আমি যখন স্কুলে আসি, তখন দেখেছি যে আমাদের স্কুলে Teaching Aids বলে কিছু ছিল না। যেগুলি ছিল সেগুলি আবার পোকায় কেটে দিয়েছে। বস্তুত আমার উদ্যোগে স্কুলে আরও বেশি Teaching Aids এসেছে। অবশ্য তার জন্য সরকারি সাহায্য মিলেছে। বাচ্চাদের পড়াবার সহযোগী Teaching Aids ব্যবহার করলে শ্রেণিকক্ষের সজীবতা ফিরে আসে।
আমাদের স্কুলে দু’ জন শিক্ষক আসেন বহু দূর থেকে, এক জন আসেন সুদূর ক্যানিং হসপিটাল মোড় থেকে আর এক জন আসেন নলগোড়া থেকে। ফলে অনেক পথ অতিক্রম করায় পাঠদানের ক্ষেত্রে তাঁদের একটা মানসিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
আমাদের শিক্ষা বর্হিভূত কাজে (B L O, D O, Census ইত্যাদি) নিযুক্ত হতে হয়। তার ফলে বাচ্চাদের পাঠদানের বিশেষ অসুবিধা হয়।
গ্রামের অভিভাবকরা অনেকেই এখনও নিরক্ষর, তাঁরা বাচ্চাদের Private Tutor -এর কাছে পাঠান আরও ভালো করে শেখানোর জন্য। বাচ্চারা বিদ্যালয়ে বিশেষ বৈজ্ঞানিক নিয়মে পাঠ গ্রহণ করে। তার পর তারা যখন প্রাইভেট টিউটরের কাছে যায় তখন তাদের নিয়মে তৈরি পাঠ গ্রহণ করে । ফলে দু’টি নিয়মের দড়ি টানাটানিতে তারা অনেক পিছিয়ে পড়ছে। আমি মনে করি Private Tutor -দের নিয়ে সরকারি কিছু কিছু Work Shop করার দরকার আছে। বিদ্যালয়ে এবং Private Tutor -এর শিখনপদ্ধতি এক হলে বাচ্চাদের শেখার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।
এক জন বাচ্চার কাছে তার মা হল প্রথম শিক্ষক। বছরে একবার বা দু’বার যদি মাতৃ সচেতনতা শিবির চালানো যায় তাতে বাচ্চারা আরও বেশি উপকৃত হবে।
প্রতিটি বিদ্যালয়ে যদি এক জন করে মহিলা শিক্ষিকা নিযুক্ত করা যায় তা হলে খুব ভালো হয়। বাচ্চারা বেশির ভাগ সময়ে তার মায়ের কাছে থাকে। স্কুলে এসে তারা যদি মাতৃসুলভ কোনও শিক্ষিকাকে দেখে, তাদের আগ্রহটা আরও বেশি করে বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষককে ভুলে যেতে হবে যে, শিক্ষকতা আর চাকরি এক জিনিস নয়। শিক্ষকদের আরও বেশি করে মানবিক হতে হবে।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/24/2019