কোনও কোনও স্কুলে শৌচাগার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শৌচাগার ব্যবহার করার প্রবণতা নেই। এর জন্য অনেকে সেই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন।
পুরুলিয়ার গোপালগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মদনমোহন মণ্ডলের লেখা অনুযায়ী :
‘বিদ্যালয়ে শৌচাগার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা সর্বত্র করা হলেও শৌচাগার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি সফল হতে পারিনি। তার প্রধান কারণ আমি মনে করেছি যে সামাজিক ও আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ে থাকার কারণে অধিকাংশ বাড়িতে শৌচালয় নেই। ফলে বাইরে বা মাঠে যাওয়ার অভ্যাস বিদ্যালয়েও প্রতিফলিত হয়। কাজেই সামাজিক চেতনা সৃষ্টি করা না হলে এবং সেই অঞ্চলের আর্থিক দিকটার প্রতিবিধান না করা হলে শৌচাগার ব্যবহার না করার সমস্যা সমধান করা কষ্টসাধ্য।’
সুতরাং শুধুমাত্র শৌচাগার তৈরি করাই নয় তা ব্যবহার করার অভ্যাসও শিশুদের মধ্যে তৈরি করা নিতান্ত প্রয়োজনীয়। অবশ্যই এই কাজে শিক্ষকদেরই একটা অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। শৌচালয়ের ব্যবহার যে শিক্ষারই অঙ্গ এ বিষয়টা শিক্ষকের চেয়ে ভালো আর কে বুঝবে?
শুধু শৌচাগারই নয়, পাশাপাশি বিদ্যালয়ে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকাও আবশ্যক। একটি শিশুর সুস্থ থাকা কিন্তু অনেকাংশেই নির্ভর করে নিয়মিত পরিশ্রুত জল পানের ওপর। এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানকার জল একেবারেই পরিশ্রুত নয়। সেই জল তারা নিয়মিত পান করে চলেছে। বিনামূল্যে বাধ্যতামূলক শিক্ষার আইন অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে পরিশ্রুত এবং পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যিক। মোট ৩৪৮ জন শিক্ষকের মধ্যে ৫.৫ শতাংশ শিক্ষক বিদ্যালয়ে পানীয় জলের সমস্যা প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। সুতরাং এ থেকে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়াই যায় যে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিতে পানীয় জলের সরবরাহের সমস্যা কমেছে। এ প্রসঙ্গে মতামত দেওয়া শিক্ষকের মধ্যে ৪২ শতাংশ শিক্ষক বলেছেন যে তাঁদের বিদ্যালয়ে পানীয় জলের সরবরাহ রয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষক এ কথাও বলেছেন যে সরবরাহিত জল অনেকাংশে গ্রহণযোগ্য নয়।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/20/2020