চিনের মতো ভারতবর্ষেও শক্তির চাহিদা বাড়ছে এবং তা সামাল দেওয়া ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। একটি তথ্য বলছে, শক্তির চাহিদার নিরিখে ভারতের স্থান বিশ্বে ৬ নম্বরে। মনে করা হচ্ছে, ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার আগামী দু’ দশকে হবে ৭-৯ শতাংশ। এই কারণে তেল, কয়লা, গ্যাস সহ অন্যান্য শক্তির চাহিদা বেড়ে যাবে। সড়ক, জল এবং বায়ু পরিবহনের ক্ষেত্রে আমাদের শক্তির চাহিদা বাড়বে। ভারতবর্ষের মোট শক্তির চাহিদার ৭০ শতাংশ আসে জীবাশ্ম জ্বালানি বা ফসিল ফুয়েল থেকে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ জোগান দেয় কয়লা, ২৪ শতাংশ তেল, ৬ শতাংশ গ্যাস। ভারতের শক্তি আমদানির হার খুব শীঘ্রই ৫৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।
২০০৯-১০-এ ভারতবর্ষ ১৫৯.২৬ মিলিয়ন টন অশোধিত তেল আমদানি করেছিল, যা তার মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ। ভারতের মোট আমদানির ৩১ শতাংশই তেল।
একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ৫৫০০০ হাজার মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তবুও ৮.৭ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। এবং পিক আওয়ারে এই ঘাটতি গিয়ে দাঁড়ায় ৯ শতাংশে। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে জানা যায়, শক্তি ক্ষেত্রে চাহিদা ও সরবরাহ এই দুয়ের মধ্যে যথেষ্ট ফারাক রয়েছে। এই জন্য আমাদের শক্তি আমদানি বেড়ে যাচ্ছে। আরও বেশি পরিমাণে কয়লা এবং তেল কেনার জন্য আমরা অন্যান্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। অন্য দিকে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ফাঁকটি ক্রমেই বাড়ছে। মনে করা হচ্ছে, সমগ্র বিশ্বে শক্তির চাহিদ ২০৩৫ সালের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ বেড়ে যাবে। সারা বিশ্বে মোট চাহিদার ৬০ শতাংশই অধিকার করবে, চিন, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি। চিন, আমেরিকা, রাশিয়ার পর ভারতবর্ষ চতুর্থ দেশ যার শক্তি চাহিদা এত বেশি। প্রতি বছরে বিশ্বে যে পরিমাণ শক্তি খরচ হয় তার ৪.৬ শতাংশ খরচ করে ভারতবর্ষ। এই খরচের হার ক্রমশ বাড়ছে। অচিরে তা অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলির থেকে অনেকটাই এগিয়ে যাবে।
সূত্র : যোজনা মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/27/2020