শক্তি বা জ্বালানি ব্যবস্থা শুধুমাত্র শক্তি রূপান্তরের প্রযুক্তিকেই বোঝায় না। এর মধ্যে রয়েছে সমস্ত প্রাথমিক শক্তি সম্পদ এবং শক্তি রূপান্তরের পক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াকরণ ও প্রযুক্তি; পরিবহণ, শক্তি সঞ্চয়ের ব্যবস্থা এবং শক্তির যথাযথ ব্যবহার। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রাথমিক জ্বালানির উৎস হিসাবে পরিবেশের বিষয়টি যা প্রাথমিক শক্তির সন্ধান বা উত্তোলন থেকে শুরু করে ব্যবহারের শেষ স্তর পর্যন্ত নির্গত সমস্ত বর্জ্য পদার্থকে আত্মসাৎ করতে সাহায্য করে। সাধারণ ভাবে বলতে গেলে শক্তি ব্যবস্থাকে সন্তোষজনক বলা যায় তখনই যখন প্রয়োজনে সঠিক পরিমাণ এবং উপযুক্ত মাত্রায় শক্তির জোগান সম্ভব হয়ে ওঠে। এবং তা ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে গড়ে তোলা হয় যাতে ভবিষ্যতের প্রয়োজনও মেটানো যেতে পারে। তাই শক্তি বা জ্বালানি নীতির লক্ষ্য শুধুমাত্র শক্তি ব্যবস্থার যথাযথ পরিচালন সুনিশ্চিত করাই নয়, সেই সঙ্গে এমন এক বাতাবরণ গড়ে তোলা যাতে শক্তি সংরক্ষেণর কাজে যুক্ত সকলেই পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থেকে শক্তি সংরক্ষণের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে পারে।
যে সমস্ত ক্ষেত্রে শক্তির চাহিদা রয়েছে সেই সমস্ত ক্ষেত্রে তা পূরণের জন্য ভারতীয় শক্তি ব্যবস্থা প্রাথমিক বাণিজ্যিক জ্বালানি সংগ্রহ করে মূলত কয়লা, অশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। ২০১১-১২ সালে জীবাশ্ম থেকে সংগৃহীত জ্বালানি ছিল দেশের মোট ব্যবহৃত জ্বালানির ৯৩.৩ শতাংশ। দেশে জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও জোগানের মধ্যে যে ফারাক রয়েছে তা দেশের শক্তি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ বিশেষ। বাণিজ্যিকভাবে দেশে যে মোট শক্তির জোগান দেওয়া হয় তার মধ্যে আমদানির অনুপাত ২০১১-১২ সালে ছিল ৩৬.৭ শতাংশ। প্রাথমিক ভাবে মোট আমদানির ৯৯.৮ শতাংশ দখল করেছিল জীবাশ্ম থেকে উদ্ভূত শক্তি বা জ্বালানি। ওই একই সময়কালে কয়লা, অশোধিত তেল এবং পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসের আমদানির অনুপাত ছিল যথাক্রমে ১৯.৬, ৭৬.৮ ও ২২.৭ শতাংশ।
সূত্র : যোজনা, মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020