বয়ঃশ্রেষ্ঠ সম্মান : প্রবীণ নাগরিকদের পুরস্কার প্রদানের জাতীয় প্রকল্প
প্রবীণ ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদানের জাতীয় প্রকল্প (বয়ঃশ্রেষ্ঠ সম্মান) ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়। এটি প্রবীণ মনুষদের জন্য উৎসর্গীকৃত। কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের জন্য অর্থ প্রদান করে। প্রখ্যাত প্রবীণ নাগরিক ও যে সব প্রতিষ্ঠান বয়স্কদের স্বার্থে উল্লেখযোগ্য কাজ করে তারা এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়। সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট প্রবীণরা এই প্রকল্পের সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।
আরও তথ্যের জন্য : Vayo shreshths samman
বয়স্কদের জন্য সুসংহত কর্মসূচি
বয়স্কদের জন্য সুসংহত কর্মসূচি
- ভারতে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা ধাপে ধাপে বেড়ে চলেছে। ১৯৫১ সালে প্রবীণ ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৯৮ লক্ষ। ২০০১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৬০ লক্ষে। ২০১৩ সালে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ ব্যক্তির সংখ্যা ১০ কোটি এবং ২০৩০ সালে তা ১৯ কোটি ৮০ লক্ষে দাঁড়াবে বলে হিসাব। ভারতীয় নাগরিকদের আয়ুষ্কাল এখন ৬৩ বছরের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে।
- ভারতীয় সমাজের চিরায়ত প্রথা অনুযায়ী বয়স্কদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের পরম্পরা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ধীরে ধীরে অথচ সুনিশ্চিত ভাবে যৌথ পরিবার উঠে যাচ্ছে। এর ফলে বিরাট সংখ্যক বয়স্ক বাবা-মা পরিবারের অযত্নের শিকার হচ্ছেন। তাঁরা সংবেদনশীল ব্যবহার পাচ্ছেন না, শারীরিক ও আর্থিক সাহায্যের অভাবও অনুভূত হচ্ছে। যথাযথ সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে এই বয়স্ক ব্যক্তিরা বহু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বয়স হওয়াটা একটা বড় সামাজিক চ্যালেঞ্জ। প্রবীণদের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রয়োজন মেটানো অত্যন্ত জরুরি এবং এমন একটি সামাজিক পরিবেশ তৈরি করাও প্রয়োজন যেখানে বয়স্ক ব্যক্তিদের মানসিক নিঃসঙ্গতা দূর করা যায় ও আবেগকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া সম্ভব হয়।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
- এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য হল আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসা, বিনোদনের মতো সাধারণ চাহিদাগুলি মিটিয়ে প্রবীণদের জীবনযাপনের গুণগত মানের উন্নয়ন ঘটানো। বার্ধক্যগ্রস্তকেও উৎপাদনশীল ও সক্রিয় রাখার লক্ষ্যে সরকার/এনজিও/পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠান/স্থানীয় প্রশাসন এবং বৃহত্তর অর্থে সমগ্র গোষ্ঠীর ক্ষমতা বাড়ানোয় মদত দেওয়া।
অভিমুখ
এই প্রকল্পের আওতায় পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠান/স্থানীয় প্রশাসন এবং সক্ষম বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে নিম্নলিখিত বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে ---
- বয়স্কদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর কর্মসূচি, বিশেষ করে ছিন্নমূল বয়স্কদের জন্য খাদ্য, আশ্রয় এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার কর্মসূচি।
- শিশু ও অল্প বয়স্কদের সঙ্গে বয়স্কদের প্রজন্মগত সম্পর্ক তৈরি করা ও মজবুত করার লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচি।
- বার্ধক্যগ্রস্তকে সক্রিয় ও উৎপাদনশীল করার লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচি।
- প্রবীণদের প্রাতিষ্ঠানিক ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক যত্ন/পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচি।
- বার্ধক্যগ্রস্ত হওয়া নিয়ে গবেষণা ও সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচি।
- এবং বয়স্কদের স্বার্থে গৃহীত যে কোনও কর্মসূচি।
রূপায়ণকারী সংস্থা
মন্ত্রকের বেঁধে দেওয়া শর্ত ও নিয়মাবলী মেনে চললে নিম্নলিখিত সংস্থা বা এজেন্সিকে সহায়তা দেওয়া হবে ---
- পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠান/স্থানীয় প্রশাসন
- বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা
- সরকারের প্রতিষ্ঠিত স্বশাসিত বা অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন
