অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

কীটনাশকে হারাচ্ছে নয়ানজুলির জীব বৈচিত্র্য

কীটনাশকে হারাচ্ছে নয়ানজুলির জীব বৈচিত্র্য

নির্বিচার চাষ এবং কীটনাশকের অতিব্যবহারে নষ্ট হচ্ছে রেল লাইন এবং হাইওয়ে লাগোয়া নয়ানজুলিগুলির জীব বৈচিত্র্য। অবিলম্বে এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে অদূর ভবিষ্যতেই একাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ এবং প্রাণী অবলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকৃতি বিজ্ঞানীদের। জীব বৈচিত্র্য আইন মেনে ব্লক এবং পুরসভা স্তরে ব্যবস্থাপনা কমিটি তৈরির কাজ চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ জীব বৈচিত্র্য পর্ষদ। সেই কমিটিগুলিই স্থানীয় স্তরে জীব বৈচিত্র্য সংক্রান্ত নথি তৈরির কাজ চালাচ্ছে। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সে কাজ করতে গিয়েই ক্রমশ সামনে আসছে এই প্রবণতাগুলি। নানা প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদের ক্রমঅবলুপ্তির অন্যতম একটি কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে ভূ-প্রাকৃতিক এই পরিবর্তনগুলি। যা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন পর্ষদের বিজ্ঞানীরা। জীব বৈচিত্র্যের দিক থেকে কেন গুরুত্বপূর্ণ এই নয়ানজুলিগুলি? রেল লাইন এবং হাইওয়ের ধারের এই নয়ানজুলিগুলিতে জন্মায় ফুল শোলা, হোগলা, নলখাগড়া, পানিফল, পদ্ম, শাপলার মতো উদ্ভিদ। সেখানেই জন্মায় পানি কলা, পান শিউলি, পাতা শ্যাওলা, হাইড্রিলার মতো বেশ কিছু প্রজাতির জলজ উদ্ভিদও। শুধু তাই নয়, হিংচে, কুলেখাড়া, ব্রাহ্মী, গিমে শাক, থানকুনির মতো বেশ কিছু ভেষজ উদ্ভিদও জন্মায় ওই নয়ানজুলির জলে কিংবা তার আশপাশের এলাকায়। পশ্চিমবঙ্গ জীব বৈচিত্র্য পর্ষদের বিজ্ঞানী ড. অনির্বাণ রায় জানান, এ ছাড়াও ওই নয়ানজুলিগুলিতে থাকে মিঠে জলের দেশি মাছের বিরাট এক সম্ভার। কারণ, শাল, ল্যাটা, চ্যাং, পুঁটি, ট্যাংরা, খোলসের মতো বেশ কিছু দেশি মাছ মেলে এই নয়ানজুলির জলে। বর্ষাকালে মাছের বাচ্চা জন্মানোর পর প্রথম অবস্থায় সেগুলি থাকে জলভর্তি ধান খেতে, মাঠে। তবে যখন মাঠের জল শুকিয়ে যায়, তখন সেই মাছগুলি আশ্রয় নেয় হয় মাঠের পাশের নয়ানজুলি কিংবা পুকুরে।

প্রাণধারণের মাধ্যম সেই নয়ানজুলিগুলিতে ক্রমশই বেড়ে চলেছে ধানের চাষ। আর তাতেই বিপদের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাতে এক দিকে যেমন জীব বৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই বিরাট ক্ষতি হচ্ছে জিনগত বৈচিত্র্যেরও। এই নয়ানজুলিগুলি সরকারেরই জমি। তা রেল মন্ত্রক অথবা রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও দপ্তরের অধীনে। সরকারের জমি হলেও, ওই জমিতে ধান চাষ করেই আয় করছেন বেশ কিছু মানুষ। তবে সেই চাষের জন্য আয়ের সুযোগ হারাচ্ছেন আরও বেশ কিছু মানুষ। কারণ, চাষের সময় নয়ানজুলিগুলিকে সাফ করেই ধান চাষ হচ্ছে। আর তাতেই হারিয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু প্রজাতির জীব। যা বেশ কিছু মানুষের আয়ের উত্স। যেমন, ফুল শোলা থেকে তৈরি হয় ডাকের সাজের গয়না, শোলার নানা অলঙ্কার, হোগলা থেকে তৈরি হয় চাটাই। পাশাপাশি নয়ানজুলিতে জন্মানো বিভিন্ন ধরনের শাক-পাতা, মাছ, ফুল বিক্রি করেও সংসার চালান বহু মানুষ। তাই এই নয়ানজুলিগুলির চরিত্র নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন শুধু যে জীব বা জিন বৈচিত্র্যই নষ্ট হচ্ছে তা নয়, আয়ের সে পথ বন্ধ হওয়ায় ভিন্ন কোনও কাজের সন্ধান করতে হচ্ছে বেশ কিছু মানুষকে। যাঁদের প্রকৃতি বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘বায়োডাইভার্সিটি রিফিউজি’। এই পরিস্থিতিতে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের তরফেও ওই জমিগুলির চরিত্র বজায় রাখার ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র : কৌশিক সরকার, এই সময়, ১২ মার্চ ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/23/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate