অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

উপজাতি উন্নয়ন মন্ত্রক

ভূমিকা

২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী দেশের ৮ কোটি ৪৫ লক্ষ ১০ হাজার অর্থাৎ মোট জনসংখ্য‌ার মধ্য‌ে ৮.১৪ শতাংশ আদিবাসী সম্প্রদায়ে মানুষ। তারা দেশের ১৫ শতাংশ ভূখণ্ড জুড়ে থাকে। বিভিন্ন পারিপার্শিক সূচক ও তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় কেন তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। প্রসূতিমৃত্যু, শিশুমৃত্য‌ু, মালিকানাধীন কৃষি জমির পরিমাণ, পানীয় জলের সুবিধা, বিদ্য‌ুৎ ব্য‌বহারের সুবিধা : সব দিক দিয়েই আদিবাসীরা সাধারণ নাগরিকদের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৫২ শতাংশই দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে। শুধু তা-ই নয়, সবচেয়ে দুঃখজনক হল ৫৪ শতংশ আদিবাসী অর্থনৈতিক সম্পদ (যেমন পরিবহণ ব্য‌বস্থা বা যোগাযোগের সুবিধা) ব্য‌বহারের সুবিধা লাভ থেকে বঞ্চিত।

তফশিলি উপজাতি উন্নয়ন

ভারতীয় সংবিধানে সে ভাবে তফশিলি উপজাতির সংজ্ঞা দেওয়া নেই। সংবিধানের ৩৬৬(২৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সে সব সম্প্রদায়ই তফশিলি উপজাতি যারা ৩৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তফশিলভুক্ত। বলে ঘোষণা করা হয়েছে তারাই তফশিলি উপজাতি হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। সংবিধানের ৩৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনসাধারণের প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাষ্ট্রপতি যে সব গোষ্ঠীকে উপজাতি বা উপজাতি সম্প্রদায় বলে ঘোষণা করেছেন তারাই তফশিলি উপজাতি। ১৯৯১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দেশের আদিবাসী জনসংখ্য‌া হল ৬ কোটি ৭৭ লক্ষ ৬০ হাজার অর্থাৎ মোট জনসংখ্য‌ার ৮.০৮ শতাংশ। আদিবাসীরা দেশের মধ্য‌ে ছড়িয়ে থাকা পাহাড়ি ও জঙ্গল এলাকাতেই মূলত বসবাস করে।

এই গোষ্ঠীগুলির বিশেষত্ব হল

  • আদিম জীবনধারা
  • ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা
  • আলাদা সংস্কৃতি
  • বাইরের গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগে সঙ্কোচ
  • অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতা

১৯৯১-এ জনগণনা অনুযায়ী, তফশিলি উপজাতিভুক্তদের ৪২.০২ শতাংশ কাজ করে। তার মধ্য‌ে ৫৪.৫০ শতাংশ চাষি, ৩২.৬৯ শতাংশ খেত মজুর। সুতরাং এই সম্প্রদায়ের যারা কাজ করে তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ মানুষই প্রাথমিক ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। তফশিলি উপজাতিদের মধ্য‌ে সাক্ষতার হার ২৯.৬০ শতংশ, যেখানে দেশের মোট সাক্ষরতার হার ৫২ শতাংশ। তফশিলি উপজাতিভুক্ত মহিলাদের এক তৃতীয়াংশই নিরক্ষর। প্রথাগত শিক্ষায় পড়া-ছুটদের অত্যধিক হার এই বৈষম্য‌ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। যে কারণে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এদের অনুপস্থিতি বিশেষভাবে চোখে পড়ে। ফলে তফশিলি উপজাতিভুক্তদের দারিদ্রসীমার নীচে থাকার হার জাতীয় হারের চেয়ে যথেষ্ট বেশি হবে এটাই স্বাভবিক। ১৯৯৩-৯৪ সালের জন্য‌ যোজনা কমিশন যে হিসাব করেছিল, সেই হিসাব অনুযায়ী তফশিলি উপজাতিদের গ্রামীণ জনসংখ্য‌ার ৫১.৯২ শতাংশ এবং শহুরে জনসংখ্য‌ার ৪১.৪ শতাংশ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করছে।

