অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

মসুরের রোগ নিয়ন্ত্রণ

ঢলে পড়া/গোড়া ও শিকড় পচাঁ/স্ক্লেরোশিয়াম রট (Wilt/Foot and Root rot/Sclerotium rot) রোগ

রোগের কারণ

ফিউজারিয়াম অক্সিসপোরাম ( Fusarium oxysporum), ফিউজারিয়াম ছোলানি ( F. solani) এবং স্ক্লেরোশিয়াম রফ্সাই (Sclerotium rolfsii) নামক ছত্রাকের আক্রমণ এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তার

ছত্রাক গুলো প্রধানত মাটি বাহিত এবং অন্যান্য শস্য আক্রমণ করে। মাটিতে জৈব সার বেশী থাকলে এবং জমিতে ধানের খড়কুটা থাকলে জীবানুর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পায়। সাধারণত মাটির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে (২৮ - ৩০ ডিগ্রী সেঃ) ও যথেষ্ট পরিমাণ আর্দ্রতা থাকলে এ রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। পানি সেচের মাধ্যমে আক্রান্ত ফসলের জমি হতে সুস্থ ফসলের মাঠে বিস্তার লাভ করে।

রোগের লক্ষণ

  • সাধারণত চারা গাছ এ রোগে আক্রান্ত হয়, তবে বড় গাছেও হতে পারে।
  • মাটি বরাবর গাছের গোড়ায় ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং গোড়া সহ শিকড় পচেঁ যায়।
  • গাছের অগ্রভাগের পাতা হলুদ হয়ে যায়, পরে সমস্ত গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
  • হলুদ চারাগুলো শুকিয়ে মারা যায়।
  • গাছ টান দিলে উপরের অংশ ছিড়ে আসে ও শিকড় মাটির নীচে থাকে।
  • বড় গাছ আক্রান্ত হলে পাতা ঢলে পড়ে।
  • স্ক্লেরোশিয়াম রফ্সাই দ্বারা দ্বারা আক্রান্ত গাছের গোড়ায় তুলার মত সাদা মাইসেলিয়া ও ছোট ছোট স্ক্লেরোশিয়াম দেখা যায়।
  • ফিউজারিয়াম-এর ক্ষেত্রে গাছের কান্ড লম্বালম্বিভাবে ফাটালে ভিতরের অংশ কালো দেখায়।

চিত্র: মসুরের ঢলে পড়া/গোড়া ও শিকড় পচাঁ/স্ক্লেরোশিয়াম রট রোগের লক্ষণ

রোগের প্রতিকার

  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
  • জৈবিক দমনের ক্ষেত্রে ট্রাইকোডারমা বা রাইজোবিয়াম জীবানু সার দ্বারা বীজ শোধন করতে হবে।
  • ফসল সংগ্রহের পর পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  • আক্রান্ত জমিতে কয়েক বৎসরের জন্য শস্য পরিক্রমা অনুসরণ করতে হবে।
  • রোগ সহনশীল জাত যেমন-বারি ছোলা ৬, ৭, ৮ ও ৯ চাষ করতে হবে ।
  • অর্ধকাচা মুরগির বিষ্ঠা হেক্টর প্রতি ৫ টন হারে বীজ বপনের ২-৩ সপ্তাহ আগে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
  • ফসলের গোড়ার চতুর্দিকের পৃষ্ঠের মাটি নেড়ে শুষ্ক করে দিলে এ রোগ অনেকাংশে দমন হয়।
  • রোগাক্রান্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে।
  • রোগ দেখা মাত্র কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর গাছের গোড়ায় মাটিতে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

স্টেমফাইলিয়াম ব্লাইট (Stemphylium blight) রোগ

রোগের কারণ

স্টেমফাইলিয়াম বোট্রাওসাম (Stemphylium botryosum) ও স্টেমফাইলিয়াম সারসিনিফরমিস (Stemphylium sarciniformis) নামক ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তার

জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে রোগের প্রকোপ বেশী দেখা যায়। বীজ, বিকল্প পোষক, বায়ু প্রভৃতির মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। রাত্রের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি ও দিনের তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, গাছের ভিতরে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৯৪% বা বেশী এবং কুয়াচ্ছন্ন বা মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে রোগের বিস্তার ও তীব্রতা বেড়ে যায়।

রোগের লক্ষণ

  • এ রোগ গাছের মধ্যম বয়স অর্থাৎ ফুল আসার সময় থেকে শুরু হয়।
  • প্রথমে পাতায় হালকা বাদামী ছোট দাগ দেখা যায় ও পরে দাগগুলো আকারে বড় হয়।
  • পরবর্তীতে পুরো গাছ ঝলসে গেছে বলে মনে হয়।
  • আক্রমনের মাত্রা বেশি হলে পুরো মাঠ ঝলসানো রং ধারণ করে।
  • আক্রমনের শেষ পর্যায়ে গাছ বাদামী থেকে কালো রং ধারণ করে ও নুইয়ে পড়া রোগ আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হয়।

চিত্র: মসুরের স্টেমফাইলিয়াম ব্লাইট রোগের লক্ষণ

রোগের প্রতিকার

  • রোগ সহনশীল জাত যেমন- বারি মসুর ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ চাষ করতে হবে।
  • আক্রান্ত জমিতে কয়েক বৎসরের জন্য শস্য পরিক্রমা অনুসরণ করতে হবে।
  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
  • সুষম সার ব্যবহার ও সময়মত সেচ প্রয়োগ করতে হবে।
  • দেখা দেয়ার সাথে সাথে ইপ্রোডিয়ন (যেমন-রোভরাল ৫০ ডব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম অথবা ফেনামিডন + মেনকোজেব (যেমন-সিকিউর ৬০০ ডব্লিউজি) প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

মরিচা রোগ (Rust) রোগ

রোগের কারণ

ইউরোমাইসিস ভিসিয়া-ফেবেই (Uromyces vicia-fabae) নামক ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তার

মধ্য জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাসে রোগের প্রকোপ বেশী দেখা যায়। আক্রান্ত বীজ, বিকল্প পোষক ও বাতাসের মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে থাকে। উচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা হলে, কুয়াচ্ছন্ন বা মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া এবং তাপমাত্রা ১৬-২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হলে রোগের তীব্রতা বেড়ে যায়।

রোগের লক্ষণ

  • এ রোগ গাছের মধ্যম বয়স অর্থাৎ ফুল আসার সময় থেকে শুরু হয়।
  • প্রথমে পাতায় মরিচা রংয়ের ছোট ছোট ফোস্কা পড়া দাগ দেখা যায়।
  • পরবর্তীতে দাগগুলো গাঢ় বাদামী বা কাল রং ধারণ করে।
  • কান্ড বা ফলেও এমন লক্ষন দেখা যায়।
  • আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে পাতা ঝরে যায় এবং ফল পাকার পূর্বেই গাছগুলো শুকিয়ে যায়।

চিত্র: মসুরের মরিচা রোগের লক্ষণ

রোগের প্রতিকার

  • রোগ সহনশীল জাত যেমন- বারি মসুর ৫, ৬, ৭ ও ৮ চাষ করতে হবে।
  • কার্বেন্ডাজিম (যেমন-অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (যেমন-প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি) প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
  • আগাম অর্থাৎ নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বীজ বপন করতে হবে।
  • ফসল সংগ্রহের পর পরিত্যক্ত অংশ পুড়ে ফেলতে হবে।
  • জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া এবং জৈবসার প্রয়োগ না করা।
  • প্রোপিকোনাজোল (যেমন-টিল্ট ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা টেবুকোনাজল (যেমন-ফলিকুর ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।

সূত্র ও লেখকঃ বিজ্ঞানী ড. কে. এম. খালেকুজ্জামান

সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/6/2024



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate