক জেনে একটা শিশুর জন্ম দেয় তাহলেও শিশুটির থ্যালাসেমিয়া হতে পারে। যদি কেউ থ্যালাসেমিয়ার ত্রুটি নেই বলে ধরেন, তার আগে সত্যি জেনে নিন যে তার শরীরে কোনও ক্ষুদ্রতম ত্রুটি পর্যন্ত আছে কিনা। যেটা এইচপিএলসি পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা সম্ভব নয়। জিন সিকোয়েন্সিং-এর মাধ্যমেই একমাত্র ধরা যায়। আবার কেউ যদি একটা থ্যালাসেমিয়া বাচ্চা থাকা সত্ত্বেও আরেকটি সুস্থ বাচ্চা নিতে চান, তার জন্য যে পরীক্ষাটা প্রয়োজন, সেটাকে বলে প্রিমেটাল ডায়গনসিস, এটিও জিন সিকোয়েন্সিং-এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। ডাঃ চৌধুরি বলেন, তিন বছর আগে এমআরআই-এর একটা সফর শুরু করেছিলাম আমরা। এটার মাধ্যমে হার্ট, লিভার ও প্যানক্রিয়াটিসে কতটা আয়রন জমেছে, সেটার সঠিক পরিমাপ করা যায়।
জিন সিকোয়েন্সিং-র আধুনিক চিকিৎসায় এই পদ্ধতিটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এইগুলি ছাড়াও আরও যেসমস্ত সাহায্য পাওয়া যায় জিন সিকোয়েন্সিং-এর মাধ্যমে তার মধ্যে রয়েছে, খুব ভালো করে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সঠিক মূল্যায়ন করা, সঠিক রোগ নির্ণয় করা, একটি সন্দেহজনক পরীক্ষার ফলের সঠিক সমর্থনসূচক পরীক্ষা করা প্রভৃতি।
জিন সিকোয়েন্সিং পদ্ধতিতে একজন রোগীর হার্ট, লিভার, প্যানক্রিয়াটিসের আয়রন পরীক্ষা করতে এখানে খরচ পড়ে সাত হাজার টাকা।
সূত্র: সঞ্জয় চক্রবর্তী, বর্তমান
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020