অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

নারী ও শিশুপাচার রোধ

পাচার কি ?

সাধারণত শোষণের উদ্দেশ্যে জোর খাটিয়ে, ভয় দেখিয়ে এবং চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে অথবা যাকে পাচারের উদ্দেশ্য, তার উপর কর্তৃত্ব রয়েছে এমন ব্যক্তিকে আইন বহির্ভূত উপায়ে লেনদেনের মাধ্যমে সংগ্রহ, স্থানান্তর, আশ্রয়দান ও অর্থের বিনিময়ে গ্রহণ ইত্যাদি যে কোনও কর্মকাণ্ডকে পাচার বলে গণ্য করা হয়।

পাচার একটি সংগঠিত অপরাধ। আর্ন্তজাতিক ভাবে নারী ও শিশু পাচারকে আধুনিক যুগের দাস প্রথা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। সাধারনত এতে অনেক অসাধু ব্যক্তি জড়িত থাকে। কাজ দেওয়ার নাম করে মেয়েদের লোভ দেখিয়ে বা ভুলিয়ে নিয়ে গিয়ে বেশ্যাবৃত্তির জন্য দালালের কাছে বা বেশ্যালয়ে মালকিনদের কাছে বা সস্তা হোটেলে বা ভাড়া বাড়িতে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

পাচার ব্যবসার প্রধান অঙ্গ তিনটি-

  • ১) নিয়োজন স্থান(Source)।
  • ২) পরিবহন(Transportation)।
  • ৩) গন্তব্যস্থল (End Point)।

বিগত কয়েক দশকে পাচারের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃধি পেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারত পাচারে অন্যতম যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিশেষ নিয়োজন স্থান হিসাবে পরিগনিত যা আমাদের কাছে চরম লজ্জা। নারী বা শিশু পাচারের মত নির্মম পরিনতি কোন সচেতন নাগরীকের কাম্য নয়।

আজ সরকার, আমাদের মত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বেসরকারী সংগঠন নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহন করলেও তা রুপায়িত হতে পারে এক মাত্র আমাদেরই সচেতনতার মাধ্যমেই।

পাচারকারী কারা ?

পাচারকারীদের অনেকেই শ্রমিক ঠিকাদার যারা শ্রমিকদের কাজে বা পেশায় যুক্ত হবার প্রতিশ্রুতি দেয় বা দায়িত্ব নেয়। কাজ দেওয়ার নামে মেয়েদের ভুলিয়ে নিয়ে এসে বেশ্যা বৃত্তির জন্য দালালদের কাছে বা বেশ্যালয়ের মালকিনদের কাছে বিক্রি করে দেয়। বেশ্যাবৃত্তিতে নিয়োজিত মেয়েদেরও পাচারকারীর ভূমিকায় দেখা যায়।

কারা পাচার হয় ?

যে সব জায়গায় দরিদ্র বেশি, সমাজের ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, পরিবহন ও ভৌগোলিক অসুবিধাপূর্ণ স্থানগুলিতে পাচারকারীরা বিশেষ সক্রিয়। দরিদ্র পরিবার, যে পরিবারে শিশুকন্যারা সংখ্যায় বেশি, বা যে পরিবারে পুরুষরা রোজগার করতে বা অন্য কাজে যুক্ত হতে অক্ষম,  সেই সব পরিবার পাচারকারীদের লক্ষ্য। অবিবাহিত বা বিধবা মহিলা, ভেঙে যাওয়া পরিবারের নাবালিকা, ধর্ষণ, বিশ্বাসঘাতকতা, যৌন নিপীড়নের যারা শিকার বা যাদের সমাজ একঘরে করে দিয়েছে – সেই সব মেয়েরাই পাচারকারীদের প্রধান লক্ষ্য।

পাচার এর উদ্দেশ্যঃ

  • পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করা।
  • ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত করা।
  • শরীরের রক্ত বিক্রি করে দেওয়া।
  • শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ (চোখ, কিডনি) কেটে বিক্রি করে দেওয়া।
  • মাথার খুলি, কঙ্কাল বিদেশে রপ্তানি করা।
  • মধ্য প্রাচ্যে উটের জকি হিসাবে ব্যবহার করা।

পাচারের পদ্ধতি

  • দেশে ও বিদেশে আকর্ষনীয় কাজের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে।
  • সাজানো বিয়ে করে (৫২% পাচার সাজান বিয়ের মাধ্যমে ঘটে)।
  • অপহরণ অথবা মনোরঞ্জক দেখানোর ছলনা।
  • খাবার, জামা-কাপড়, দামি জিনিস বা খেলনা দেওয়ার প্রলোভন দেখানো।
  • দারিদ্র, অঞ্জতা ও কুসংস্কারকে কাজে লাগানো।
  • দরিদ্র অশিক্ষিত কিশোরী ও যুবতীদের ফাঁদে ফেলে।
  • বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহারের মাধ্যমে।

নারী ও শিশু পাচারের কারণ

  • দারিদ্রতা।
  • সমাজে মেয়েদের অবমূল্যায়ন।
  • শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব।
  • উচ্চাকাঙ্খা।
  • জীবিকার অভাব।
  • বহু-বিবাহ।
  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
  • রাজনৈতিক অস্থিরতা।
  • পিতা- মাতার অসাবধানতা ও অসতর্কতা।

নারী ও শিশু পাচারের ফলাফলঃ

  • পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা।
  • যৌন পর্যটনে ব্যবহার করা।
  • ধর্ষণ ও রক্ষিতা হতে বাধ্য করা।
  • যৌন ছায়াছবি বা পত্র-পত্রিকায় নগ্ন মডেল করা।
  • ক্রীতদাস করে রাখা।
  • কলকারখানা ও অসংরক্ষিত খনিতে বা খাদানে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম দিতে বাধ্য করা।

পাচার রুখুতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপঃ

  • নিজের পরিবারের মধ্যে ও প্রতিবেশীর মধ্যে পাচার বিষয়ক আলোচনা করা।
  • নিজেদের, আত্মীয়,  বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে পাচার বিরোধী কাজে অনুপ্রাণিত করা।
  • কোন ব্যক্তি হঠাৎ অন্যত্র ভালো মাইনের কাজ বা বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা যাচাই করা।
  • এলাকায় হঠাৎ কোন সন্দেহজনক ব্যক্তির আনাগনা হলে  নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশনে জানান।
  • আইন প্রয়োগকারী প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, আইনজীবী, ডাক্তার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, ক্লাব, গ্রাম পঞ্চায়েত ও সকলকে নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে এগিয়ে আসা।
  • প্রয়োজনে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • মিডিয়াকে বেশি করে পাচার বিরোধী প্রচার করতে হবে।
  • উদ্ধারকৃত নারী ও শিশুর নিজ পরিবারে প্রত্যাবর্তনে ও পুনর্বাসনের জন্য করতে হবে।

সুত্রঃ Birangana Seba Samity

সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/22/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate