ইন্টারনেটের দরজা খুলে গেলে কম্পিউটারের পর্দায় একেবারে উপরে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার মেনু বার পাওয়া যাবে। এই মেনু বারে বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। এগুলি নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ফাইল
ওয়েবসাইটের কোনও ফাইলকে নানা ভাবে ব্যবহার করা যায় এই মেনুটিকে কাজে লাগিয়ে। এখানে বিভিন্ন ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হলো।
- ১) নিউ ট্যাব : এটি একটি নতুন পেজ খোলে। এর সাহায্যে ব্যবহারকারী একই সঙ্গে নিউ ওয়েব পেজ দেখতে পান।
- ২) নিউ উইন্ডো : এটি একটি নতুন উইন্ডো খোলে। এর সাহায্যে ব্যবহারকারী একই সঙ্গে বিভিন্ন ওয়েব পেজ দেখতে পান।
- ৩) ওপেন : ব্যবহারকারী যে ওয়েবসাইটটি দেখতে চান, এটির সাহায্যে তার অ্যাড্রেস বা ঠিকানা টাইপ করা যায়। অথবা ইতিমধ্যেই যে সব ওয়েবসাইটের ঠিকানা কম্পিউটারে আছে, ব্রাউজার লিস্ট বা ব্রাউজারের তালিকা থেকে ডায়ালগ বক্সের মাধ্যমে তা-ও খোলা সম্ভব।
- ৪) সেভ : যখন কোনও ওয়েবসাইটকে বেছে নেওয়া হয়, তখন সেটির তথ্য সেভ বা সংরক্ষণ করে। কিংবা বলা যেতে পারে যে, বেছে নেওয়া তথ্যকে এর সাহায্যে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
- ৫) সেভ অ্যাজ ফাইল : কম্পিউটারে কোনও ওয়েবসাইটের যে পাতাটি খোলা আছে তার তথ্যকে কোনও বিভিন্ন নামের ফাইল হিসাবে সংরক্ষণ করা যায় এর সাহায্যে।
- ৬) নিউ মেসেজ : এর সাহায্যে ব্যবহারকারী কোনও নতুন মেসেজ বা বার্তা পাঠাতে পারেন।
- ৭) সেন্ড : ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার নিয়ে ব্রাউজিং করার সময় একটি বিশেষ ওয়েব পেজে এসে ব্যবহারকারীর মনে হতে পারে এই পেজটি বিশেষ কাউকে পাঠানো দরকার, তা হলে এই পেজটিই মেলের মাধ্যমে পাঠানো যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে যে কম্পিউটারে বসে ব্যবহারকারী কাজ করছেন সেই কম্পিউটারটিতে আউটলুক এক্সপ্রেস গঠনতান্ত্রিক ভাবে সজ্জিত হতে হবে।
এই কাজটি করার জন্য প্রথমে ফাইল মেনুতে ক্লিক করে সেখান থেকে সেন্ড অপশনটি বেছে নিলে একটি উপ-তালিকা খুলে যাবে, সেখান থেকে ‘পেজ বাই ই-মেল’ অপশনটি পছন্দ করে নিলেই আউটলুক এক্সপ্রেসটি খুলে যাবে। সেখানে যে ব্যক্তিকে পেজটি পাঠাতে হবে তার ই-মেল অ্যাড্রেসটি ভরে দিতে হবে এবং তার পর সেখানকার সেন্ড বাটনটিতে ক্লিক করলেই ঐ পেজটি ই-মেলের মাধ্যমে প্রাপকের কাছে পৌঁছে যাবে।
- ৮) পেজ সেট আপ : ওয়াবসাইটের যে পাতাটি খোলা আছে, সেটির বিন্যাসকে বদলানো যায় এর সাহায্যে।
- ৯) প্রিন্ট : পেজ সেট আপের সাহায্যে বিন্যস্ত কোনও তথ্যাবলিকে ছাপিয়ে নেওয়া যায় এটিকে ব্যবহার করে। ছাপানো অংশ পেতে প্রিন্টারের প্রয়োজন হয়।
- ১০) শর্টকাট টু ডেস্কটপ : ডেস্কটপে নির্দিষ্ট তথ্যাবলির শর্টকাট তৈরি করা যায় এর সাহায্যে।
- ১১) প্রপার্টিজ : এটি ওয়েব পেজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যকে কম্পিউটারের পর্দায় দেখায়। তাতে যেমন ঐ ওয়েব পেজের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলির উল্লেখ থাকে, তেমনি তার নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যের ও উল্লেখ থাকে।
- ১২) ক্লোজ : এটির সাহায্যে উইন্ডোটি বন্ধ করে দেওয়া যায়। অর্থাৎ কোনও ওয়েব পেজ নিয়ে কাজ করা হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট উইন্ডোটিকে বন্ধ করতে এটিকে কাজে লাগাতে হবে।
ভিউ
এই মেনুটির সাহায্যে কম্পিউটারের পর্দায় যে তথ্যাবলি দেখা যায়, তাকে নানা ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এখানে যে সব সুযোগ রয়েছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা হলো।
- ১) টুল বার, স্ট্যাটাস বার : কম্পিউটারের পর্দার উপরের দিকে থাকে টুল বার এবং নীচের দিকে থাকে স্ট্যাটাস বার। টুল বারে বিভিন্ন রকমের আইকন থাকে, যেগুলির একেকটি একেক রকম কাজ করে। যেমন, একটি আইকনের সাহায্যে কম্পিউটারের পর্দায় যে ওয়েব পেজটি খোলা আছে, তার আগের পাতায় যাওয়া যায়, আরেকটির সাহায্যে তার পরের পাতায় যাওয়া যায়। একটি আইকনের সাহায্যে কম্পিউটারের যে কাজ করতে চাওয়া হচ্ছে, তাকে থামিয়ে দেওয়া যায়, আবার আরেকটি আইকনের সাহায্যে কম্পিউটার থেকে তথ্য ছাপিয়ে নেওয়া যেতে পারে। স্ট্যাটাস বার সাধারণত কম্পিউটারের পর্দায় যে ওয়েব পেজটি খুলতে চাওয়া হচ্ছে, তার অবস্থান ও কম্পিউটারের কাজের খতিয়ান দেখা যায়।