আদিবাসীদের শোষণ এবং সামাজিক বৈষম্য‌ের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং তাদের শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক মান্নোনয়ন করতে ভারতীয় সংবিধান কতকগুলি বিশেষ ব্য‌বস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। এ জন্য‌ বিশেষ রণকৌশলেরও আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার গোড়াতেই নেওয়া এই বিশেষ রণকৌশলের নাম ট্রাইবাল সাব প্ল্য‌ান (টিএসপি)। এই রণকৌশলের লক্ষ্য‌ রাজ্য‌ সরকারের নেওয়া আদিবাসী উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে অর্থ জোগানো, কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক , আর্থিক ও উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানগুলির বিভিন্ন প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দেওয়া। এই কৌশলের মূল বনেদ হল বিভিন্ন রাজ্য‌ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জনসংখ্য‌ার আনুপাতিক হারে ট্রাইবাল সাব প্ল্য‌ানের অর্থ বরাদ্দ সুনিশ্চিত করা। উপজাতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য‌ে ট্রাইবাল সাব প্ল্য‌ান প্রণয়ন ও রূপায়ণ করার জন্য বিভিন্ন রাজ্য‌ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং কেন্দ্রের নানা মন্ত্রক ও দফতর যে সব উদ্যোগ নিচ্ছে, তা ছাড়াও তফশিলি উপজাতিদের স্বার্থে উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রক বেশ কয়েকটি প্রকল্প ও কর্মসূচি রূপায়ণ করছে।

সাক্ষরতার হারে অগ্রগতির ছবি

১৯৬১

১৯৭১

১৯৮১

১৯৯১

২০০১

সাক্ষর জনসংখ্য‌া

২৪%

২৯.৪%

৩৬.২%

৫২.২%

৬৪.৮৪

সাক্ষর উপজাতি

৮.৫%

১১.৩%

১৬.৩%

২৯.৬%

৪৭.১০%

মহিলা জনসংখ্য‌া

১২.৯%

১৮.৬%

২৯.৮%

৩৯.৩%

৫৩.৬৭%

সাক্ষর মহিলা উপজাতি

৩.২%

৪.৮%

৮.০%

১৮.২%

৩৪.৭%

তফশিলি উপজাতি কারা

‘তফশিলি উপজাতি’ শব্দবন্ধটি প্রথম দেখা যায় ভারতীয় সংবিধানে। সংবিধানের ৩৬৬(২৫) অনুচ্ছেদে এর সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে — ‘‘সেই আদিবাসী বা আদিবাসী গোষ্ঠী অথবা তার ভিতরের অংশ বা গ্রুপ, এই সংবিধানের প্রয়োজনে সংবিধানের ৩৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যাদের সূচিত করা হয়েছে’’।

তফশিলি উপজাতি সূচিত করা সম্পর্কিত ৩৪২ নম্বর অনুচ্ছেদ নীচে দেওয়া হল—

৩৪২ নম্বর অনুচ্ছেদ

রাষ্ট্রপতি জনসাধারণের প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে (রাজ্য‌ের ক্ষেত্রে রাজ্য‌পালের সঙ্গে পরামর্শ করে) রাজ্য‌ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের যে সব আদিবাসী গোষ্ঠী অথবা গোষ্ঠীর অংশ বা গ্রুপকে নির্দিষ্ট করে দেবেন, তারা এই সংবিধানের স্বার্থে সেই রাজ্য‌ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সাপেক্ষে তফশিলি উপজাতি হিসাবে চিহ্নিত হবে।

সংসদ আইনের মাধ্য‌মে ধারা-১ (ক্লজ-ওয়ান) অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করে কোনও আদিবাসী গোষ্ঠী অথবা তার অংশ বা গ্রুপকে নতুন করে তালিকাভুক্ত করতে পারে বা তালিকা-বর্হিভূত করতে পারে। এই বিজ্ঞপ্তি কিন্তু পরবর্তী কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাতিল করা যায় না।

