পৃথিবী সূর্য থেকে শক্তি গ্রহণ করে যার দ্বারা তার ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়। এই শক্তি বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আসার সময় কিছুটা (৩০ শতাংশ মতো) ছড়িয়ে যায়। এই শক্তির কিছুটা আবার ভূপৃষ্ঠ ও সমুদ্রতল থেকে প্রতিফলিত হয়ে আবার বায়ুমণ্ডলেই ফিরে যায়। বায়ুমণ্ডলে কিছু গ্যাস পৃথিবীর চার দিকে একটা কম্বলের মতো সৃষ্টি করে এবং এই শক্তির কিছুটা শোষণ করে। এই গ্যাসগুলি, যেমন, কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, জলীয় বাষ্প, মিথেন বায়ুমণ্ডলের এক শতাংশেরও কম। এদের বলা হয় গ্রিন হাউস গ্যাস। ঠিক যেমন ভাবে গ্রিন হাউসের কাচ অতিরিক্ত শক্তির বহির্নিস্ক্রমণ আটকায়, তেমন ভাবেই এই গ্যাসের চাদর পৃথিবী থেকে বিচ্ছুরিত শক্তিকে শুষে নেয় এবং তাপমাত্রা সঠিক স্তরে রাখতে সাহায্য করে। এই জন্য একে বলা হয় গ্রিন হাউস এফেক্ট। প্রথম গ্রিন হাউস এফেক্ট আবিষ্কার করেন ফরাসি বিজ্ঞানী জঁ ব্যাপ্টিস্টে ফুরিয়ার। বায়ুমণ্ডল এবং গ্রিন হাউসে যে একই ব্যাপার ঘটে থাকে তা তিনিই প্রথম প্রমাণ করেন। গ্রিন হাউস গ্যাসের এই চাদর পৃথিবী সৃষ্টির সময় থেকেই রয়েছে। কিন্তু মানুষের কাজকর্মের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় অনেক বেশি পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলে মিশছে। এর ফলে গ্রিন হাউস গ্যাসের চাদর ক্রমশ মোটা হচ্ছে এবং স্বাভাবিক গ্রিন হাউস এফেক্টের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
কয়লা, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ালে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয়। যত বেশি গাছ কাটা হয় ততই গাছে জমে থাকা কার্বন বাতাসে মিশে যায় কার্বন ডাইঅক্সাইড হিসাবে। ক্রমবর্ধমান কৃষিকাজ, ভূমি ব্যবহারের ধরন ও অন্যান্য ক্রিয়াকাণ্ড আমাদের পরিবেশে মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের মাত্রা ক্রমশ বাড়িয়ে দিচ্ছে। শিল্প সংক্রান্ত ক্রিয়াকলাপ ক্লোরোফ্লুরোকার্বনের (সিএফসি) মতো কৃত্রিম গ্রিন হাউস গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ও দিকে গাড়ির ধোঁয়া থেকে বাতাসে ওজোনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলহাওয়ার পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হল এই ক্রমবর্ধমান গ্রিন হাউস এফেক্ট।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/18/2020