অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

স্বনির্ভর গোষ্ঠী

স্বনির্ভর গোষ্ঠী

কেন স্বনির্ভর দল

স্বনির্ভর দল গঠন কোনও সরকারি প্রকল্প নয়। এটি হল নিজেদের অল্প অর্থ দল বেঁধে সঞ্চয় করে, নিজেদের ছোট ছোট প্রয়োজনে সেখান থেকে ঋণ নিয়ে আর সুদ সহ শোধ দিয়ে তহবিল বাড়ানোর পথ। ব্য‌াঙ্কের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি করার ও ঋণ পাওয়ার উপায়। নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর পথ। সক্ষমতা তৈরি হলে আর ঋণ পেলে আয় বাড়ানোর মতো জীবিকা তৈরি করা যায়। আয় বাড়লে সক্ষমতা আরও বাড়ে। তখন সমাজের নানা কাজে যুক্ত হওয়া যায়।

কেন দল করতে হবে?

দল করতে হবে। কেননা সব মেয়ের অর্থ, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা আর মতামতকে একত্র করতে পারলে গরিব মানুষ, বিশেষত মেয়েরা, নিজেদের পরিবর্তন নিজেরাই আনতে পারবে। আর সেই সঙ্গে ঘটবে সামাজিক পরিবর্তন। যৌথ উদ্য‌োগে গ্রামেরও উন্নয়ন হবে। গ্রামের উন্নতি হলে নিজেরও উন্নতি হবে।

কাদের নিয়ে হবে স্বনির্ভর দল?

একই পাড়াতে কাছাকাছি বসবাস করে এমন পরিবারের ৫-২০ জনকে নিয়ে ছোট ছোট পাড়াভিত্তিক দল গঠন করা সম্ভব। স্বর্ণজয়ন্তী স্বনির্ভর দল গঠন করতে গেলে অন্তত ১০ জনকে সঙ্গে নিতে হবে। অন্তত ৭ জনকে হতে হবে বিপিএল পরিবারভুক্ত। ৩ জন এপিএল পরিবারের হলেও হতে পারে। স্বনির্ভর দল এপিএল সদস্য‌দের নিয়েও হতে পারে কিন্তু তারা স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা (এসজিএসওয়াই) প্রকল্পের সরকারি সহায়তা তথা রিভলভিং ফান্ড ও তার সঙ্গে সামঞ্জস্য‌পূর্ণ ক্য‌াশ ক্রেডিট বা নগদ ধার পাবে না। ব্য‌াঙ্কের বিশ্বাসযোগ্য‌তা অর্জন করে তারা সরাসরি ঋণ পেতে পারে।

শুধু মেয়েদের নিয়ে বা শুধু ছেলেদের নিয়েই যে দল করতে হবে এমন নয়, মিশ্র দলও হতে পারে।

স্বনির্ভর দলের গঠনে সামাজিক প্রভাব

স্বনির্ভর দল গঠনের ক্ষেত্রে আগে সংখ্য‌ালঘু ও সংখ্য‌াগুরু সম্প্রদায় বা অনগ্রসর শ্রেণি—ইত্য‌াদি ভাগ করা হত,কিন্তু সম্প্রতি মিশ্র প্রকৃতির স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠিত হচ্ছে। এর ফলে সামাজিক সমন্বয়ের গুরূত্ব আরও বাড়ছে।

স্বনির্ভর দলের গঠনে সামাজিক প্রভাব

স্বনির্ভর দল গঠনের ক্ষেত্রে আগে সংখ্য‌ালঘু ও সংখ্য‌াগুরু সম্প্রদায় বা অনগ্রসর শ্রেণি—ইত্য‌াদি ভাগ করা হত,কিন্তু সম্প্রতি মিশ্র প্রকৃতির স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠিত হচ্ছে। এর ফলে সামাজিক সমন্বয়ের গুরূত্ব আরও বাড়ছে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

স্বনির্ভর দল গড়ে কী করতে হবে?