সুতরাং রাজ্য‌ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সাপেক্ষে তফশিলি উপজাতি ঘোষিত হওয়ার প্রথম বিশেষত্ব হল রাষ্ট্রপতিকে রাজ্য‌ের ক্ষেত্রে রাজ্য‌ সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। এই আদেশ বদলানো যায় কেবলমাত্র সংসদে আইন প্রনয়ণ করে। সংবিধানের উল্লিখিত অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তালিকা কেবলমাত্র রাজ্য‌ভিত্তিক, সর্ব ভারতীয়ভিত্তিক নয়।

একটি আদিবাসী সম্প্রদায় তফশিলি উপজাতি হিসাবে চিহ্নিত হবে কি না, তা বিবেচনার সুচক হল অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতা, অন্য‌ গোষ্ঠীর সঙ্গে মেশার ব্য‌াপারে দোলাচল, আদিম জীবনধারা নিজস্ব সংস্কৃতি ও ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা। এই মাপকাঠি সংবিধানে বলা নেই, কিন্তু এটাই প্রচলিত পদ্ধতি। ১৯৩১ সালের জনগণনা রিপোর্ট, ১৯৫৫ সালের ব্য‌াকওয়ার্ড ক্লাসেস কমিশন রিপোর্ট, কালেলকর উপদেষ্টা কমিটির রিপোর্ট, ১৯৬৫ সালের এসসি/এসটি তালিকা সংশোধন সম্পর্কিত লকুর কমিটির রিপোর্ট এবং জয়েন্ট কমিটি অফ পার্লামেন্ট অন দ্য শিডিউলড কাস্টস অ্য‌ান্ড শিডিউলড ট্রাইবস অর্ডার্স (অ্য‌ামেন্ডমেন্ট)বিল ১৯৬৭-তে তফশিলি উপজাতির যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে তাতেই এই বিষয়গুলি উল্লিখিত।

সংবিধানের ৩৪২ নম্বর অনুচ্ছেদের ১ নম্বর ধারা অনুযায়ী ভারতের রাষ্ট্রপতি রাজ্য‌ সরকারগুলির সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাজ্য‌ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সাপেক্ষে তফশিলি উপজাতি সূচিত করে এ পর্যন্ত ৯টি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। এর মধ্য‌ে আটটি বিজ্ঞপ্তি আদি রূপ অনুসারে বা সংশোধিত আকারে বলবৎ আছে। গোয়া পুনর্গঠনের ফলে ‘দ্য কনস্টিটিউশন (গোয়া, দমন অ্য‌ান্ড দিউ) শিডিউলড ট্রাইবস অর্ডার ১৯৬৮’ নামক নির্দেশটি বাতিল হয়েছে। ১৯৮৭ সালের গোয়া, দমন ও দিউ পুনর্গঠন আইন অনুসারে গোয়ার তফশিলি উপজাতি তালিকা ‘দ্য কনস্টিটিউশন (শিডিউলড ট্রাইবস) অর্ডার, ১৯৫০-এর তফশিলের ১৯তম অংশে এবং দমন ও দিউয়ের তফশিলি উপজাতি তালিকা ‘দ্য কনস্টিটিউশন (শিডিউলড ট্রাইবস) (ইউনিয়ন টেরিটরিজ) অর্ডার, ১৯৫১-এর তফশিলের দ্বিতীয় অংশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশের নাম

তারিখ প্রযোজ্য‌

যে রাজ্য‌ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে

দ্য কনস্টিউশন (শিডিউলট্রাইবস)অর্ডার ১৯৫০(সি ও ২২)

৬।৯।১৯৫০

অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, অসম,বিহার, গুজরাত, গোয়া, হিমাচল প্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল, মধ্য‌প্রদেশ,মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম ওড়িশা, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, ত্রিপুরাএবং পশ্চিমবঙ্গ।

দ্য কনস্টিটিউশন (শিডিউলডট্রাইবস)(ইউনিয়ন টেরিটরিজ) অর্ডার(সি ও ৩৩)

২০।৯।১৯৫১

দমন-দিউ, লাক্ষাদ্বীপ

দ্য কনস্টিউশন(আন্দামানঅ্য‌ান্ড নিকোবর আইল্য‌ান্ডস)শিডিউলড ট্রাইবস অর্ডার,১৯৫৯ (সি ও ৫৮)

