অভিভাবকদের সঙ্গেও নিবিড় আত্মিক সম্পর্ক স্থাপন করা দরকার। অভিভাবক সমাজ যখন তার অতি নিকটের এক জন মাস্টারমশাই কিংবা দিদিমণিকে পান যার কাছে তিনি তাঁর নিজের কথা, পরিবার পরিজনের কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারেন, তখন উক্ত মাস্টারমশাই কিংবা দিদিমণির কথা শুনে তাঁর শিশুর দিকে নজর দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করবেন। বাড়িতে তাঁর সন্তানের প্রতি আরও বেশি করে যত্নবান হবেন, ‘শিশুর কাছে’ বিদ্যালয়ের ভাল মন্দ জানতে চাইবেন এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করবেন।
শিক্ষকগণ অনেক বছর ধরেই নানান ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে চলেছেন। এই প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে, শিক্ষককের কর্মদক্ষতা ও কুশলতা বৃদ্ধি পায়। শিখন সামর্থ্য অর্জন করানোর উন্নততর পদ্ধতিগুলি তাঁরা আত্মস্থ করতে পারেন। বিদ্যালয় পরিবেশে শিশুদের মাঝে তা ব্যবহার করার কৌশল জানতে পারেন এবং সেগুলো ক্লাসে যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করতে পারেন।
আমরা জানি যে, ‘learners are candles and they have the power of lighting’ আমাদের কাজ কচিকাঁচাগুলোকে সঠিক ভাবে গাইড করা। সঠিক দিক নির্দেশ করা, কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ, সে সব চিনতে সাহায্য করা। তাদের একটা সুন্দর মন তৈরি করে দেওয়া। যার সাহায্যে শিশুটি যেন কোনও বিষয়ের প্রথমেই খারাপ বা নেতিবাচক দিকগুলিকে সামনে না এনে যেগুলি ভালো সুন্দর সেগুলিকে আরও বেশি তুলে ধরে এবং খারাপগুলিকে বর্জন করার মানসিকতা তৈরি করে।
আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ওদের সঙ্গে একটু বেশি সময় দিলে একটা আনন্দঘন সৃজনশীল পরিবেশ তৈরি করে শিশুদের সম্যক ভাবে কাজের মধ্যে যুক্ত করতে পারলে ওরা অনেক বেশি স্ব-শিখন এবং স্ব-লিখনের সার্মথ্য অর্জন করতে পারে। বিদ্যালয়ছুট হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়। বিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষকদের সঙ্গে সঙ্গে শিশুরও একাত্মতা তৈরি হওয়া দরকার। বেশি সামর্থ্যযুক্ত শিশুর সঙ্গে কম সামর্থ্যযুক্ত শিশুর যে ফারাক থাকে তা অনেক কমে যায়।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019