ওবিসি ছাত্রদের জন্য ম্যাট্রিক-পরবর্তী বৃত্তি
লক্ষ্য
শিক্ষা সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে যে সব ওবিসি ছাত্র-ছাত্রী ম্যাট্রিকের পর বা মাধ্যমিক পর্বের পরও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সাহায্য করার জন্য এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সুযোগ
এই বৃত্তি কেবলমাত্র ভারতের মধ্যে শিক্ষার জন্যই পাওয়া যাবে। ওই ছাত্র বা ছাত্রী যে রাজ্যের বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দা সেই রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনের মাধ্যমে এই বৃত্তি দেওয়া হয়।
যোগ্যতার শর্ত
- কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার বা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের প্রশাসন কর্তৃক চিহ্নিত ভারতীয় নাগরিক ওবিসি অন্তর্ভুক্তরা এই বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য।
- এই বৃত্তি কেবলমাত্র স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যাট্রিক বা মাধ্যমিক পরবর্তী স্বীকৃত পাঠক্রমগুলির জন্য দেওয়া হবে। ব্যতিক্রম—
- এয়ারক্র্যাফ্ট মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার্স পাঠক্রম এবং বেসরকারি পাইলট লাইসেন্স পাঠক্রম। প্রশিক্ষণ জাহাজ ডাফরিনে (এখন রাজেন্দ্র) পাঠক্রম, দেরাদুন মিলিটারি কলেজের পড়াশোনা এবং পরীক্ষা-পূর্ববর্তী সর্বভারতীয় বা রাজ্যস্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পড়াশুনার জন্য এই বৃত্তি দেওয়া হয় না।
- কোনও রাজ্যের বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ওবিসি তালিকাভুক্ত স্থায়ী বাসিন্দা যারা মাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষা বা উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষা বা স্বীকৃত বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য উচ্চস্তরের পরীক্ষা পাশ করেছে তারাই এই বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
- যারা একই স্তরের পরীক্ষায় পাশ করার পর অন্য বিষয় নিয়ে সমমানের পাঠক্রমে পড়ছে, যেমন আইএ পাশ করার পর আইএসসি বা বিএ পাশ করার পর বিকম বা এমএ পাশ করার পর এমএসসি পড়ছে, তারা এই বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।
- যারা পেশাদার পাঠক্রমের একটি পর্যায়ে পড়াশোনা শেষ করার পর অন্য পেশাদার পাঠক্রম নিয়ে পড়াশোনা করছে, যেমন, এলএলবি পাশ করার পর কেউ বিএড করছে, এই ধরনের ছাত্র-ছাত্রীরা বৃত্তির উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে না।
- যে সব ছাত্র-ছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক স্তরের টানা পাঠক্রমের একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে বা বহুমুখী বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে তারা এই বৃত্তির উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে না কারণ তার পঠন-পাঠন চলতি পাঠক্রমেরই অন্তর্গত। কিন্তু এ ধরণের পাঠক্রমের মধ্যে দশম শ্রেণির পরীক্ষাকে যারা মাধ্যমিক বা তার সমতুল মর্যাদা দেয়, সেই সব ছাত্র-ছাত্রী ম্যাট্রিক-পরবর্তী বৃত্তি পাওয়ার উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
- যে সব ছাত্র-ছাত্রী চিকিৎসাবিদ্যার স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করছেন তাঁরা এই বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন কিন্তু তাঁদের প্র্যাকটিস করলে চলবে না।
- আর্টস, সায়েন্স বা কমার্স নিয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করার পর (উত্তীর্ণ বা অনুত্তীর্ণ যাই হোক না কেন) যে সব ছাত্র-ছাত্রী কোনও স্বীকৃত পেশাদার বা কারিগরি পাঠক্রমে পড়ার জন্য নথিভুক্ত হয়েছেন তাঁরা এ ধরনের বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য। গ্রুপ-এ পর্যায়ের পাঠক্রম ছাড়া অন্য পাঠক্রমে এর পরবর্তী স্তরে অনুত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে বৃত্তি পাওয়া যাবে না। কিংবা এক বার নথিভুক্ত হওয়ার পর পাঠক্রমের পরিবর্তনও গ্রাহ্য হবে না।
- দূর-মাধ্যমের পাঠক্রমের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের অ-ফেরতযোগ্য কোর্স ফির টাকা পরে হাতে পেয়ে যাবে। দূর-মাধ্যমের পাঠক্রম অর্থে ডাকযোগের পাঠক্রম ও কন্টিনিউইং এডুকেশনকে ধরা হয়েছে। পাঠক্রমের জন্য ধার্য টাকা পেয়ে যাওয়ার পরও তারা বইপত্র কেনার জন্য ৯০০ টাকা পাবে।
- একটি বাবা-মায়ের বা অভিভাবকের কেবলমাত্র দু’জন ছেলে এ ধরনের বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য। অবশ্য কন্যাসন্তানের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনও বিধিনিষেধ নেই। একই বাবা-মায়ের মেয়েরা বৃত্তি পাওয়া সত্ত্বেও তাদের দু’টি ছেলে বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
