ভারত নিঃসন্দেহে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন উন্নয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট বড় লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। এই লক্ষ্যমাত্রার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য হল অভ্যন্তরীণ শক্তি নিরাপত্তার সঙ্গে সঙ্গে আঞ্চলিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশ্ব প্রতিযোগিতাতুল্য অভ্যন্তরীণ শিল্প স্থাপন, উন্নত শক্তির জোগান এবং জলবায়ুর পরিবর্তন প্রশমিত করা।
ভারত ১৯৮১ সালে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি কর্মসূচি শুরু করে। ওই একই বছরে স্থাপিত হয় ‘কমিশন ফর অ্যাডিশনাল সোর্সেস অব এনার্জি’। এই কমিশনের দায়িত্ব ছিল কর্মসূচির নীতি নির্ধারণ করা। এ ছাড়া, নিরন্তর গবেষণা, উন্নয়ন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস সম্পর্কিত যাবতীয় সরকারি নীতির রূপায়ণ সুনিশ্চিত করার দয়িত্বও বর্তায় কমিশনের উপর। ১৯৮২ সালে এই কমিশনের ফলশ্রুতি হিসেবে গঠিত হয় অচিরাচরিত শক্তি উৎসের একটি স্বাধীন দফতর। এই দফতরটিই ১৯৯২ সালে স্বাধীন ‘নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক’-এ রূপান্তরিত হয়। এ ছাড়াও ১৯৮৭ সালে গঠিত হয় ভারতীয় পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিকাশ এজেন্সি। এই এজেন্সির দায়িত্ব ছিল পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্পগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া এবং রাজ্যগুলিতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিকাশ এজেন্সি গঠন করে রাজ্যস্তরে প্রকল্প রূপায়ণ করা।
ভারতে বর্তমান পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রয়োগ কৌশলে বায়ু ও সৌরশক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নে বায়ুশক্তির প্রধান ভূমিকা তৈরি হওয়ার পিছনে রয়েছে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন। পাশাপাশি উল্লেখ্য যে পৃথিবীতে বায়ুশক্তির জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি প্রস্তুতকারীদের সিংহভাগই ভারতে অবস্থান করছে। যদিও সৌরপ্রযুক্তির অবদান অপেক্ষাকৃত কম, তবুও আশা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের মধ্যে ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সম্ভারে দ্বিতীয় বৃহত্তম অবদান থাকবে সৌরশক্তির। বিভিন্ন অসরকারি সংস্থা ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। বস্তুত পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উন্নয়নের উদ্যোগটা মূলত তাদেরই।
দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাকালে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে পরিকল্পিত ব্যয়ের এক-তৃতীয়াংশ বরাদ্দ করা হয়েছে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে। এই বরাদ্দের প্রায় অর্ধেকটাই করা হয়েছে অসরকারি উদ্যোগের চাহিদা অনুযায়ী।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৪
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/26/2020