৩১।৩।১৯৫৯

আন্দামান ও নিকোবর

দ্য কনস্টিটিউশন (দাদরা ও নগরহাভেলি)শিডিউলড ট্রাইবসঅর্ডার, ১৯৬২ (সি ও৬৫)

৩০।৬।১৯৬২

দাদরা ও নগর হাভেলি

দ্য কনস্টিউশন(উত্তরপ্রদেশ)শিডিউলড ট্রাইবস অর্ডার ১৯৬৭(সি ও ৭৮)

২৪।৬।১৯৬৭

উত্তরপ্রদেশ

দ্য কনস্টিউশন (নাগাল্য‌ান্ড)শিডিউলডট্রাইবস অর্ডার ১৯৭০(সি ও ৮৮)

২৩।৭।১৯৭০

নাগাল্য‌ান্ড

দ্য কনস্টিউশন (সিকিম)শিডিউলডট্রাইবসঅর্ডার ১৯৭৮(সি ও ১১১)

২২।৬।১৯৭৮

সিকিম

দ্য কনস্টিটিউশন(জম্মু অ্য‌ান্ড কাশ্মীর)শিডিউলড ট্রাইবস অর্ডার ১৯৮৯(সি ও ১৪২)

৭।১০।১৯৮৯

জম্মু ও কাশ্মীর

* হরিয়ানা ও পঞ্জাব এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লি, পুদুচেরি ও চণ্ডীগড়ে কোনও সম্প্রদায়কে তফশিলি উপজাতিভুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়নি।