একটি দল গঠন হওয়ার পরে যদি সেটি সঠিক ভাবে চলে অর্থাৎ

  • ১) দলের সদস্য‌রা নিয়মিত বসে নিজেদের মধ্য‌ে আর্থিক ও পারিবারিক বিষয়ে আলোচনা করে;
  • ২) সঠিক সময়ে নিজেদের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে তহবিল গঠন করে;
  • ৩) এবং তা খাতায় প্রস্তাব আকারে লিপিবদ্ধ করে;
  • ৪) পরে তা ব্য‌াঙ্কে জমা দেয়;
  • ৫) নিজেদের প্রয়োজনে ঋণ দেয় ও সুদ সহ ফেরত দেয় ও তা পুনরায় সময়মতো ব্য‌াঙ্কে জমা দেয়;
  • ৬) দু-একটি সামাজিক কাজ করে থাকে

তা হলে ৬ মাস এই ভাবে চলার পর গ্রেড-১ পরীক্ষা হবে। পরীক্ষা করার জন্য‌ ব্লকে স্বনির্ভর দলের মহিলা আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে বলতে হবে ও ব্য‌বস্থা করাতে হবে।

গ্রেড-১ পরীক্ষায় পাশ করলে দল তার যত টাকা সঞ্চয় করেছে তত টাকা সরকারের কাছে রিভলভিং ফান্ড হিসাবে পাবে আর ব্য‌াঙ্কের কাছ থেকে সর্বোচ্চ তার চার গুণ নগদ ক্রেডিট বা ঋণ হিসাবে পাবে। এই ঋণ প্রয়োজনে তোলা যাবে। তুললে প্রতি দিনের সুদ দিতে হবে না। মনে রাখা দরকার ব্য‌াঙ্কে প্রতি দিন সুদ কষা হয়। এক দিন টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করলে সেই দিন সুদ বেড়ে যাবে। সে কারণে টাকা ফেলে না রেখে ফেরত এলেই সেই দিন জমা দিয়ে দিতে হবে। এই নিজস্ব অর্থের সঙ্গে রিভলভিং ফান্ডের টাকা ও ঋণের টাকা মিলিয়ে যে টাকা হবে তাতে অর্থকরী কাজ করে আরও ৬ মাস দলের শ্রীবৃদ্ধি করতে পারলে, নিয়মমতো যে দিন আলোচনা হবে সে দিনই প্রস্তাব লিখে সব হিসাবপত্র ঠিক রাখতে পারলে, সকল সদস্য‌ আলোচনায় অংশগ্রহণ করলে, ব্য‌াঙ্কে গিয়ে আদানপ্রদান করতে পারলে (যত বেশি ব্য‌াঙ্কে যাওয়া যাবে টাকা তোলা ও জমা করা হবে তত ব্য‌াঙ্কের বিশ্বাস জন্মাবে), পারিবারিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারলে, সামাজিক কাজে সাহায্য‌ করলে গ্রেড-২ পরীক্ষার সুযোগ আসবে। এর জন্য‌ যোগ্য‌ হতে হবে। শুধু টাকা দেওয়া-নেওয়া করলে চলবে না।

গ্রেড-২ পাশ করলে ব্য‌াঙ্ক এককালীন কোনও প্রকল্পে বড় ঋণ দেবে এবং সরকার অনুদান দেবে। এর জন্য‌ সকলে মিলে বসে ঠিক করতে হবে কোন প্রকল্প করা হবে। তার প্রশিক্ষণ নিতে হবে বা অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ব্য‌াঙ্ককে বিশ্বাস করাতে হবে যে সেই কাজ করে ঋণ শোধ করার যোগ্য‌তা দলের আছে। প্রকল্প লিখে তৈরি করতে হবে। দলে ৭ জন বিপিএলভুক্ত সদস্য‌ থাকলে ৭০ হাজার টাকা কিংবা মোট প্রকল্প ঋণের অর্ধেক কিংবা ১ লক্ষ ২৫ হাজার-এর মধ্য‌ে যেটি কম, সেই টাকা সরকার অনুদান হিসাবে দেবে। বাকি ব্য‌াঙ্ক ঋণ। এই টাকার ব্য‌বসা করে ফেরত দিতে পারলে, আর্থিক উন্নতি করতে পারলে, পুনরায় বড় ঋণ পাওয়া যাবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

