যদি ভারতবর্ষের আর্থিক উন্নয়ন ৮ শতাংশের দিকেই চলতে থাকে তা হলে তার নিজস্ব মজুত শক্তির উপর চাপ পড়বে। এখনও পর্যন্ত আমরা দেশের মজুত অতিরিক্ত শক্তির উৎসগুলির অনুসন্ধান করে উঠতে পারিনি। হাইড্রোকার্বন রিজার্ভ কোথায় কতটা তা জানার চেষ্টা চলছে। তবে তা অতি ঢিমেতালে। তেল অনুসন্ধানে আমরা দেশি কোম্পানিগুলিকে পাশে পাইনি। এই পর্যন্ত আমরা অতিরিক্ত শক্তির সন্ধানে দেশের উপকূলবর্তী এলাকার মাত্র ২২ শতাংশ অনুসন্ধান করেছি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশে যথেষ্ট পরিমাণ গ্যাস ও তেল রয়েছে। তবুও ভারতবর্ষের গ্যাস আমদানির চাহিদা বাড়ছে। একটি তথ্য বলছে, আগামী দু-এক বছরের মধ্যে ভারতের মোট গ্যাস (লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস) চাহিদার দুই পঞ্চামাংশ অনেক বেশি দামে আসবে বিদেশ থেকে। এ দিকে ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত তেল আমদানিও বেড়ে চলেছে। এই আমদানি বৃদ্ধি কীসের ইঙ্গিতবাহী? আমাদের মজুত শক্তির অভাব ও চাহিদা বৃদ্ধির। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতবর্ষ ক্রমেই একটি এনার্জি মার্কেটে পরিণত হচ্ছে। ২০৩৫ সালের আগে পরে ভারতবর্ষ শক্তি খরচের নিরিখে বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হয়ে উঠবে।
দ্বাদশ পরিকল্পনা (২০১২-১৭) কালে অশোধিত তেল আমদানির উপর আমাদের নির্ভরতা আরও বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। দেশীয় উৎসগুলি থেকে গ্যাস ও তেল উৎপাদন ও অনুসন্ধানের কাজ তেমন জোর দিয়ে হয়নি। এই উদ্দেশ্যে তেমন খরচও করা হয়নি। গত ১৫ বছরে ভারতবর্ষ এই ক্ষেত্রে খরচ করেছে মাত্রা ১৬ বিলিয়ন ডলার। তবে ওএনজিসির নেতৃত্বে দেশের বেশ কিছু তোল কোম্পানি এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ দেশে তেল অনুসন্ধানের কাজ চালাচ্ছে। রাজস্থান, কৃষ্ণা-গোদাবরী এবং উত্তরপূর্ব হিমালয়ে এই অনুসন্ধান চলছে। প্রস্তাবিত ইরান-পাকিস্তান-ইন্ডিয়া পাইপ লাইন বসিয়ে তেল আনার যে প্রকল্প তাও এই শক্তি নিরাপত্তার জন্যই।
কল কারখানা বাড়লে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়বে। সাম্প্রতিক হিসাবে দেখা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে দেশে বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশের ওপরই থাকছে। পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার অন্যান্য ক্ষেত্রগুলির চেয়ে বেশি। বৃদ্ধির হার বাড়লে বিদু্যতের চাহিদাও যে সমহারে বেড়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য।
সূত্র : যোজনা মে ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020