- সরকার অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দাতব্য হাসপাতাল/নার্সিং হোম এবং স্বীকৃত যুব সংগঠন যেমন নেহরু যুবক কেন্দ্র সংগঠন (এনওয়াইকেএস)
- বিশেষ ক্ষেত্রে প্রকল্পের আওতায় রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনকে অর্থ সাহায্য করা হবে।
বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যোগ্যতার মাপকাঠি
- বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে অবশ্যই উপযুক্ত আইন মোতাবেক নিবন্ধীকৃত হতে হবে যাতে তাকে কর্পোরেট মর্যাদা প্রদান করা যায়, তার আইনি স্বীকৃতি থাকে এবং কাজকর্মের মধ্যে দিয়ে সংগঠিত দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
- এই সংস্থাকে হয় সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৬০ মোতাবেক নিবন্ধীকৃত হতে হবে নচেৎ সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আইন অনুসারে নিবন্ধীকৃত হতে হবে এবং সংস্থাটিকে অন্তত দু’বছর সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে। কিংবা ওই সংস্থাকে সাময়িক ভাবে প্রচলিত আইন অনুযায়ী পাবলিক ট্রাস্ট হিসাবে নিবন্ধীকৃত হতে হবে বা ১৯৫৮ সালের কোম্পানি আইনের ৫২৫ ধারা অনুযায়ী চ্যারিটেবল কোম্পানি হিসাবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হতে হবে।
- এই সংস্থাকে ন্যূনতম দু’বছরের জন্য নিবন্ধীকৃত হতে হবে। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তর পূর্বাঞ্চল, মরুভূমি অঞ্চল এবং পরিষেবা-বঞ্চিত অঞ্চলে কর্মরত সংস্থাগুলির জন্য দু’বছরের নিয়ম প্রযোজ্য নয়। অন্য উপযুক্ত ক্ষেত্রে বা প্রতিটি ক্ষেত্র আলাদা আলাদা বিবেচনা করে সচিবের (সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন) অনুমোদন ক্রমে দু’বছরের শর্তে ছাড় দেওয়া যেতে পারে।
- সংগঠনটিতে একটি সঠিক ভাবে গঠিত পরিচালন সভা থাকতে হবে। তার ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব পরিষ্কার ভাবে লিখিত সংবিধানে বলা থাকবে। সংস্থাটির একটি সঠিক প্রশাসনিক কাঠামো থাকতে হবে এবং যথাবিহিত নিয়মে তৈরি একটি পরিচালন কমিটি/কার্যনির্বাহী কমিটি থাকতে হবে।
- সংস্থাটি তাদের নিজস্ব সদস্যদের দ্বারা গণতান্ত্রিক ভাবে গঠিত ও পরিচালিত হতে হবে।
- সংস্থার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এবং সেই উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য পূরণে যে কর্মসূচি নেওয়া হবে তা সুনির্দিষ্ট ভাবে লেখা থাকবে।
- কোনও ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির মুনাফার লক্ষ্যে এই সংস্থা পরিচালিত হলে চলবে না। এ ধরনের প্রকল্প চালানোর ব্যাপারে সংস্থার সক্ষমতা রয়েছে, এমন প্রমাণ থাকতে হবে।
আরও তথ্যের জন্য : The Ministry of Social Justice and Empowerment
উৎস : পোর্টাল কন্টেন্ট দল
ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওল্ড এজ পেনশন স্কিম
প্রকল্পটি কী
- ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জারি করা সরকারি মেমোতে (নম্বর জে-১১০১৩\১\২০০৭-এনএসএপি) উল্লিখিত ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওল্ড এজ পেনশন স্কিমের (আইজিএনওএপিএস) মূল নীতি দ্রষ্টব্য। কারা কেন্দ্রীয় সাহায্য পেতে পারেন তার যোগ্যতা নির্ধারক মাপকাঠি ওই মূল নীতিতে বলা হয়েছে। আবেদনকারীর(পুরুষ বা মহিলা) বয়স ৬৫ বা তার বেশি হতে হবে। তাঁকে ভারত সরকারের নির্ধারিত দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
- আইজিএনওএপিএস প্রকল্প অনুযায়ী ভারত সরকার পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স সীমা ৬৫ থেকে নামিয়ে ৬০ বছর করেছে। সাহায্যের পরিমাণও ৮০ বছর বা তার বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করেছে। ২০১১ সালের এপ্রিল মাস থেকে এই পরিশোধিত হার চালু করা হয়েছে।
যোগ্যতা নির্ধারক মাপকাঠি
কেন্দ্রীয় সহযোগিতা পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত শর্ত মানতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
- ভারত সরকারের নির্ধারিত শর্ত অনুযায়ী তাঁকে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারভুক্ত হতে হবে।
সূত্র : Indira Gandhi National Old Age Pension Scheme (IGNOAPS) Issued vide O.M. No.J-11013/1/2007-NSAP
সংশ্লিষ্ট সংযোগ
- ১ Ministry of Social Justice and Empowerment, Government of India
- ২ Silver Innings
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020
0 রেটিং / মূল্যাঙ্কন এবং 0 মন্তব্য
তারকাগুলির ওপর ঘোরান এবং তারপর মূল্যাঙ্কন করতে ক্লিক করুন.
© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.