- এই বৃত্তি পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা অন্য বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলেও বিবেচিত হবে না। তবে দু’টি বা তার অধিক বৃত্তির মধ্যে কোনটি বেশি সুবিধাজনক বিচার করে একটি মাত্র বৃত্তিই সে নিতে পারবে। কোন বৃত্তি সে নিচ্ছে তা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের মারফত লিখিত ভাবে জানিয়ে দিতে হবে। অন্য কোনও বৃত্তি গ্রহণ করলে, সেই বৃত্তি পাওয়ার দিন থেকে সে এই বৃত্তি আর পাবে না। বৃত্তি পাওয়ার পাশাপাশি থাকা বা খাওয়ার জন্য বা বই কেনার মতো অন্য খরচের জন্য সে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই প্রকল্পের আওতার মধ্যে প্রদত্ত সাহায্য পেতে পারে। নিখরচায় থাকার সুযোগও লাভ করতে পারে।
- বৃত্তিধারীরা কোনও পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্য পায় এমন কোনও কোচিং সেন্টার বা ট্রেণিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিলে কোচিং স্কিমের অন্তর্গত আলাদা করে স্টাইপেন্ড পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।
- চাকুরিরত ছাত্র-ছাত্রীরাও এই বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে যদি তাদের ও তাদের বাবা-মায়ের মিলিত রোজগার বছরে এক লক্ষ টাকার বেশি না হয়। এই ক্ষেত্রে তারা পাঠক্রমের অ-ফেরতযোগ্য ফিগুলি পরে হাতে পেয়ে যাবে (রিইমবার্সমেন্ট)।
- কর্মরত নয় এমন ছাত্র-চাত্রীদের ক্ষেত্রে যাদের বাবা-মায়ের মিলিত রোজগার বছরে এক লক্ষ টাকার কম তারা এই বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
- টীকা-১—ছাত্র-ছাত্রীর বাবা-মা বেঁচে থাকলে একমাত্র তাদের বার্ষিক রোজগার এ ক্ষেত্রে বিবেচ্য। বিবাহিতা ছাত্রীর ক্ষেত্রে একমাত্র তার স্বামীর রোজগারই বিবেচনাধীন হবে। পরিবারের অন্য কেউ উপার্জনশীল হলেও তার উপার্জন এ ক্ষেত্রে ধর্তব্য নয়। ফর্মে এর ভিত্তিতেই পারিবারিক রোজগারের উল্লেখ করতে হবে। উপার্জনশীল বাবা-মার মৃত্যু হলে বা বিবাহিতা ছাত্রীর ক্ষেত্রে তার স্বামীর মৃত্যু হলে তবেই পরিবারের যার রোজগারের উপর সে নির্ভরশীল তার বার্ষিক আয় বৃত্তি পাওয়ার নিরিখ হিসাবে বিবেচ্য হবে। রোজগেরে বাবা-মার মধ্যে কোনও এক জনের মৃত্যুতে পারিবারিক রোজগার যদি সিলিংয়ের অন্তর্ভুক্ত হয় তা হলে যে মাসে ওই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে সেই মাস থেকে ওই ছাত্র বা ছাত্রী বৃত্তি পাওয়ার অধিকারী বলে বিবেচ্য হবে। আবেদন করার শেষ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও মানবিকতার খাতিরে এ ধরনের ছাত্র-ছাত্রীর আবেদন গণ্য করা হবে।
- টীকা-২—আয়করের ক্ষেত্রে যদি প্রাপ্য বাড়িভাড়া বিবেচ্য না হয় তাহলে রোজগেরে বাবা-মার মোট রোজগার থেকে বাড়ি ভাড়ার অংশটি বাদ দিয়ে বাকি রোজগারকে বিবেচ্য বলে ধরে নিতে হবে।
- টীকা-৩—এক বছরের বেশি মেয়াদি পাঠক্রমের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ভর্তির সময়েই আয়ের শংসাপত্র নেওয়া যাবে।
আরও তথ্যের জন্যঃ—
ম্যাট্রিক-পরবর্তী বৃত্তির সংশোধিত প্রকল্প
সরকার ১৯৯৮ সাল থেকে ওবিসি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ম্যাট্রিকস্তর পরবর্তী বৃত্তি চালু করেছে। এর লক্ষ্য অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে ওবিসিভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ম্যাট্রিক-পরবর্তী স্তরের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে ১০০ শতাংশ অনুদান দেওয়া হয় তাদের ‘প্রদেয় দায়ের’(কমিটেড লায়াবিলিট) অতিরিক্ত হিসাবে। কেবলমাত্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে কোনও প্রদেয় দায়ের ব্যাপার নেই।
প্রকল্পের আওতাভুক্ত বিভিন্ন খরচ
- রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত খরচ।
- অ-ফেরতযোগ্য ফি-র ক্ষেত্রে পরে প্রদেয় অর্থ।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির নিয়মিত বেতন বা আবশ্যিক ফি ও অন্যান্য খরচ।
প্রকল্পটি ১।৭।২০১১ থেকে সংশোধিত হয়েছে।
সংশোধিত বিষয়গুলিঃ—
- ১) আয়ের উচ্চসীমার ক্ষেত্রে পরিবর্তন।
- ২)পাঠক্রমের গ্রুপিংয়ের পরিবর্তন।
- ৩) রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্য খরচসমূহের হারের পরিবর্তন।
প্রকল্পটির খরচের কোনও নির্ধারিত সীমা নেই। তবে তহবিলের পরিমাণ অনুযায়ী বরাদ্দ স্থির করা হয়।
আরও তথ্যের জন্যঃ-
রিভিশন অফ দি সেন্ট্রালি স্পন্সরড স্কিম অফ পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ ফর স্টুডেন্ট বিলঙ্গিং টু ওবিসি।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/3/2020
0 রেটিং / মূল্যাঙ্কন এবং 0 মন্তব্য
তারকাগুলির ওপর ঘোরান এবং তারপর মূল্যাঙ্কন করতে ক্লিক করুন.
© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.