হাঁপানি একটি প্রদাহজনিত সমস্যা। এই সমস্যা বার বার দেখা দেয়। কিছু উদ্দীপক পদার্থ শ্বাসনালিতে প্রদাহের সৃষ্টি করে। শ্বাসনালি সরু হয়ে যায়। এর ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
হাঁপানি যে কোনও বয়সেই হতে পার। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাধারণত জন্মের প্রথম ৫ বছরের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু বাচ্চার বড় বয়সেও হাঁপানি থেকে যেতে পারে। অন্য বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হাঁপানি সেরে যায়। এই দশকে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে এবং এই রোগটি কার্যত সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। শহরের বাচ্চাদের মধ্যে আক্রান্তের হার ২৫% থেকে ৪০% পর্যন্ত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাঁপানির জন্যই শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় এবং এর জন্য দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির পয়লা নম্বর কারণ। এক মাত্র বাড়াবাড়ির সময় ছাড়া হাঁপানি নিয়েও বেশির ভাগ বাচ্চাই স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে। অল্প কিছু সংখ্যক বাচ্চার মাঝারি থেকে সাঙ্ঘাতিক রকমের হাঁপানি হয় এবং তাদের খেলাধূলা ও স্বাভাবিক কাজকর্ম করার জন্য প্রতি দিন প্রতিষেধক ওষুধ নেওয়ার দরকার পড়ে। হাঁপানি আছে এমন বাচ্চারা কিছু উদ্দীপকের ক্ষেত্রে যে সাড়া দেয়, হাঁপানি নেই এমন বাচ্চারা সেই সাড়া দেয় না। এর কারণ জানা যায় না। হাঁপানি ঘটায় এমন বহু উদ্দীপক পদার্থ আছে। তবে বাচ্চারা তার অল্প কিছুতেই সাড়া দেয়। কিছু বাচ্চার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট উদ্দীপক পদার্থ কেন হাঁপানি বাড়িয়ে দেয় তার কারণ চিহ্নিত করা যায়নি।
এই সমস্ত উদ্দীপক পদার্থ একই ভাবে কাজ করে। শ্বাসনালিতে কিছু কোষ রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে। এই পদার্থগুলি শ্বাসনালিতে প্রদাহের সৃষ্টি করে, ফুলিয়ে দেয় এবং শ্বাসনালির দেওয়ালের পেশি কোষগুলিকে উদ্দীপিত করে তাদের সঙ্কোচন ঘটায়। রাসায়নিক পদার্থগুলি দ্বারা ক্রমাগত উদ্দীপনার ফলে শ্বাসনালিতে বেশি মাত্রায় মিউকাস তৈরি হয়, শ্বাসনালির পর্দার কোষগুলির বিমোচন ঘটে এবং এর দেওয়ালের পেশি কোষগুলি বড় হয়ে যায়। শ্বাসনালির হঠাৎ সরু হয়ে যাওয়ার (হাঁপানির টান) পেছনে এই ধরণের প্রতিটি ঘটনার হাত আছে। বেশির ভাগ বাচ্চাদের শ্বাসনাল দু’টি টানের মাঝে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/20/2020