স্মরণ, উপস্থাপন, কর্মপত্র তৈরি, মূল্যায়ন

আমার শিক্ষাদান পদ্ধতি হচ্ছে প্রথমে একটি পাঠে প্রবেশের আগে পূর্ব পাঠের স্মরণ, তার পর বড় দলে পাঠ উপস্থাপন, তার পর কর্মপত্র তৈরি, শ্রেণি মূল্যায়ন। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর ঐ বিষয়ের প্রতি একটা সম্যক ধারণা জন্মায়। পঠনপাঠন বিষয়ক বিভিন্ন পুস্তিকা রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে দেওয়া হয় ও হচ্ছে। সেই সঙ্গে TLM অর্থাৎ Teaching Learning Materials -এর বই দেওয়া হচ্ছে, যেখানে কী ভাবে এবং ক’টি পিরিয়ড এর মাধ্যমে ওই পাঠদান সম্পন্ন করতে হবে তা বিশদে বলা হয়েছে। এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর Chapter wise কী কী বিশ্লেষণমূলক বিভিন্ন আলোচনা করতে হবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। পাঠদান পদ্ধতি, পাঠ্যক্রম প্রভৃতি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হয় বিভিন্ন কর্মশালায় যা আমাদের অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করে। স্বাস্থ্যশিক্ষা বিষয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে একটা ছড়া আবৃত্তি করা হয়ে থাকে প্রার্থনা লাইনে, যা একটা শিশুর সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য বিষয়কে আলোকিত করে, যেগুলি মানলে একটা শিশু সুন্দর ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারে। এবং আমরা ঐগুলি মানার জন্য ছেলেমেয়েদের পরামর্শও দিই এবং সেখান থেকে ভালো সুফলও পাচ্ছি। শারীরশিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন Physical Exercise করানো হয় যেগুলি দেহ ও মনকে ভালো থাকতে সাহায্য করে। কারণ দেহ ও মন যদি ভালো থাকে তা হলে পঠনপাঠনের আগ্রহ দেখা দেবে।

বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের হাতেনাতে বিভিন্ন জিনিস যেমন — কাগজের নৌকা, তালপাতার আসন তৈরি, গাছ লাগানো প্রভৃতি করানো হয়, যা তাকে পরবর্তীকালে কর্মঠ হতে সহায়তা করবে। এ ছাড়াও বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, যেখানে বিভিন্ন মনীষীদের জীবনী আলোচনা করা হয় যা থেকে শিক্ষার্থীরা আরও উজ্জীবিত হতে পারে।

যদি সকল শিক্ষকের পড়ানোর ক্ষেত্রে আন্তরিকতা থাকে তা হলে ছোটখাটো প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে উঠে মূল লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়। বর্তমানে DPEP ও SSA -এর যৌথ উদ্যোগে যে Workshop হয় সেগুলি যদি পুরোপুরি নিজের বিদ্যালয়ে প্রয়োগ করি তা হলে শিক্ষার্থী তথা আমরা অনেক সমৃদ্ধ ও উপকৃত হব। এবং শিক্ষকদের বিভিন্ন Duty থেকে যদি অব্যাহতি দেওয়া যায় সে ক্ষেত্রে পাঠদানের ক্ষেত্রে উপকারে লাগবে। অভিভাবক অভিভাবিকাদের আরও সচেতন করতে হবে। Block পর্যায়ে জেলা পর্যায় থেকে পঠনপাঠনের উপর তদারকি বাড়াতে হবে। শিক্ষক হিসেবে আমাদের সবার উচিত পাঠ পরিকল্পনা এবং পাঠটীকা তৈরি করে এনে পড়ানো।

সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২