মাঝে মধ্যে শিক্ষকরা কনটিনজেন্সি ফান্ড থেকে অথবা টিএলএম-এর কিছু অর্থ দিয়ে ছেলেমেয়েদের খাতা পেনসিল কিনে দেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল যে শিক্ষকদের কথা থেকে জানা যায় যে কনটিনজেন্সি ফান্ড-এর অর্থ খুবই সামান্য যা হল মাত্র ৫০ টাকা। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার রাঙ্গাফলা জমাদারপাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকা শক্তিরানী গায়েন এক রকম ব্যাতিক্রমী কথা বলেন। তিনি জানালেন কুলপি ব্লক অফিস থেকে খাতা পেনসিল দেওয়া হয়।
অনেকটা একই ধরনের চিত্র উঠে আসে পাঠ্যবই–এর ক্ষেত্রেও। ২৫ জন শিক্ষক – এর লেখায় পাঠ্যবই-এর কথা আলোচিত হয়েছে। প্রত্যেকের কথা থেকেই উঠে এসেছে পাঠ্যপুস্তকের অপ্রতুলতার কথা। প্রত্যেকের গলাতেই প্রায় একই অভিযোগের সুর, ‘পাঠ্যবই সঠিক সময়ে পাই না। এ বার দেখবেন বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র শিক্ষক হাজিরা খাতা এখন পর্যন্ত পৌঁছয়নি।’
অধিকাংশ শিক্ষকই বলছেন যে শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই প্রত্যেকটি ছাত্রছাত্রী বই না পাওয়ার জন্য পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। পুরুলিয়ার আড়িডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবোধ কুমার দেওঘরিয়া লিখছেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি বই ছাত্রছাত্রীদের তুলে দেওয়া পঠনপাঠনের গতি নির্দিষ্ট পথে এগিয়ে যায়।’
শিক্ষকদের অনেক কথার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি দেওয়ার কথাটিও উঠে এসেছে। শিক্ষকদের মতে যে সমস্ত শিশু দারিদ্রসীমার নীচে থেকে উঠে এসেছে, যারা অনুন্নত সম্প্রদায় থেকে উঠে এসেছে, তাদের বৃত্তি প্রদান করতে হবে।
মিড–ডে মিল, শিশুদের জন্য পোশাকের প্রয়োজনীয়তার যেমন বিশাল গুরুত্ব আছে, সেই রকমই পাঠ্যবই, স্টেশনারি দ্রব্যের গুরুত্বও কিছু কম নয়। স্টেশনারি দ্রব্য, পাঠ্য বই ছাড়া কখনওই সুষ্ঠু ভাবে পড়াশোনা করা সম্ভবই না। সেই রকম একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এতখানি অবহেলা করা হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষাকে সুষ্ঠু এবং সমতাপূর্ণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মিড ডে মিলের সুষ্ঠু রূপায়ণ, পোশাক বিতরণকে সর্বজনীন করা, সময়ে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়া, ইত্যাদির সঙ্গে অন্যান্য উপকরণের যে চাহিদা সেগুলি পূরণ করার উপর সরকারি দৃষ্টি নিক্ষেপটি খুবই জরুরি।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/2/2020