শংসাপত্র পাওয়ার শর্ত

তফশিলি উপজাতি শংসাপত্র সংক্রান্ত যে বিষয়গুলি খেয়াল রাখতে হবে—

  • ১) সাধারণ : কেউ যদি জন্মসূত্রে তফশিলি উপজাতিভুক্তির শংসাপত্র চায় তা হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি যাচাই করে দেখতে হবে ---
    • যে তফশিলি উপজাতিভুক্তির দাবি জানানো হয়েছে, সে বা তার বাবা-মা সত্যিই সেই তফশিলি উপজাতিভুক্ত কিনা।
    • যে রাজ্যের ক্ষেত্রে তফশিলি উপজাতিভুক্তির দাবি জানানো হয়েছে, ওই সম্প্রদায় সেই রাজ্য‌ সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির তফশিলি উপজাতিভুক্তির নির্দেশিকায় পড়ছে কিনা।
    • যে রাজ্যের বা ওই রাজ্যের যে অঞ্চলের সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির তফশিলি উপজাতিভুক্তির নির্দেশিকা জারি হয়েছে, ওই ব্য‌ক্তি ওই রাজ্য‌ের বা রাজ্য‌ের সেই অঞ্চলের বাসিন্দা কিনা।
    • তিনি যে কোনও ধর্মাবলম্বী হতে পারেন।
    • যে দিন ওই রাজ্য‌ সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনামা বেরিয়েছে সেই সময়ে তিনি ওই রাজ্য‌ের স্থায়ী বাসিন্দা কিনা।
    • যে দিন রাষ্ট্রপতির নির্দেশ বেরিয়েছে সেই সময় তিনি কর্মসূত্রে, শিক্ষাসূত্রে বা অন্য‌ কারণে সাময়িক ভাবে রাজ্য‌ের বাইরে থাকলেও তাঁর সম্প্রদায় ওই ব্যক্তির রাজ্য‌ের সাপেক্ষে নির্দেশিকার অন্তর্ভুক্ত হলে তিনি তফশিলি উপজাতির মর্যাদা পাবেন। কিন্তু তিনি সাময়িক ভাবে যে রাজ্য‌ে বাস করছেন সেই রাজ্য‌ের সাপেক্ষে তাঁর সম্প্রদায় রাষ্ট্রপতি তালিকাভুক্ত হলেও সেখানে তিনি তফশিলি উপজাতিভুক্ত বলে গণ্য‌ হবেন না।
    • রাষ্ট্রপতির প্রাসঙ্গিক নির্দেশিকাটি জারি হওয়ার পরে জন্ম হয়েছে এমন কেউ যদি কোনও রাজ্যের তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবি করেন, তা হলে নির্দেশিকা জারি হওয়ার সময় ওই রাজ্য‌ে তাঁর বাবা-মায়ের স্থায়ী আবাসটিই দাবিদারের স্থায়ী বাসস্থান হিসাবেগণ্য করা হবে।
  • ২) স্থানান্তর বা মাইগ্রেশনের কারণে তফশিলি উপজাতি ভুক্ত হওয়ার দাবি
    • যদি কোনও ব্য‌ক্তি রাজ্য‌ের কোনও অংশে তফশিলি উপজাতি বলে স্বীকৃত এমন কোনও সম্প্রদায়ভুক্ত হন এবং তিনি যদি রাজ্যের অন্য এমন অংশে চলে যান, যেখানে সেই সম্প্রদায় তফশিলি উপজাতি বলে স্বীকৃত নয়, তা হলেও তিনি তফশিলি উপজাতি বলে বিবেচিত হবেন।
    • যদি কোনও তফশিলি জাতিভুক্ত ব্য‌ক্তি এক রাজ্য‌ থেকে এমন কোনও অন্য‌ রাজ্য‌ে যান, যেখানে তার সম্প্রদায় তফশিলি উপজাতিভুক্ত বলে গণ্য‌ নয়, তা হলে তিনি শুধুমাত্র প্রথম রাজ্য‌ের সাপেক্ষেই তফশিলি উপজাতিভুক্তর মর্যাদা পাবেন, দ্বিতীয় রাজ্য‌ের জন্য‌ নয়।
  • ৩) বিবাহ সূত্রে তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবি
    • কোনও ব্য‌ক্তি যদি জন্মসূত্রে তফশিলি উপজাতিভুক্ত না হন তা হলে তিনি কোনও তফশিলি ভুক্ত ছেলে বা মেয়েকে বিবাহ করে নিজেকে তফশিলি উপজাতিভুক্ত বলে দাবি করতে পারেন না।
    • ঠিক সেই রকম ভাবেই কোনও তফশিলি উপজাতিভুক্ত ব্য‌ক্তি যদি তফশিলি উপজাতিভুক্ত নন এমন কাউকে বিবাহ করেন তবুও তিনি নিজে তফশিলি উপজাতিভুক্ত হিসাবেই বিবেচিত হবেন।
  • ৪) তফশিলি উপজাতিভুক্তির শংসাপত্র দেওয়া
    • তফশিলি উপজাতিভুক্তরা নির্দিষ্ট ফর্ম অনুসারে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে তফশিলি উপজাতিভুক্তির শংসাপত্র পাবেন।
    • ঠিকমতো অনুসন্ধান না করে শংসাপত্র ইস্য‌ু করলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক শাস্তি পাবেন।
    • অনেক সময় দেখা যায় কোনও রাজ্য‌ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে পড়াশোনা বা জীবিকার কারণে কেউ অন্য‌ রাজ্য‌ে বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চলে গেলে তাঁর নিজের রাজ্য‌ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে তফশিলি উপজাতিভুক্তির শংসাপত্র বের করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। সে ক্ষেত্রে অনুসন্ধান সাপেক্ষে দ্বিতীয় রাজ্য‌ বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে শংসাপত্র ইস্য‌ু করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, তবে দাবিদার ব্যক্তিকে তাঁর বাবা-মায়ের জন্মস্থান নিয়ে আদত শংসাপত্র জমা দিতে হবে। ওই ব্য‌ক্তি যে রাজ্য‌ে বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জীবিকা বা পড়াশোনার জন্য‌ গিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায় সেই রাজ্য‌ের বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তফশিলি উপজাতি তালিকাভু্ক্ত কিনা তা বিবেচনায় না এনেই শংসাপত্র দেওয়া হবে। তবে তিনি যে রাজ্য‌ে বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে গিয়েছেন সেখানে তিনি তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না।

মন্ত্রকের কর্তব্য‌

১৯৯৯ সালে সামাজিক ন্য‌ায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক থেকে আলাদা করে উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রক তৈরি করা হয়েছে, যার লক্ষ্য‌ হল সমন্বিত ও পরিকল্পিত উপায়ে ভারতীয় সমাজের সবচেয়ে বঞ্চিত অংশ যারা সেই তফশিলি উপজাতিদের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানো। এই মন্ত্রক তৈরি হওয়ার আগে উপজাতি বিষয়গুলি বিভিন্ন মন্ত্রক দেখাশোনা করত। যেমন--

