পরিদর্শন ব্যবস্থার দুর্বলতা ছাড়াও আরও কিছু গুরুতর প্রশাসনিক দুর্বলতার কথা আমরা শিক্ষকদের লেখাগুলি থেকে জানতে পারি, যা প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতির প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ বাধা হিসাবে কাজ করছে। আমরা ইতিমধ্যেই দেখেছি যে শিক্ষকদের সঠিক ভাবে বণ্টন না করার ফলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতে কী ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন। শিক্ষকদের দেওয়া তথ্য থেকে দেখা যায় দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ধোপাহাট দীনবন্ধু অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০১ জন ছাত্রর জন্য যখন ৬ জন শিক্ষক বর্তমান (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ১৭ : ১) তখন ঐ একই জেলারই খাকুরদহ জাঙ্গালিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৭৮ জন শিশুর জন্য মাত্র তিন জন শিক্ষক (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ১৫৯ : ১) বর্তমান। একই ভাবে পুরুলিয়া জেলার পালমা প্রাথমিক জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১৩ জন শিশুর জন্য যখন ৬ জন শিক্ষক (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ১৯ : ১) দেওয়া হয়েছে তখন ঐ জেলার লক্ষণডীহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫০ জন শিশুর জন্য মাত্র ২ জন শিক্ষক (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ৭৫ : ১ ) দেওয়া হয়েছে। এই সমস্যা শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগণা বা পুরুলিয়াতেই নয় আরও অনেক জেলাতেই দেখা যাচ্ছে। মালদা জেলাতে চিরহরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৪ জন শিশুর জন্য ৬ জন শিক্ষক (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ১১ : ১) কিন্তু বাবলাবোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫৭ জনের জন্য মাত্র ২ জন শিক্ষক (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ১২৯ : ১), জলপাইগুড়ি জেলার শিকারপুর রামমোহন জুনিয়র বেসিক স্কুলের ১২০ জন শিশুর জন্য ৭ জন শিক্ষক (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ১৭ : ১) অথচ রেড ব্যাঙ্ক টি জি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২১৭ জন শিশুর জন্য ৩ জন শিক্ষক (ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ৭২ : ১)। অর্থাৎ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ছাত্র শিক্ষক অনুপাতের সমস্যাটি শুধুমাত্র রাজ্যের/জেলার মোট লভ্য শিক্ষকের সংখ্যার সমস্যা নয়, এটি সঠিক বণ্টনের সমস্যাও বটে।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/20/2019