সাংসদদের একটি করে গ্রাম উন্নয়নের জন্য বেছে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি কর্মসূচির খসড়া সম্প্রতি তৈরি করেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। ‘সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা’ (এসএজিওয়াই) নামে এই কর্মসূচিটির আওতায় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্যদের ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার জনবসতি পূর্ণ এক একটি গ্রাম বেছে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে সমতল এলাকাগুলিতে। অন্য দিকে পার্বত্য এলাকায় ১ হাজার থেকে ৩ হাজার জনবসতি পূর্ণ একটি গ্রামকে বেছে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বেছে নেওয়া এক একটি গ্রামকে ২০১৬ সালের মধ্যে ‘আদর্শ গ্রাম’ বা ‘মডেল ভিলেজ’-এ রূপান্তরিত করার রূপরেখা তৈরি হয়েছে। পরে ২০১৯ –এর মধ্যে সাংসদদের বেছে নিতে হবে আরও দু’টি করে গ্রাম।
টাকাপয়সা লেনদেনের কোনও কর্মসূচি এটি নয়, বরং জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই চাহিদাভিত্তিক এই কর্মসূচিটি রূপায়িত হতে চলেছে। বর্তমানে দেশে সংসদের উভয় কক্ষ মিলিয়ে মোট সাংসদ সংখ্যা আটশো। সুতরাং তিন বছরে আড়াই হাজারের মতো গ্রামকে এই বিশেষ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজ্যগুলি যদি তাদের সংশ্লিষ্ট বিধায়কদেরও এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত করে, তা হলে ওই তিন বছরে ৬ থেকে ৭ হাজার গ্রাম আদর্শ গ্রাম হিসেব স্বীকৃতি পাবে।
সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনার রূপরেখা অনুযায়ী, সাংসদদের দায়িত্ব হবে একটি গ্রামের উন্নয়নের ছক বা প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীদের এই কাজে শামিল হতে উত্সাহিত করে তোলা। সাংসদদের স্থানীয় এলাকা উন্নয়ন (এমপিল্যাড) তহবিল থেকে এই কাজে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা এবং জল সরবরাহ প্রকল্পের জন্য যে অতিরিক্ত বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে তার জোগান আসবে কর্পোরেট ক্ষেত্রগুলির সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্প থেকে।
সমগ্র কর্মসূচিটির মূল লক্ষ্য হল ব্যক্তিকেন্দ্রিক, মানবিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক — গ্রাম জীবনের এই চারটি বিশেষ দিকের সামগ্রিক বিকাশ তথা উন্নয়ন। ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিকাশের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল পরিচ্ছন্নতা, সাংস্কৃতিক পরম্পরা তথা ঐতিহ্য এবং আচরণগত পরিবর্তন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তা — এগুলি হল মানবিক বিকাশের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিক।
অন্য দিকে অর্থনৈতিক বিকাশের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে জীবিকার্জনের ব্যবস্থা, দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তা ও সুযোগসুবিধা এবং প্রাথমিক সুযোগসুবিধা ও পরিষেবার প্রসার। সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলির ওপর বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হবে সেগুলি হল স্বেচ্ছাসেবার মনোভাব বা মানসিকতাকে উত্সাহ দান, সামাজিক মূল্য ও নীতিবোধ, সামাজিক ন্যায় ও সুপ্রশাসন।
এ ছাড়াও পরিবেশ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, সুপ্রশাসন এবং প্রাথমিক সুযোগসুবিধা ও পরিষেবার প্রসার — উন্নয়নের এই সমস্ত দিকও সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনায় গুরুত্ব পাবে।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020
গ্রাম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী একটি কর্মসূচি...