স্বনির্ভর দলের আরও কাজ

সামাজিক কাজের বহু গুরূত্বপূণর্ দায়িত্ব স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে নিতে হয়। যেমন এমএনরেগা সংক্রান্ত কাজ। উপভোক্তাদের মজুরির টাকা তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সদস্য‌রা নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না। মাস্টার রোল মিলিয়ে দেখে টাকা উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব অনেক সময় স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়। তবে দেখে নিতে হয় এই কাজে তারা যথেষ্ট দক্ষ কি না। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার মাপকাঠিই অগ্রগণ্য‌ ভূমিকা নেয়।

গ্রামোন্নয়নে সেই গ্রামের স্বনির্ভর দলের আরও ভূমিকা রয়েছে।

স্বনির্ভর দলের সদস্যরা

  • এলাকার নানা রকম সমস্য‌া নিয়ে নিজেদের মধ্যে এবং সকলের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
  • মেয়েদের নানা কাজকর্ম করতে গিয়ে অসুবিধা হলে সেগুলি নিয়ে নিজেদের মধ্য‌ে আলাপআলোচনা করবেন।
  • খুব গরিব পরিবারের জন্য‌ সরকারের পক্ষ থেকে যে সব সুযোগসুবিধা দেওয়া হয় সেগুলি তাঁরা জানতে চেষ্টা করবেন। সকলে মিলে চেষ্টা করবেন যাতে সেই সব সুযোগ উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।
  • গর্ভবতী মা এবং শিশুদের জন্য‌ সরকারি যে সব পরিষেবা চালু রয়েছে সেগুলি ঠিকমতো চলছে কিনা তা তদারকি করবেন।
  • এলাকার প্রতিটি শিশু (মেয়ে এবং ছেলে) লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে কিনা সে দিকে স্বনির্ভর দলের সদস্যরা লক্ষ রাখবেন এবং বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর উদ্য‌োগ নেবেন।

এ ছাড়াও

  • গ্রাম সংসদের মিটিংয়ে স্বনির্ভর দলের সদস্য‌রা উপস্থিত থাকবেন।
  • মিটিংয়ের সকলের বক্তব্য শুনবেন, নিজেদের মতামত দেবেন এবং কী সিদ্ধান্ত হল জানবেন।
  • গ্রাম উন্নয়ন সমিতিতে স্বনির্ভর দলের যে প্রতিনিধিরা থাকবেন তাঁদের নিজেদের মধ্য‌ে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলবেন।
  • পঞ্চায়েত গ্রামের যে সব উন্নয়নমূলক কাজে হাত দেবে তাতে স্বনির্ভর দলের সদস্য‌রা সক্রিয় ভাবে অংশ নেবেন।
  • গ্রামের সকলের জন্য‌, বিশেষ করে গরিব মেয়েদের যাতে সুযোগ সুবিধা পেতে সুবিধা হয় তার জন্য‌ পঞ্চায়েতকে নানা উদ্য‌োগ নিতে উৎসাহ দেবেন স্বনির্ভর দলের সদস্যর এবং পঞ্চায়েতের সঙ্গে সব সময় সহযোগিতা করা চলবেন।

সামাজিক কাজের বহু গুরূত্বপূণর্ দায়িত্ব স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে নিতে হয়। যেমন এমএনরেগা সংক্রান্ত কাজ। উপভোক্তাদের মজুরির টাকা তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সদস্য‌রা নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না। মাস্টার রোল মিলিয়ে দেখে টাকা উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব অনেক সময় স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়। তবে দেখে নিতে হয় এই কাজে তারা যথেষ্ট দক্ষ কি না। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার মাপকাঠিই অগ্রগণ্য‌ ভূমিকা নেয়।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

দল কী ভাবে চলবে?

