বিশ্বব্যাপী সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে যে ৮টি মিলেনিয়াম গোল বা এমডিজি নির্ধারিত হয়েছে, সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে সকলের জন্য শিক্ষা কর্মসূচি রূপায়ণ অত্যন্ত জরুরি। কারণ, শিশু ও প্রজননগত স্বাস্থ্যের ওপর শিক্ষার সরাসরি প্রভাব রয়েছে। পাশাপাশি এটাও সত্যি যে ২০১৫-এর লক্ষ্যে পৌঁছতে বিভিন্ন শরিকের মধ্যে ব্যাপক অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করেছে ইএফএ। তা ছাড়া এটাও ঠিক যে, শিক্ষা সংক্রান্ত এমডিজি-তে পৌঁছতে হলে আমাদের অন্য এমডিজিগুলো, যথা, উন্নত স্বাস্থ্য, সহজেই পরিষ্কার পানীয় জল পাওয়া, দারিদ্র কমানো এবং পরিবেশ রক্ষা ইত্যাদি লক্ষ্যগুলো পূরণ করা আবশ্যিক। ইএফএ লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে ভাল রকম অগ্রগতি হলেও এখনও চ্যালেঞ্জ থেকে গিয়েছে। স্কুলে যাওয়ার মতো বয়স যাদের, এমন বহ শিশুই আজও স্কুলে যেতে পারছে না আর্থিক, সামাজিক ও শারীরিক কারণে (এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ প্রজনন হার, এইচআইভি/এইডস প্রভৃতি)। ১৯৯০ সালের পর থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ বেড়েছে। ১৬৩টি দেশের মধ্যে ৪৭টি সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার (এমডিজি ২) লক্ষ্যে পৌঁছেছে এবং আরও ২০টি দেশ ২০১৫ সালের মধ্যে সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোর পথে রয়েছে। কিন্তু ৪৪টি দেশে সমস্যাটা ব্যাপক, এর মধ্যে ২৩টি দেশ আফ্রিকায়, সাহারা মরুভূমি সন্নিহিত। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ যদি ভাল রকম ত্বরান্বিত না হয়, তা হলে ২০১৫ সালের মধ্যে এই দেশগুলি সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না। যদিও শিক্ষায় লিঙ্গ ফারাক (এমডিজি ৩) কমছে, তবুও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে মেয়েরা এখনও অসুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীভুক্তির ক্ষেত্রে সম্প্রতি অগ্রগতি হলেও, বিশেষ করে সাহারা সন্নিহিত আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার কম আয়ের দেশগুলিতে, ২৪টি দেশ ২০১৫-এর মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে লিঙ্গসমতার লক্ষ্যে সম্ভবত পৌঁছতে পারবে না। এর মধ্যে ১৩টি দেশ সাহারা সন্নিহিত আফ্রিকায়। শিক্ষা ক্ষেত্রে নিম্ন মানের শিক্ষা এবং শিক্ষার ফলাফলে খামতি থেকে যাওয়াটা সব চেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে রয়েছে। বহু উন্নয়নশীল দেশে যে সব শিশু একেবারে নিচু শ্রেণিতে নাম লেখায় তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ স্কুলের শেষ শ্রেণিতে পৌঁছয়। এমনকী অনেক দেশে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের হার ৪০:১-এরও বেশি এবং বহু প্রাথমিক শিক্ষকের যথেষ্ট শিক্ষাও নেই।
সূত্র : এডুকেশন ফর অল
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020