ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা নিয়ে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা বা গল্প লেখা প্রতিযোগিতা তৃতীয় শ্রেণি বা চতুর্থ শ্রেণির শিশুদের ক্ষেত্রে যতটা লাভদায়ক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে ততটা লাভদায়ক নয়। তাই প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা একটু অন্য ভাবে করি।
প্রথম শ্রেণিতে কে কত তাড়াতাড়ি ক – খ সাজাতে পারে এই জাতীয় প্রতিযোগিতা এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে কে সব চেয়ে বেশি ফুলের, ফলের, পাখির, পশুর নাম লিখতে পারে, এই ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করা যায়।
প্রতিযোগিতার সময় শিক্ষক হিসাবে আমি লক্ষ রাখার চেষ্টা করি যেন কোনও একটি শিশু ক্রমান্বয়ে পরাজিত না হয়। তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য করা আমি কর্তব্য বলে মনে করি। অতি সামান্য পুরস্কার এই পদ্ধতি লিখনে অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিতে পারে বলে আমি মনে করি।
সব শেষে গণিতের সিলেবাস সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলি, যা আমাকে নাড়া দেয়। একটি শিশু যোগ এবং বিয়োগ শেখে, তার পর আসে বাস্তব সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে বাস্তব সমস্যা থেকে যোগ এবং বিয়োগ শেখা। এ বার যা লক্ষণীয় গণিত বই-এর একটি অনুশীলনীতে যতগুলি গাণিতিক সমস্যা থাকে সবই যোগ বিষয়ক, এর পরের অনুশীলনীতে সবই বিয়োগ সম্পর্কিত সমস্যা। শিশুরা সমস্যাগুলি পড়েই দেখে না, শুধু সংখ্যাগুলি দেখে আর অনুশীলনী দেখে যোগ বা বিয়োগ করে ফেলে। গুণ বা ভাগের ক্ষেত্রেও এই একই বিষয় পরিলক্ষিত হয়। আমার মতে গণিত কর্মপত্র তৈরির সময় গাণিতিক সমস্যাগুলি এমন ভাবে স্থাপন করা প্রয়োজন যে শিশুরা গাণিতিক সমস্যাটি পড়ে এবং তার পর সিদ্ধান্ত নেয় যে সমস্যাটি যোগের, না বিয়োগের, অথবা গুণ না ভাগের। এই পদ্ধতি প্রয়োগ না করার জন্য অনেক উঁচু শ্রেণির (অষ্টম বা নবম ) শিক্ষার্থীরা ভুক্তভোগী হয়।
উপরোক্ত উল্লিখিত বিষয়গুলিই আমার একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। এটা কতটা গ্রহণযোগ্য তা বিচার্য বিষয়।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/15/2020