১। দলের সদস্য‌রা প্রতি সপ্তাহে অথবা প্রতি ১৫ দিন অন্তর অথবা প্রতি মাসে এক বার অবশ্য‌ই নিয়ম করে মিটিং করবেন।

২। দল শুরুর সময় থেকেই দলের নিয়মকানুন ঠিক করে নেবেন।

৩। সদস্য‌রা সকলে সেই নিয়ম মানবেন, অন্য‌দের মেনে চলতে বলবেন।

৪। দলের সদস্যদের মধ্য‌ে থেকেই এক জনকে তাঁরা দলনেতা, অন্য‌ এক জনকে সহ-দলনেতা ঠিক করবেন।

৫। দলের হয়ে দলনেতা সকলের মত নিয়ে কাজকর্ম করতে দলকে সাহায্য‌ করবেন। কিন্তু তিনি একাই সব ঠিক করবেন বা হিসাব রাখবেন এ রকম যেন না হয়। সকলেই যেন সব জানতে পারেন ও সকল বিষয়ে মতামত দিতে পারেন। সকলের সক্ষমতা বাড়ানোই উদ্দেশ্য‌। নেতা বা নেত্রীর একার নয়।

৬। কিছু দিন তিনি দলনেতা থাকার পর অন্য‌ আরেক জন দলনেতা হতে পারেন। কে হবেন তা দলই ঠিক করবে। এই পরিবর্তন একান্তই দরকার। না হলে ঘাড়ে সব দায়িত্ব চাপালে বা এক জনের হাতে সব ক্ষমতা চলে গেলে দল হিসাবে কাজ করা সম্ভব হবে না। মনোমালিন্য‌ হবে।

৭। হিসাবপত্র মিটিংয়ে বসে লেখা হবে।

৮। টাকা জমা দেওয়া-নেওয়ার হিসাব মিটিংয়ে পড়ে শোনানো দরকার। সকলের সামনে টাকা দেওয়া দরকার ও তা তৎক্ষণাৎ লিখে ফেলা দরকার। না হলে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হতে পারে।

৯। প্র্ত্য‌েক দলের নামে কাছাকাছি কোনও ব্য‌াঙ্কে বা সমবায়ে পাসবই খুলে নেওয়া দরকার।

১০। সকল সদস্য‌ই মাঝেমাঝে দলনেতার সঙ্গে গিয়ে ব্য‌াঙ্কের লেনদেনে সাহায্য‌ করবেন।

১১। প্রত্য‌েক সদস্য‌ের নামে হাত বই রাখবেন।

১২। প্রতিটি মিটিংয়ে যা আলোচনা হল তা লিখে ফেলতে হবে।

১৩। সদস্য‌দের মধ্য‌ে থেকেই কেউ লিখবেন। না পারলে পাড়ার কোনও মেয়ে অথবা ছেলেকে দিয়ে লেখাতে পারেন।

১৪। দলের মিটিংয়ে সরকারি দফতরের কর্মীদের আসতে অনুরোধ করতে পারেন। তাঁদের কাছ থেকে খোঁজখবর জেনে নেবেন।

অন্য‌ দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন, দলগুলি পরস্পরকে সাহায্য‌ করবে, দরকার হলে সকলে মিলে কোনও উন্নয়নমূলক কাজে হাত দেবেন। সামাজিক কাজে স্বনির্ভর দলগুলির ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্য‌েই বিভিন্ন স্তরে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি জীবিকার সঙ্গে ক্ষমতায়নের সম্পর্ক বোঝার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য‌ ভূমিকা গ্রহণ করতে সক্ষম। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি তারা মানসিক স্বনির্ভরতার প্রস্তুতিও গ্রহণ করবে।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

