বড় রাস্তার পাশ দিয়ে সারসার দোকান আর এই সব দোকানে বিক্রি হয় রকমারি পণ্য। কেবল খুচরো বিক্রিই নয়, পরিষেবা এবং পণ্য উৎপাদনের কাজও চলে রাস্তা পাশের এই সব দোকান এবং সংস্থাগুলিতে।
আধুনিক বিশ্বে শ্রমশিক্তর বাজারে একটা বড় অংশ জুড়ে আছে অপ্রথাগত ক্ষেত্রের শ্রম। এই শ্রমিকরা পুরোপুরি ভাবে অসংগঠিত এবং বিভিন্ন ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত।
অপ্রথাগত ক্ষেত্র শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলিই নয়, আজ উন্নত দুনিয়াতেও কর্মসংস্থানের একটি বড় উৎস। তাই নীতি প্রণেতা ও গবেষকদের কাছে এই ক্ষেত্র যেমন অস্তিত্বের প্রশ্ন, উন্নত বিশ্বে অবশ্যই তা নয়।
বিগত শতাব্দীর সাতের দশকের শুরু থেকেই আফ্রিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে খাদ্য সংকট তীব্র আকার নেয়। আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংঘ কাজহীন মানুষগুলির খাদ্য ও কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন সমীক্ষা চালায়।
অপ্রথাগত ক্ষেত্রের কর্মীদের কোনও নিরাপত্তা নেই, নেই মালিক ও কর্মীর মধ্যে কোনও রকম চুক্তি। এদের মজুরিও যেমন কম, তেমনি কাজও করতে হয় অনেক বেশি সময় ধরে; কর্মীদের নানা ধরনের ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে কাজ করতে হয়; ন্যূনতম মৌলিক শ্রম অধিকারের সুবিধা এরা ভোগ করে না।
গত এক দশক ধরে শিক্ষাবিদ ও নীতি রচয়িতাদের কাছে সমান ভাবে নতুন করে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে অপ্রথাগত অর্থনীতি (বিশেষ করে ১৯৭০-এর দশকের পর এই বিষয়ের উপর আগ্রহটা বিশেষ ভাবে চোখে পড়ছে)।
অপ্রথাগত অর্থনীতির আকার ও তাত্পর্যের নিরিখে বিচার করলে বিশ্বে ভারতের স্থান অনন্য। অপ্রথাগত অর্থনীতির ধারণা নিয়ে বিদ্বৎমহলে বিস্তর বিতর্ক ও সমালোচনা রয়েছে।
অর্থনীতিতে ‘অপ্রথাগত ক্ষেত্র বা ‘ইনফর্মাল সেক্টর’ কথাটি খুব বেশি দিনের নয়। বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনীতিবিদ কীথ হার্ট সর্বপ্রথম এই পরিভাষাটি ব্যবহার করেন, ১৯৭১ সালে আফ্রিকার একটি সেমিনারে একটি বক্তৃতায়।
এর জন্য কোনও তত্ত্বকথার প্রয়োজন নেই। চর্মচক্ষেই সব চাক্ষুস করা যাচ্ছে। গ্রামগুলি আর সেই গ্রাম থাকছে না, শহরগুলি হয়ে উঠছে বিপণন কেন্দ্র। ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা সাঙ্গ করে কিছু দিন চাকরি-বাকরির বৃথা চেষ্টা করার পর রাস্তার ধারে একটা করে গুমটি খুলে বসে পড়েছে।
জীবিকা অর্জনের উত্স হিসাবে শহরের অপ্রথাগত ক্ষেত্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে গ্রাম থেকে আসা মানুষজন এবং শহরের বস্তিতে থাকা বহু দরিদ্র পরিবারের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম।
অপ্রথাগত ক্ষেত্র বলতেই চোখে ভেসে ওঠে অদক্ষ বা আধা-দক্ষ শ্রমিকদের আনাগোনা আর কর্মব্যস্ততা। অসংগঠিত ক্ষেত্রের সংস্থা সংক্রান্ত জাতীয় কমিশনের দৃষ্টিভঙ্গিও এ ছবির রকমফের মাত্র।