বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক সমস্যা রয়েছে। এক দিকে যেমন আছে স্কুল কর্তৃপক্ষের নিয়মিত টাকাপয়সা পাওয়ার সমস্যা তেমনই আছে চালের নিম্নমান নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ। এর উপর আবার আছে চালের যে বরাদ্দ আছে তার অপ্রতুলতাজনিত সমস্যা। এ সব প্রশাসনিক সমস্যা নিয়ে বিদ্যালয় তো জেরবার হয়ই, কিন্তু এর পাশাপাশি আবার কিছু জায়গায় আছে সামাজিক সমস্যা --- সামাজিক বৈষম্য। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে বাবা, মায়ের নিষেধ উপেক্ষা করে শিশুরা এক সঙ্গে বসে মিলেমিশে মিড ডে মিল খাচ্ছে। অনেক শিক্ষকের কথা থেকেও এই ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মিড ডে মিল যে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধের সৃষ্টি করছে তার প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে বহু শিক্ষকের কোথায়। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই কি এটা সত্যি? জলপাইগুড়ি জেলার বেশ কয়েক জন শিক্ষকদের কথায় জানা গেছে, মিড ডে মিল খাওয়া নিয়ে ঘটে যাচ্ছে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে অশান্তি। এক জন শিক্ষক যেমন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে মধ্যাহ্ন ভোজনেও একাধিক সমস্যা। হাতে গোনা কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক হিন্দু মহিলা রয়েছেন — সেই সাথে আদিবাসীরাও বটে। কিন্তু এখানে দীর্ঘদিনের সমস্যা হল — হিন্দু রান্না করলে মুসলমান খাবে না। মুসলমানরা রান্না করলে হিন্দু তার ধার মাড়াবে না।’
কিন্তু শিক্ষকরাই আবার নিজেরাই এই সামাজিক সমস্যাগুলোর মোকাবিলা করছেন, সমাধানও অনেকটা করে ফেলছেন, অন্যদের সাহায্য নিয়ে। সামাজিক সমস্যা তো তাঁরা দূর করছেন, কিন্তু সরকারি নীতিকে তাঁরা বদলাবেন কী করে ? কী করে তাঁরা নিশ্চিত হবেন যে সময়মতো টাকা পাওয়া যাবে? কবে বাজার দরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রান্নার খরচপত্রের বরাদ্দ স্থির হবে? চালের মান ঠিকঠাক রাখার জন্য সরকারি পদক্ষেপ কবে নেওয়া হবে? এ সব প্রশ্নই তো এখন বড় হয়ে উঠছে। মিড ডে মিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ভালো ভাবে চালাতে গেলে এই সব প্রশাসনিক সমস্যার অতি দ্রুত মীমাংসা হওয়া দরকার।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/30/2020