এ ব্যাপারে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলির মধ্যে বৈষম্যের কথা তুলে ধরেছেন দেওখণ্ড এফ পি বিদ্যালয়ের রামকমল ঘোষ। রামকমলবাবু বলেছেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলির সূচনাকাল প্রায় একই সময়ে। কিন্তু একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে, তারা পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো পাচ্ছে, ফ্যানের হাওয়ায় পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছে, ভালো ভাবে বসার জন্য পাচ্ছে পর্যাপ্ত বেঞ্চ। কিন্তু বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কী দশা! সেই সব বিদ্যালয়ে এখনও শিশুগুলি আলোপাখাহীন অবস্থায় দারুণ গরমের মধ্যে মাটিতেই শিক্ষককে ঘিরে বসে শিক্ষা গ্রহণ করে চলেছে। পুরুলিয়া গোপালগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মদনমোহন মণ্ডলের লেখা থেকে এই সংক্রান্ত বিশয়ে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে। উনি বলেছেন যে বিদ্যালয়ে যে দিন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে সে দিন শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার অনেক বৃদ্ধি পায়।
উল্লেখযোগ্য ভাবে ৭৫ শতাংশ শিক্ষক তাঁদের লেখায় জানিয়েছেন যে তাঁদের বিদ্যালয়ে বসার জন্য বেঞ্চটুকু পর্যন্ত নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষকদের মাটিতে শিশুগুলিকে বসিয়ে শিক্ষাদান করতে হয়। এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার গোপালগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মদনমোহন মণ্ডল বলেছেন যে সব বিদ্যালয়ে ডেস্ক, বেঞ্চ-এর ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। এবং উনি সক্রিয় ভাবে দু’টি শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চের ব্যবস্থা করে দেওয়ার পরে তাঁদের বিদ্যালয়ে ছাত্র উপস্থিতির হার কিন্তু বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবার মালদার চিকহরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেবদুলাল বিশ্বাসের লেখা সত্যই নাড়া দিয়ে যায়। উনি বলেছেন :
আর একটি সমস্যার কথা বলি --- আমরা শিক্ষক, আমরা ছাত্রছাত্রীদের সামনে চেয়ারে পা দুলিয়ে বসি আর আমাদের সামনে টেবিল থাকে। অথচ যাদের জন্য শিক্ষকতা করি, অন্ন, বস্ত্র আর বাসস্থানের সুখ ভোগ করি তারা কিন্তু আমাদের পায়ের কাছে বসে থাকে। বিদ্যালয়ে বাচ্চাদের মিড ডে মিল খেতে হয় চটের ওপর বসে। তাদের জন্য যদি বেঞ্চ এবং হাই বেঞ্চের ব্যবস্থা করা হয় তা হলে অনেক ভালো হয়।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 9/19/2019