দিঘা-শঙ্করপুরের পর সমুদ্র সৈকত হিসাবে পশ্চিমবঙ্গে নতুন আবিষ্কার মন্দারমণি ও তাজপুর। নবীন এই দুই বেলাভূমি ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কেন নাম মন্দারমণি? নানা গল্প। কেউ বলেন, জায়গাটা মন্দার গাছে ঘেরা, আর চাঁদের আলোয় বেলাভূমি মণির মতো ঝিকমিক করে, তাই নাম মন্দারমণি। অনেকে আবার বলেন, বিশাল বিচে হাজার হাজার সন্ন্যাসী কাঁকড়ার দলবদ্ধ দৌড় দেখে অনেক কাল আগে এক ডিসট্রিক্ট কালেক্টর মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর চোখে এই দৃশ্যটা মন্দার ফুলের মতো লেগেছিল। তিনিই নাকি জায়গার নাম রাখলেন মন্দারমণি।
যা-ই হোক, সত্যিই জ্যোৎস্নারাতে অপরূপা এই মন্দারমণি। বাসপথে দিঘার ১৬ কিমি আগে চাউলখোলা। সেখান থেকে ১০ কিমি আঁকাবাঁকা পথ গ্রাম্যপ্রকৃতি ছুঁয়ে পৌঁছে দেয় দাদনপাত্রবাড়ে। এ বার বিচ ড্রাইভ। শক্ত সৈকতভূমি দিয়ে ছুটে চলা ৪ কিমি। পৌঁছে যাবে মন্দারমণি সৈকতে। তবে একটু খোঁজখবর করে নিতে সৈকত দিয়ে গাড়ি হাঁকিয়ে যাওয়ার আগে। কারণ জোয়ারের সময় সৈকত ভেসে যায় সমুদ্রের জলে। তাই ওই সময়টুকু বাদ দিয়ে পাড়ি দিতে হয় গাড়ি নিয়ে। চাউলখোলা মোড় থেকে গাড়ি পাওয়া যায় ভাড়ায়।
এক সময় নির্জনতার ঠিকানা ছিল মন্দারমণি। এখন বর্তমান প্রজন্মের হার্টথ্রব। তাই বাড়ছে ভিড়। পাল্লা দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে নির্জনতা। সমুদ্র সৈকতের গা ঘেঁষে একের পর এক গড়ে উঠেছে বেসরকারি হোটেল। বেলাভূমি জুড়ে যেন মেলা বসে। বিনোদনের নানা পসরা, খাওয়া-দাওয়ার বিশাল আয়োজন। সামুদ্রিক মাছের নানা আইটেম জল এনে দেয় জিভে।
এখনও নির্জনতা ধরে রেখেছে তাজপুর। তবে কত দিন ধরে রাখতে পারবে সন্দেহ আছে। যতই নাম ছড়িয়ে পড়ছে তাজপুরের ততই গজিয়ে উঠছে হোটেল। একটাই বাঁচোয়া --- একেবারে সৈকতের গা লাগিয়ে নয়, কিছুটা দূরেই গড়ে উঠছে হোটেল-রিসর্ট। তাই তটভূমি ছোঁয়ার আগে পথ করে নিতে হয় কেয়াঝোপ আর ঝাউবীথির মধ্য দিয়ে। ভাঙতে হয় বালিয়াড়ি। এটাই মজার তাজপুরের। চাঁদনি রাতে সমুদ্র কেমন মায়াময় তাজপুরে। দেখা মিলবে নানা পাখির। রাতে শোনা যাবে নানা ডাক – রাতচরা পাখিদের কিংবা শেয়ালের। কেমন গা ছম ছম করবে।
দিঘা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে বালিসাই। সেখান থেকে পথ তাজপুরের – ৩ কিমি। ওই ৩ কিমি পথে কোনও বসতি নেই। চোখে পড়বে নুন তৈরির প্রকল্প। সমুদ্রের জল ঘিরে রেখে কী ভাবে নুন তৈরি হয় দেখা যাবে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/28/2020