সরকারি কর্মসূচিতে স্বনির্ভর দলের জন্য‌ বিশেষ ব্য‌বস্থা

মিড ডে মিল

সাধারণত স্কুল কর্তৃপক্ষকেই মিড ডে মিল তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।আবার অনেক ক্ষেত্রে মিড ডে মিল তৈরি করার দায়িত্ব স্বনিযুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত গ্রুপগুলিকেও দেওয়া হয়ে থাকে। তারা একটি বা একাধিক স্কুলে মিড ডে মিল পরিবেশনের দায়িত্ব নেন। কখনও স্কুলের চৌহদ্দির মধ্য‌েই রান্না করার ব্য‌বস্থা করা হয় আবার কখনও বা কোনও কিউনিটি কিচেনে রান্না করে স্বনিযুক্তি প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত মহিলারা স্কুলে স্কুলে তা পৌঁছে দিয়ে আসেন। মিড ডে মিল প্রকল্পে সামাজিক ব্য‌বধান দূর করারও অনেক ব্য‌বস্থা রয়েছে। যেমন এমন কোনও রন্ধনকারীকে বা পাচককে কাজে লাগানো হল যে হয়তো তথাকথিত নীচু জাতির প্রতিনিধি।

  • স্বনির্ভর দলগুলির উন্নয়নে গ্রাম পঞ্চায়েতকে ১৫ শতাংশ শর্তহীন তহবিলের টাকা ব্য‌বহার করার নির্দেশ দেওয়া আছে সরকারের।
  • স্কুলে স্কুলে মিড ডে মিলের রান্নার কাজে সেই এলাকার স্বনির্ভর দলের সদস্য‌দের যাতে যুক্ত করা হয় তার জন্য সরকারের তরফে পরামর্শ দেওয়া আছে।
  • ১০০ দিনের কাজে স্বনির্ভর দলকে পে মাস্টার ও সুপারভাইজার হিসাবে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। অবশ্য‌ তার জন্য‌ স্বনির্ভর দলের সদস্যদের যোগ্য‌ হতে হবে।
  • ১০০ দিনের কাজে বৃক্ষরোপণ ও চারা তৈরিতে স্বনির্ভর দলকে যুক্ত করা হয়েছে।
  • ‘জনউদ্য‌োগে জনস্বাস্থ্য‌’ কর্মসূচিতে স্বনির্ভর দলকে যুক্ত করার জন্য‌ সরকারের তরফে পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া আছে।

স্বনির্ভর দলের সহায়তায় স্বনির্ভর দল (পঞ্চায়েত সম্পদকর্মী)

উদ্দেশ্য‌

নিয়মিত তদারকির মাধ্য‌মে স্বনির্ভর দলগুলিকে শক্তিশালী করা।

কারা হবেন

স্বনির্ভর দলের নেতা বা নেত্রী।

ক’জন থাকবেন?

প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’জন করে

কাজ
  • ১) প্রতিটি দলের সঙ্গে মাসে এক বার গ্রাম বা সংসদের বসা এবং তাদের সমস্য‌াগুলি তুলে আনা যাতে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে তার জন্য‌ ব্য‌বস্থা নেওয়া যায়।
  • ২) স্বনির্ভর দলের তথ্য‌ সংগ্রহ করা এবং রেজিস্টার হালনাগাদ করা।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

স্বনির্ভর দলের সঙ্ঘ ও উপসঙ্ঘ

স্বনির্ভরদলগুলি যাতে অন্য‌ের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেরাই কাজ করতে পারে তার জন্য‌ কেন্দ্রীয় সরকার নানা ধরনের প্রস্তাব উপস্থিত করেছে। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী রাজ্য‌ সরকার কাজ করার উপযোগী মডেল তৈরি করেছে। যার মূল কথা হল কোনও ভাবেই এই দলগুলি যেন সম্পূর্ণত সরকার বা অন্য‌ কোনও সংস্থার মুখাপেক্ষী হয়ে না থাকে। নিজেদের সমস্য‌ার সমাধানে তারা যেন এগিয়ে এসে নিজেরাই কাজ করতে পারে। এর জন্য‌ দলগুলির মধ্য‌ে সমন্বয় সাধান করার প্রয়োজন। দলগুলি যদি নিজেদের মধ্য‌ে আলোচনার সুযোগ পায় তা হলে অনেক সমস্য‌ার সমাধান খুঁজে বের করা যেতে পারে।

উপসঙ্ঘ

উপসঙ্ঘ হল গ্রাম সংসদ স্তরে গড়ে ওঠা স্বনির্ভর দলগুলির একটি সংগঠন যার মাধ্য‌মে ওই দলগুলি নিজেদের সমস্য‌া নিজেরাই চিহ্নিত করবে এবং যৌথ ভাবে সেই সমস্য‌া সমাধানের পথ খুঁজে বের করবে।