  • স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৮৫-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে ‘ট্রাইবাল ডিভিশন’ কিছু নির্দিষ্ট কাজ করত।
  • সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ থেকে মে ১৯৯৮ পর্যন্ত সামাজিক কল্য‌াণ এই কাজ দেখাশোনা করত।
  • মে ১৯৯৮ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ পর্যন্ত সামাজিক ন্য‌ায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক এই কাজগুলি দেখাশোনা করত।

উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রকই তফশিলি উপজাতি কল্য‌াণের যাবতীয় নীতি, পরিকল্পনা ও তা রূপায়ণ করার ব্য‌াপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রক। ১৯৬১-এর ‘গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (অ্য‌ালোকেশন অফ বিজনেস) রুলস’-এর অধীনে যে সব বিষয় রয়েছে, সেই সব বিষয় অনুসরণ করেই উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রক আজ পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করেছে। সেগুলি হল ---

  • ১.তফশিলি উপজাতিভুক্তদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিক বিমার ব্য‌বস্থা।
  • ২.আদিবাসী কল্য‌াণ : আদিবাসী কল্য‌াণের পরিকল্পনা, প্রকল্প রচনা, গবেষণা, মূল্য‌ায়ন, পরিসংখ্য‌ান তৈরি করা ও প্রশিক্ষণের ব্য‌বস্থা
  • ৩.আদিবাসী কল্য‌াণে স্বেচ্ছাসেবা মূলক কাজকে উৎসাহিত করা।
  • ৪.আদিবাসী সম্প্রদায় ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তির ব্য‌বস্থা।
  • ৫.তফশিলি উপজাতিভুক্তদের উন্নয়ন ---
    • জঙ্গলের জমিতে জঙ্গলবাসী আদিবাসীদের অধিকার সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন ও অন্যান্য বিষয়।
    • উল্লেখ্য‌ : উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রকই তফশিলি উপজাতি কল্য‌াণের যাবতীয় নীতি, পরিকল্পনা ও তা রূপায়ণ করার ব্য‌াপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রক হবে। নির্দিষ্ট সেক্টরভুক্ত কর্মসূচি ও উন্নয়ন প্রকল্পের নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা করা ও তা রূপায়ণ, নজরদারি, মূল্যায়ন করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রক/ দফতর বা রাজ্য‌ সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কর্তৃপক্ষের উপর বর্তায়। প্রতিটি মন্ত্রক বা দফতর তার সেক্টরের কাজের জন্য‌ নোডাল মন্ত্রক বা দফতর হিসাবে গণ্য হবে।
  • ৬. তফশিলভুক্ত এলাকা
    • তফশিলভুক্ত এলাকার ব্য‌াপারে রাজ্য‌ের রাজ্য‌পালদের তৈরি বিধিনিয়ম।
  • ৭.কমিশন তফশিলিভুক্ত এলাকার প্রশাসন ও তফশিলি উপজাতিভুক্তদের কল্য‌াণের ব্য‌াপারে রিপোর্ট পেশ করবে এবং
    • যে কোনও রাজ্য‌ের তফশিলি উপজাতিভুক্তদের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প প্রণয়ন ও রূপায়ণে নির্দেশ জারি করবে।
  • ৮. তফশিলি উপজাতিভুক্তদের জন্য‌ জাতীয় কমিশন।
  • ৯. ১৯৫৫-এর নাগরিক অধিকার সুরক্ষা আইন (১৯৫৫-এর ২২) এবং ১৯৮৯-এর তফশিলি জাতি ও তফশিলি উপজাতি (অত্য‌াচার প্রতিরোধ) আইন (১৯৮৯-এর ৩৩) রূপায়ণ করা। তফশিলি উপজাতি সংক্রান্ত অপরাধের বিচার সংক্রান্ত প্রশাসনের অবশ্য‌ দায়িত্ব এই মন্ত্রকের নয়।

সুত্রঃ Ministry of Tribal Affairs

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/15/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate