স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচি সফল করতে রাজনীতিবিদ থেকে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি এবং বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু সচেতনতার ব্যাপারটি একটা সাধারণ নিদান ছাড়া আর কিছুই নয় এবং সমস্ত অপকর্মের জন্যই এই ওষুধের নিদান দেওয়া হয়। আর শুধু সচেতনতার উপর নির্ভর করে অন্যান্য অপকর্ম যেমন বন্ধ করা যায়নি, বন্ধ করা যাবে না এটিও। আসলে সচেতনতার কথা বলে অনেক সময় দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। ভয় না থাকলে কেউ সচেতন হতে চায় না এবং বেআইনি কাজ করেই চলে। তবে কিছু সচেতন ব্যক্তি অবশ্যই আছেন। আমি এক ব্যক্তিকে জানি যিনি রাস্তা বা ড্রেন থেকে প্লাস্টিক কুড়িয়ে নির্দিষ্ট ভ্যাটে ফেলেন এবং বাজারে পারতপক্ষে প্লাস্টিক গ্রহণ করেন না। মাছ কেনার জন্য তিনি বাড়ি থেকেই একটি পাত্র সঙ্গে নিয়ে যান। মানুষ দেখেন, জিঞ্জাসা করেন, প্রশংসাও করেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই, তাঁরা নিজেদের মতোই চলেন, সচেতনতার ধার ধারেন না। কিছু দিন আগে কাগজে দেখেছিলাম বিশ্বভারতীর এক জন বিদেশি ছাত্রী একটি বিশাল প্যাকেট নিয়ে বিশ্বভারতীর প্রাঙ্গণে ঘুরছেন আর প্রাঙ্গণের মধ্যে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের টুকরো, আবর্জনা এই সব তুলে তুলে প্লাস্টিকে ভরছেন। কিন্তু কেউই তাঁর সঙ্গে হাত লাগাচ্ছেন না এবং সকলে ব্যাপারটা উপভোগ করছে। আসলে দূষণে এবং সংক্রমণে জীবন সংশয় না হলে আমরা সহজে শুধরোই না। আর হচ্ছেও তাই। সুতরাং কেবলমাত্র সচেতনতার উপর নির্ভর না করে সরকারকে প্রশাসনিক উদ্যোগ নিতে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। যত্রতত্র আবর্জনা নিক্ষেপ করলে জরিমানা নিতে হবে এবং পরিবেশ অপরিচ্ছন্নতার কাজকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির অন্তর্গত করতে হবে। হংকঙে রাস্তায় সামান্য কাগজ নিক্ষেপ করলেও তাৎক্ষণিক জরিমানা করা হয়। পৃথিবীর আরও অনেক দেশে এই বিধি বলবৎ রয়েছে। সুতরাং একই রাস্তায় আমাদেরও হাঁটতে হবে।
সূত্র : যোজনা, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020