যে হেতু দরিদ্র পরিবারের সদস্য‌দের সশক্তিকরণের উদ্দেশ্য‌েই উপসঙ্ঘ ও সঙ্ঘ গঠনের কথা ভাবা হয়েছে, তাই বিপিএল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত পরিবারের সদস্য‌রাই উপসঙ্ঘের পদাধিকারী হিসাবে নির্বাচিত হলে ভালো হয়।

প্রতি এক বছর অন্তর পদাধিকারী পরিবর্তন করা যেতে পারে।

সঙ্ঘ

গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সকল উপসঙ্ঘগুলিকেই একই ছত্রছায়ায় এনে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে যে স্বনির্ভর দলের সংগঠন তৈরি হয় তারই নাম সঙ্ঘ।

সঙ্ঘ বা ক্লাস্টার হল গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে গড়ে ওঠা স্বনির্ভর দলের একটি সংগঠন যার মাধ্য‌মে স্বনির্ভর দলগুলি পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের সমস্য‌া নিজেরাই সমাধানের জন্য‌ উদ্য‌োগ নিতে পারে এবং রোজগার বাড়ানো, সামাজিক উন্নতি প্রভৃতি কাজেও বড় আকারে অংশ নিতে পারে।

সঙ্ঘের গঠন

  • ক) সাধারণ পরিষদ
  • সঙ্ঘে যোগদানকারী প্রতিটি উপসঙ্ঘের দু’জন প্রতিনিধি অর্থাৎ সভানেত্রী ও সম্পাদিকাদের নিয়ে গঠিত হবে সঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ।

    সাধারণ পরিষদের মিটিং মাসে এক বার করে করতে হবে।

  • খ) পরিচালন সমিতি
  • সাধারণ পরিষদ তাদের সদস্য‌দের মধ্য‌ে থেকে পাঁচজন পদাধিকারী অর্থাৎ সভানেত্রী, সম্পাদিকা, সহ-সভানেত্রী, সহ-সম্পাদিকা ও কোষাধ্য‌ক্ষ নির্বাচিত করবেন। এঁরাই হবেন পরিচালন সমিতির নির্বাচিত সদস্য‌া। সাধারণ পরিষদের মতামত নিয়ে এঁরা সঙ্ঘ পরিচালনা করবেন।

    পরিচালন সমিতির মিটিং মাসে কমপক্ষে দু’বার করতে হবে।

    সঙ্ঘ উপসঙ্ঘের মাধ্য‌মে নিম্নলিখিত ভাবে দল তদারকির কাজ করবে-

    • ১) দলের সদস্যদের বিষয়ে কিছু প্রাথমিক তথ্য‌ যেমন পরিবারের সদস্য‌ সংখ্য‌া (বিশেষত শিশু ও মায়েদের তথ্য‌), প্রতিবন্ধী/অসহায় ব্য‌ক্তি আছেন কিনা, জীবিকার বিবরণ, সম্পদ এবং দলভিত্তিক কিছু তথ্য‌ যেমন, সঞ্চয়, ঋণ, উপকৃত সদস্য‌ সংখ্য‌া ইত্য‌াদি উপসঙ্ঘ থেকে সংগ্রহ করবে। ‘সংস্থা থেকে সংসদ’ উদ্য‌োগে এই তথ্য‌ সংগৃহীত হবে ও সেই তথ্য‌ সঙ্ঘে নিজেদের কাছে থাকবে।
    • ২) দলগুলি ঠিকমতো সঞ্চয় করছে কিনা ও সঞ্চয়ের টাকা ঠিকমতো ব্য‌বহার করতে পারছে কিনা।
    • ৩) দলের খাতাপত্র ঠিকমতো রাখা হচ্ছে কিনা।
    • ৪) ধার নিলে সময়মতো ধার শোধ হচ্ছে কিনা।

সুত্রঃ পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ, কল্যাণী, নদিয়া

সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/1/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate