একটি বিদ্যালয়ে শৌচালয় থাকা বাধ্যতামূলক। বিনা ব্যয়ে বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক পৃথক শৌচালয়ের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু আসল ছবিটা কী, বাস্তবে শিক্ষার অধিকার আইনের কতটা কার্যকর হয়েছে শিক্ষকদের লেখাগুলি থেকেই তা অনেকাংশে স্পষ্ট হয়ে যায়। ৩৪৮ জন শিক্ষকের লেখার মধ্যে প্রায় ১৯ জন শিক্ষক শৌচালয় বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এঁদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যক শিক্ষকই বলেছেন যে, তাঁদের বিদ্যালয়ে ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা শৌচালয়ের ব্যবস্থা আছে। এবং এ কথাও ভীষণ সত্য যে মেয়েদের জন্য একটি পৃথক শৌচালয় থাকা ভীষণ জরুরি। ২০১০ – ২০১১ সালে পশ্চিমবাংলার চিত্র অনুযায়ী ৫৯ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বালিকাদের জন্য পৃথক কোনও শৌচালয়ের ব্যবস্থা ছিল না। এমনকী শিক্ষকদের লেখাতেও খুব কম সংখ্যক শিক্ষকই বালিকাদের শৌচালয়ের ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। শিক্ষার পাশাপাশি শিশুগুলির সুস্বাস্থ্য থাকাটা একই রকম ভাবে জরুরি। এবং তার জন্য বিজ্ঞানসম্মত কিছু পদ্ধতি মেনে চলা দরকার। যেমন বিদ্যালয়ে বালক ও বালিকা উভয়ের জন্য পৃথক শৌচালয় থাকা দরকার। কিন্তু আলাদা আলাদা শৌচাগার তো দূরের কথা কিছু বিদ্যালয় এমনও রয়েছে যেখানে কোনও প্রকার শৌচালয়ই নেই। সর্ব শিক্ষা অভিযানের স্টেট রিপোর্ট কার্ড অনুযায়ী ৭০ শতাংশ বিদ্যালয়ে সাধারণ শৌচাগার রয়েছে এবং মাত্র ২৮ শতাংশ বিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচাগার বর্তমান। যে সব শিক্ষক শৌচালয় প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন তাঁদের মধ্যে ৩২ শতাংশ শিক্ষক বলেছেন যে তাঁদের বিদ্যালয়ে একটি সাধারণ শৌচাগার আছে। যদিও তাঁদের মধ্যে কয়েক জন এমন কথাও বলেছেন, যে শৌচাগার বিদ্যালয়ে রয়েছে তা খাতায় কলমে, কারণ এক কথায় তা ব্যবহারের অযোগ্য। আবার কিছু শিক্ষকের মত অনুযায়ী, বিদ্যালয়ে শৌচাগারের ব্যবস্থা করেও বিশেষ কিছু লাভ হচ্ছে না কারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শৌচালয় ব্যবহার করার প্রবণতা খুব কম। তাদের সে অভ্যাসই গড়ে ওঠেনি।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/26/2020