সাধারণত শোষণের উদ্দেশ্যে জোর খাটিয়ে, ভয় দেখিয়ে এবং চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে অথবা যাকে পাচারের উদ্দেশ্য, তার উপর কর্তৃত্ব রয়েছে এমন ব্যক্তিকে আইন বহির্ভূত উপায়ে লেনদেনের মাধ্যমে সংগ্রহ, স্থানান্তর, আশ্রয়দান ও অর্থের বিনিময়ে গ্রহণ ইত্যাদি যে কোনও কর্মকাণ্ডকে পাচার বলে গণ্য করা হয়।
পাচার একটি সংগঠিত অপরাধ। আর্ন্তজাতিক ভাবে নারী ও শিশু পাচারকে আধুনিক যুগের দাস প্রথা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। সাধারনত এতে অনেক অসাধু ব্যক্তি জড়িত থাকে। কাজ দেওয়ার নাম করে মেয়েদের লোভ দেখিয়ে বা ভুলিয়ে নিয়ে গিয়ে বেশ্যাবৃত্তির জন্য দালালের কাছে বা বেশ্যালয়ে মালকিনদের কাছে বা সস্তা হোটেলে বা ভাড়া বাড়িতে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
পাচার ব্যবসার প্রধান অঙ্গ তিনটি-
বিগত কয়েক দশকে পাচারের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃধি পেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারত পাচারে অন্যতম যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিশেষ নিয়োজন স্থান হিসাবে পরিগনিত যা আমাদের কাছে চরম লজ্জা। নারী বা শিশু পাচারের মত নির্মম পরিনতি কোন সচেতন নাগরীকের কাম্য নয়।
আজ সরকার, আমাদের মত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বেসরকারী সংগঠন নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহন করলেও তা রুপায়িত হতে পারে এক মাত্র আমাদেরই সচেতনতার মাধ্যমেই।
পাচারকারীদের অনেকেই শ্রমিক ঠিকাদার যারা শ্রমিকদের কাজে বা পেশায় যুক্ত হবার প্রতিশ্রুতি দেয় বা দায়িত্ব নেয়। কাজ দেওয়ার নামে মেয়েদের ভুলিয়ে নিয়ে এসে বেশ্যা বৃত্তির জন্য দালালদের কাছে বা বেশ্যালয়ের মালকিনদের কাছে বিক্রি করে দেয়। বেশ্যাবৃত্তিতে নিয়োজিত মেয়েদেরও পাচারকারীর ভূমিকায় দেখা যায়।
যে সব জায়গায় দরিদ্র বেশি, সমাজের ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, পরিবহন ও ভৌগোলিক অসুবিধাপূর্ণ স্থানগুলিতে পাচারকারীরা বিশেষ সক্রিয়। দরিদ্র পরিবার, যে পরিবারে শিশুকন্যারা সংখ্যায় বেশি, বা যে পরিবারে পুরুষরা রোজগার করতে বা অন্য কাজে যুক্ত হতে অক্ষম, সেই সব পরিবার পাচারকারীদের লক্ষ্য। অবিবাহিত বা বিধবা মহিলা, ভেঙে যাওয়া পরিবারের নাবালিকা, ধর্ষণ, বিশ্বাসঘাতকতা, যৌন নিপীড়নের যারা শিকার বা যাদের সমাজ একঘরে করে দিয়েছে – সেই সব মেয়েরাই পাচারকারীদের প্রধান লক্ষ্য।
সুত্রঃ Birangana Seba Samity
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/22/2020