এ বার শিশুদের লেখা বা লিখনের ব্যাপারে আসি। গ্রামাঞ্চলে এবং শহরাঞ্চলে যে সব পিছিয়ে পড়া বিদ্যালয়ে শিশু আসে তাদের একটি বড় অংশ আসে যারা চক বা পেনসিল, কোনও কিছুই ঠিকঠাক ধরতে জানে না বা কোনও দিন ধরেইনি। আবার একই সঙ্গে কিছু শিশু আসে যারা কিছুটা লিখতে জানে। এ ক্ষেত্রে যারা পেনসিল ধরা জানে না, আমি তাদের আমার বিদ্যালয়ের ব্ল্যাক বোর্ড ব্যবহার করে প্রথম শেখানোর চেষ্টা করি। এই পদ্ধতি আমার ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধাজনক হয়েছে কারণ আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা যথেষ্ট এবং ছাত্র শিক্ষক অনুপাত এই কাজের যথেষ্ট উপযুক্ত। অপর পক্ষে যে বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা কম, তাদের পক্ষে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করার কোনও সুযোগ থাকে না। এই সমস্ত বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আমার একান্ত ব্যক্তিগত পরামর্শ হল, যদি সম্ভব হয় Floor Level – এ অর্থাৎ মাটির কাছাকাছি দেওয়ালে ব্ল্যাক বোর্ড তৈরি করা। যদি তা সম্ভব না হয় তা হলে শ্রেণিকক্ষের মেঝেকেই লেখার কাজে ব্যবহার করা। যদি শিশুরা ক্রমান্বয়ে চক ব্যবহার করতে থাকে তবে আমার মনে হয় একটা সময় আসবে যখন শিশুরা পেনসিল কী করে ধরতে হয় শিখে যাবে, শিক্ষকের কাজ সহজ হয়ে যাবে।
এর পর আসে মনের ভাব লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করার বিষয়টি। মনের ভাব ভাষায় সেই শিশুই সঠিক প্রকাশ করতে পারবে যে সঠিক ভাবে পড়তে এবং বুঝতে পারবে। তাদের জন্য গল্প পড়া, গল্প বলা এ ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হতে পারে। শিক্ষকদের উদ্যোগ নিয়ে এই বিষয়ে ছাত্রদের শুধুমাত্র আগ্রহী করে তুলতে হবে।
এ ছাড়া লিখন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শিশুদের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। প্রশ্ন আসে প্রাইজ মূল্য কোথা থেকে আসবে? শিক্ষকদের দেওয়া TLM -এর অর্থ এ ক্ষেত্রে সাহায্যকারী হতে পারে। প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু শ্রেণিভিত্তিক করা যায়। আমি নিজে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে যারপরনাই সাফল্য পেয়েছি।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/5/2019