- ২) ফন্টস : এর সাহায্যে ব্যবহারকারী কম্পিউটারের পর্দায় যে পাতাটি খোলা আছে তার নির্দিষ্ট আকার বেছে নিতে পারেন। এর মধ্যে কিছু উপ-সুযোগের ব্যবস্থাও রয়েছে, যেগুলির সাহায্যে সংশ্লিষ্ট পাতাটির আকার ঠিক করা যেতে পারে।
- ৩) স্টপ : ধরা যাক, কম্পিউটারকে কোনও একটি ওয়েব পেজ খোলার অথবা কোনও ওয়েব পেজের কোনও নির্দিষ্ট অংশকে কোনও ভাবে বিন্যস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন যদি ব্যবহারকারী সেই নির্দেশ পালন সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই তা বাতিল করতে চান, তা হলে স্টপ এর সাহায্যে তা করা যেতে পারে।
- ৪) রিফ্রেশ : এটি কম্পিউটারের পর্দায় যে ওয়েব পেজটি খোলা আছে, সেটিকে নতুন করে সাজিয়ে নেয়।
- ৫) সোর্স : এটি কম্পিউটারের পর্দায় যে ওয়েব পেজটি খোলা আছে, তার উত্সকে দেখায়।
গো
এই মেনুটি কোনও ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পাতার মধ্যে চলাফেরা করার সুযোগ করে দেয় ব্যবহারকারীকে। এর মধ্যে যে সব সুযোগকে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলো।
- ১) ব্যাক : এর সাহায্যে কম্পিউটারের পর্দায় যে ওয়েব পেজটি খোলা আছে, তার আগের পাতায় চলে যেতে পারেন ব্যবহারকারী।
- ২) ফরওয়ার্ড : এর সাহায্যে কম্পিউটারের পর্দায় যে ওয়েব পেজটি খোলা আছে, তার পরের পাতায় চলে যেতে পারেন ব্যবহারকারী।
- ৩) সার্চ : ইন্টারনেটে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে বের করতে চাইলে এটির সাহায্যে তা করা যেতে পারে।
- ৪) রিড মেল : এটি ইনবক্সকে খুলে দেয় কম্পিউটারের পর্দায়। যে ওয়েবসাইটটি কম্পিউটারের পর্দায় খোলা আছে, তাকে ই-মেল পাঠানো বার্তা ধরা থাকে ইনবক্সে।
- ৫) হিস্ট্রি : এটি ব্যবহারকারী তখন পর্যন্ত যতগুলি ওয়েব পেজ দেখেছন, তার সম্পূর্ণ তালিকা দেখায়।
- ৬) ফেভারিটস : যে সব ওয়েবসাইট বারবার দেখা হয়, তার তালিকা থাকে এখানে।
- ক) অ্যাড টু ফেভারিটস : ধরা যাক, ব্যবহারকারী যে ওয়েব পেজটি দেখছেন, সেটি ফেভারিটস এর তালিকার মধ্যে নেই। সে ক্ষেত্রে এর সাহায্যে তিনি ওই ওয়েব পেজটিকে তালিকাটিতে যুক্ত করে নিতে পারেন।
- খ) অর্গানাইজ ফেভারিটস : এটি ফেভারিটস-এর তালিকাভুক্ত ওয়েব পেজগুলির নাম দেখায়, যাদের মধ্যে থেকে ব্যবহারকারী তার পছন্দের ওয়েব পেজটিকে বেছে নিতে পারেন। এতে সেই ওয়েব পেজের অ্যাড্রেস বা নাম টাইপ করার সময় বেঁচে যাবে।
হেল্প
এই মেনুটি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ব্যবহারকারীকে জানায়। এখানে য়ে সব সুযোগ রয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
- ১) হেল্প টপিকস : এটি হেল্প উইন্ডোকে খুলে দেয়, যেখানে ব্যবহারকারী ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার সম্পর্কে তথ্য দেখাতে পারেন।
- ২) ওয়েব টিউটোরিয়াল : এটি ব্যবহারকারী এবং ওয়েব টিউটোরিয়ালের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
মাইক্রোসফট অন দ্য ওয়েব : এখানে আট রকমের সুযোগ রয়েছে, যেগুলির মাধ্যমে ব্যবহারকারী মাইক্রোসফটের বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে তথ্য জানতে পারেন। এর মধ্যেই ফ্রিকোয়েন্টলি আস্ক কোশ্চেনস ( যে সব প্রশ্ন বার বার জানতে চাওয়া হয় ) নামে একটি ব্যবস্থা আছে, যেখানে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া থাকে।
অন লাইন সাপোর্ট : ব্যবহারকারী যদি কোনও প্রশ্নের উত্তর জানতে চান, তা হলে এর সাহায্যে ইন্টারনেট থেকে সরাসরি (অন লাইন) উত্তর পেতে পারেন।
অ্যাবাউট ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার : এটি কম্পিউটারের যে প্রোগ্রাম অনুসৃত হচ্ছে, সে সম্পর্কে তথ্য, তার বয়ানের সংস্করণ এবং তার কপিরাইট সংক্রান্ত তথ্য ব্যবহারকারীকে জানায়।
সূত্র : কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, আই আই আই এম