বিদ্যালয় পরিকাঠামোর সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল শিক্ষক। একটি বড় বিদ্যালয় গৃহ, খেলার মাঠ না থাকলেও বিদ্যালয় চালিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষক অপ্রতুলতা একটি ঘোরতর সমস্যা। যদিও বিনামূল্যে বাধ্যতামূলক শিক্ষার আইন অনুযায়ী ছাত্র শিক্ষক অনুপাত হওয়া উচিত ৩০ : ১, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই নিয়ম মানা সম্ভব হয়নি। ৩৪৮ জন শিক্ষকের লেখা থেকে দেখা যাচ্ছে যে কেবল ৪৩ শতাংশ শিক্ষকের বিদ্যালয়েই এই অনুপাত বজায় আছে — অন্যগুলিতে এটি অনেক বেশি। একটি বিষয় স্পষ্ট যে আইন অনুযায়ী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের অনুপাত এখনও বিদ্যালয়ে ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষক অপ্রতুলতা শুধুমাত্র শিক্ষার্থী ও শিক্ষক অনুপাতেই নয়। শিক্ষকদের লেখা থেকে দেখা গেছে অনেক ক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষ অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যাও সঠিক নয়। এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ির ধুলারাম নিন্মবুনিয়াদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রদীপ কুমার রায় একটি মূল্যবান মন্তব্য করেছেন। তিনি লিখেছেন :
‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের বড় প্রতিবন্ধকতা শিক্ষক অপ্রতুলতা। আমার বিদ্যালয়ে বিগত দুই বছরে তিনশত ছাত্রছাত্রীকে আমরা দু’জন শিক্ষক দিয়ে চালিয়ে দিলাম। পাঁচটি ক্লাস অথচ শিক্ষক দুই জন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাদান কী ভাবে সম্ভব তা মাথায় ঢোকে না। যদিও Pedagogical System-এ বড় দল ছোট দলের কাজ দিয়ে ঠেকা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সব সময় এই ব্যবস্থা প্রয়োগ করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে চালু রাখা সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো এবং work out-এর কাজ করিয়েছি। এই সমস্যাগুলি সমাধানে নুতন শিক্ষক নিয়োগ জরুরি। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ সঠিক ভাবে করা হয় না। ছাত্র/শিক্ষক অনুপাতে যে বিদ্যালয়ে শিক্ষক দরকার নেই কিন্তু সেই বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষক দেওয়া হয়, যে বিদ্যালয়ে শিক্ষক অত্যন্ত প্রয়োজন সেখানে নতুন শিক্ষক দেওয়া হয় না। এই অবস্থা দূর করা উচিত।’
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/24/2019