আমাদের দেশে অপ্রচলিত ও অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহারের দিকে অনেক বেশি নজর দিতে হবে। নজর দিতে হবে শক্তি সঞ্চয় এবং অপব্যবহার কমানোর দিকে। শক্তি খরচের দিকে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। গ্রিন লিভিং কনসেপ্টকে আরও বেশি বাস্তবায়িত ও জনপ্রিয় করতে হবে। কীসে শক্তি খরচ কম হয় বা সাশ্রয় হয় তা দেখতে হবে। যদি আমরা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎসগুলি আরও বেশি ব্যবহার করতে পারি তা হলে অনেক সমস্যা মিটে যায়। বর্তমানে বায়ু ও জলবিদ্যুৎ আমাদের শক্তির চাহিদা মেটাচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন তুলনায় ব্যয়বহুল এবং এই ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগের প্রয়োজন। শক্তি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হলে আমাদের যেমন দেশের নতুন জীবাশ্ম জ্বালানির ভাণ্ডার অনুসন্ধান করতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে, পরমাণু শক্তির দিকে হাত বাড়াতে হবে তেমনই অপ্রচলিত ও অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহারের দিকে আরও বেশি ঝুঁকতে হবে। সেই সঙ্গে শক্তি সঞ্চয়ের যে নীতি রয়েছে (এনার্জি কনজারভেশন অ্যাক্ট ২০০১) তাও কঠোর ভাবে বলবৎ করতে হবে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯১৪-১৮) উইনস্টন চার্চিল ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জন্য একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি রয়্যাল নেভির যুদ্ধ জাহাজগুলিকে কয়লার পরিবর্তে তেলে চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। কেন? এতে জাহাজ চলবে দ্রুত। তাঁকে তেলের জন্য অবশ্য পারস্যের উপর নির্ভর করতে হল। অনেকেই তখন এই সিদ্ধান্তের জন্য শক্তি নিরাপত্তার প্রশ্নটি তুলেছিলেন। চার্চিলের উত্তর ছিল, ‘সেফটি অ্যান্ড সার্টেনিটি ইন অয়েল...লাই ইন ভ্যারাইটি অ্যান্ড ভ্যারাইটি অ্যালোন’। কয়লা থেকে শক্তির চাহিদাকে তেলের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন চার্চিল। যে প্রশ্ন চার্চিলের সময় উঠেছিল — শক্তি নিরাপত্তার সে প্রশ্ন প্রায় একশো বছর পর ভারতের বুকে আবার উঠেছে। কয়লা-তেল-গ্যাস—এর পর কী?
শুধুমাত্র জীবাশ্ম জ্বালানি বা কয়লা,তেলের ওপর নির্ভর করে শক্তি উৎপাদনের ব্যবস্থা করলে চলবে না। এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে বিকল্প শক্তিকেও। বিকল্প শক্তি অনেক রকমের হয়। তার মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় হল জলবিদ্যুৎ। এ ছাড়া ভারতে সৌর বিদ্যুৎ বা বায়ু বিদ্যুৎও যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে।
সূত্র : যোজনা মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020