অনেকের মধ্যেই সরকারি সহায়তায় শৌচাগার নির্মাণের বিষয়টি সরকারের কাছ থেকে মূলত অনায়াসে কিছু আর্থিক সহায়তা পাওয়া বা সরকারি ভর্তুকি পাওয়ার জন্য, উন্নত অনাময় ব্যবস্থা বা তা ব্যবহার করার জন্য নয়।
জনগণের মধ্যে খুব সাধারণ কিছু স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা একান্ত প্রয়োজন। যেমন—হাত ধোওয়া। মলত্যাগের পরে, রান্না করার আগে, খাওয়ার আগে হাত ধোওয়া অনেক অসুখবিসুখের প্রতিরোধ করতে পারে। WASH (Water, Sanitation, Hygiene)-এর বিষয়ে সর্বত্র প্রচার করা দরকার। ইউনিসেফের মতে, সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার মতো খুব সাধারণ ব্যাপার ৪৪ শতাংশ ডায়েরিয়াজনিত অসুস্থতা, কৃমি সংক্রমণের প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এমনকী জন্মের সময় শিশু মৃত্যুর হার প্রায় ১৯ শতাংশ কমিয়ে আনা যায় যদি, যিনি প্রসব করাচ্ছেন তিনি সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে প্রসব করান। এই সব ব্যবস্থা শুরু করা দরকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে। ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা, যারা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসে তাদের মধ্যে ও স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে হাত ধোওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এর ফলে এক দিকে যেমন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অপুষ্টি প্রতিরোধে পরিপূরক আহার ও স্কুলের দ্বিপ্রাহরিক আহারের কার্যকরিতা বৃদ্ধি পাবে, অন্য দিকে সংক্রামক অসুখ বিসুখও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। আবার মানুষের মধ্যে জুতো পায়ে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে হুককৃমি সংক্রমণজনিত রক্তাল্পতা আমরা অনেকটাই প্রতিরোধ করতে পারব।
জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এবং দেশকে আরও উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ‘সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্য’-এ পৌঁছতেই হবে আমাদের। যদিও ২০১৫-র মধ্যে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সহস্রাব্দ উন্নয়নের প্রতিটি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো খুবই কঠিন। কিন্তু প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে।
(লেখক পুষ্টি বিশেষজ্ঞ)
email-palodhimitali@gmail.com
সূত্র : যোজনা, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/1/2020