নতুন পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করে শিক্ষা দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়। সর্বশিক্ষা মিশন থেকে শিক্ষকদের জন্য এই প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। শিক্ষকেরা যাঁরা এই প্রশিক্ষণ নিয়ে আলোচনা করেছেন, তাঁদের অর্ধেকের মতো এই বিষয়ে একমত যে তাঁরা প্রশিক্ষণগুলি নেওয়ার ফলে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছেন। আবার কিছু কিছু শিক্ষকের এ হেন অভিযোগ আছে যে প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি শুধুমাত্র সময় নষ্ট। কাকদ্বীপের অনিল কুমার কালসার কথানুযায়ী বছরের বিভিন্ন সময়ের এই প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি আসলে ভুরিভোজের আসর হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষণ শিখন সামগ্রীর মাধ্যমে যে শিক্ষাদান পদ্ধতির কথা বলা হয় তা ঠিকঠাক চলছে কি না তা দেখা হয় না। ফলস্বরূপ মূল্যায়েনর অভাবে কর্মশালাগুলি অধিকাংশ তার গুরুত্ব হারায়। আবার বহরমপুরের রবিউল ইসলাম বলছেন, কর্মশালাগুলির মাধ্যমে দ্রুত অর্থ খরচ করাই যেন হয়ে দাঁড়ায় সরকারের লক্ষ্য। আবার অনেক সময় শিক্ষেকেরা বলছেন যে কর্মশালাগুলি দীর্ঘায়িত করা হলে বিদ্যালয় চালাতে অসুবিধা হয়। যে বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অপ্রতুলতা সেই শিক্ষক যদি প্রশিক্ষণ শিবিরে গিয়ে ৪/৫ দিন ব্যয় করে আসেন অনেক সময়েই বিদ্যালয়ের শিশুরাও আর আসে না। বহরমপুরের দীপক কুমার রায়ের ন্যায় বারুইপুরের কনক কান্তি সরকার এবং আরও অনেকে কর্মশালা চলার ফলে শিক্ষাদিবস নষ্ট হওয়ার কথা বলেছেন। তবে অধিকাংশ শিক্ষকই সমর্থন করেছেন যে কর্মশালাগুলি অবশ্যই সাহায্যকারী এবং নিয়মিত কর্মশালাগুলিতে অংশগ্রহণে তাঁরা যথেষ্ট উপকৃত হয়েছেন। প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়টিতে আমরা দেখতে পেয়েছি, শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলির প্রতি চরম অবহেলা। বর্তমানে আমরা দেখেছি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে ইংরাজি, অঙ্ক ইত্যাদি বিষয় প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলির শিক্ষকদের অনেকেরই ক্ষোভ তাঁরা কোনও প্রকার প্রশিক্ষণই পান না। পেলেও তা যৎসামান্য। প্রশিক্ষণগুলি সঠিক সময়ে পেলে তাদের পক্ষেও শিশুদেরকে বিষয়গুলি আত্মস্থ করানো অনেক সহজ হত।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/28/2019