মন্ত্রকের কথা
- শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক ভারত সরকারের পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলির মধ্যে অন্যতম। মন্ত্রকের মূল কাজ হল সাধারণ ভাবে শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত করা এবং গরিব, বঞ্চিত ও অসুবিধাজনক অবস্থায় থাকা সামাজিক অংশকে সুষ্ঠু কাজের জায়গা করে দেওয়া যাতে তারা আরও বেশি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতার লক্ষ্যে কাজ করতে পারে এবং তাদের উপযুক্ত বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত পরিষেবা প্রদান করা। সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হল, মুক্ত অর্থনীতির সঙ্গে সমান তালে তাল রেখে সংগঠিত ও অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তাঁদের সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। বিভিন্ন শ্রম আইনের রূপায়ণের মধ্যে দিয়ে এই লক্ষ্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই আইনগুলি শ্রমিকদের চাকরি ও কর্মসংস্থানের বিভিন্ন দিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। দেশের সংবিধান অনুযায়ী শ্রম সংক্রান্ত বিষয়টি যে হেতু রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ তালিকায় রয়েছে তাই শ্রমিক কল্যাণে রাজ্য সরকারও প্রয়োজনীয় বিধি ও আইন করতে পারে।
- এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম সংক্রান্ত ৪৪টি বিধি রয়েছে যেগুলি ন্যূনতম মজুরি, দুর্ঘটনা এবং সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়, কাজের সময় নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য, কাজের শর্ত, শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা, শিল্প সম্পর্ক সম্পর্কিত।
দৃষ্টিভঙ্গি ও কার্যক্রম
দৃষ্টিভঙ্গি
- ভারত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হল, কাজের সুস্থ পরিবেশ তৈরি, শ্রমিকের জীবনের গুণগত মান বৃদ্ধি, শিশুশ্রমমুক্ত ভারত এবং এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং স্বপ্রতিপালকের ভিত্তিতে দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া।
কার্যক্রম
- নীতি, কর্মসূচি, পরিকল্পনা ও প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমিকের কাজের পরিবেশ, জীবনের গুণগত মানোন্নয়ন এবং তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া, তাঁদের কাজের শর্ত খতিয়ে দেখা, কাজ সম্পর্কিত স্বাস্থ্যের ঝুঁকি ও নিরাপত্তার দিকে নজর দেওয়া, বিপজ্জনক পেশা ও কাজে শিশুশ্রম বন্ধ করা, শ্রম আইন বলবৎ করা এবং কর্মসংস্থান পরিষেবা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা মন্ত্রকের কাজ।
কল্যাণমূলক ব্যবস্থা
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক অসংগঠিত শ্রমিকের কল্যাণের লক্ষ্যে (বয়নশিল্পী, হস্তচালিত তাঁত শিল্পী, পুরুষ ও নারী মৎস্যজীবী, তাড়ি শ্রমিক, বিড়ি শ্রমিক, বাগিচাশ্রমিক, চামড়া শিল্পে কর্মরত শ্রমিক সহ) ‘আনঅর্গানাইজড সেক্টর সোশাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০০৮’ বা অসংগঠিত ক্ষেত্র সামাজিক নিরাপত্তা আইন চালু করেছে। আইন বলে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা পর্ষদ তৈরি করা হয়েছে। এই পর্ষদ সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলি সুপারিশ করবে। জীবন এবং প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কিত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা, বৃদ্ধ বয়সের সুরক্ষা সহ সরকার অসংগঠিত শ্রমিকেদের জন্য প্রয়োজন বলে মনে করে এমন যে কোনও বিষয়ে বোর্ড সুপারিশ করবে।
শ্রম সুবিধা পোর্টাল
এই সংযুক্ত ওয়েব পোর্টাল করার উদ্দেশ্য হল শ্রম নিরীক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য এবং তা চালু করার ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য দেওয়া। এর ফলে এ ব্যাপারে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বাড়বে। এই ব্যাপারে একটি নির্দিষ্ট ফর্মে সব প্রাসঙ্গিক তথ্য জানাতে হবে। যারা ফর্ম ফিলাপ করবেন তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি অত্যন্ত সহজ ও সরল। কর্মকুশলতা মাপা হবে কয়েকটি নির্দিষ্ট সূচকের মাধ্যমে ফলে মূল্যায়ন অত্যন্ত বিষয়নির্ভর বা অবজেক্টিভ হবে। পোর্টালে একটি ক্ষোভ নিরসন ব্যবস্থাও থাকবে। সব এজেন্সিকে কমন লেবার আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (এলআইএন) কার্যকর করার ব্যাপারে পোর্টালের মাধ্যমে উৎসাহিত করা হবে।
পোর্টালের চারটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল :
- ১) অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সহযে করতে একটি ইউনিক লেবার আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার সব ইউনিটকে দেওয়া হবে।
- ২) শিল্পসংস্থা সহজেই স্বশংসায়িত সরলীকৃত সিঙ্গল অনলাইন রিটার্ন জমা দেবে। ১৬টি আলাদা রিটার্নের বদলে এ বার থেকে একটি সুসংহত রিটার্ন জমা দিলেই চলবে।
- ৩) ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অতি অবশ্যই লেবার ইন্সপেক্টরদের ইন্সপেকশন রিপোর্ট আপলোড করতে হবে।
- ৪) পোর্টালের সাহায্যে সময়মতো ক্ষোভ নিরসনের ব্যবস্থা করা হবে।
উপরের উপায়গুলির মাধ্যমে শ্রম সম্পর্কিত বিষয়গুলি সম্পন্ন করা সহজ হবে এবং শিল্প পরিচালনার ক্ষেত্রেও সহজ ব্যবস্থা প্রণয়ন করা যাবে। সমস্ত তথ্য এক জায়গায় একটি পোর্টালে জড়ো করার মাধ্যমে নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য জ্ঞাপন করাও সম্ভব হবে। চারটি কেন্দ্রীয় জায়গা থেকে পোর্টালটি অপারেট করা হবে এগুলি হল চিফ লেবার কমিশনার, ডাইরেক্টরেট জেনারেল অফ মাইনস সেফটি, এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড ও এমপ্লয়িজ স্টেট ইন্সিওরেন্স কর্পোরেশন। মন্ত্রকের এই কর্মযজ্ঞের ফলে ১১ লক্ষ ইউনিট সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা তা ডিজিটাইজড করা এবং ঝাড়াই-বাছাই করা হয়েছে। এর ফলে ইউনিটের প্রকৃত সংখ্যা ৬-৭ লক্ষে নেমে এসেছে। মন্ত্রক প্রতিটি ইউনিটকে এলআইএন দিতে চায়।
আরও তথ্যের জন্য দেখুন- http://efilelabourreturn.gov.in/uwp/home#
সূত্র : Ministry of Labour and Employment