শিক্ষাক্ষেত্রে রেডিও ও টেলিভিশন ব্যবহৃত হয় ১৯২০ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে। তিনটি শর্ত আছে শিক্ষাক্ষেত্রে রেডিও ও টেলিভিশন ব্যবহারের ব্যাপারে ---
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও যুক্তিযুক্ত শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা সম্প্রচারের উদাহরণ হল সংযোগমূলক রেডিও সম্প্রচার (আইআরআই)। এটি দৈনিক প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট শ্রেণিকক্ষে ‘তৈরি শিক্ষা সম্প্রচার’কে বোঝায়। কম সুবিধাযুক্ত অঞ্চলে রেডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের নির্দ্দিষ্ট স্তরের উপর যেমন অঙ্ক, বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য এবং ভাষা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে, যা নিয়মিত ভাবে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে সচেষ্ট। আইআরআই প্রকল্প ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে কার্যকর হয়েছে। এশিয়াতে আইআরআই প্রথম গঠিত হয় ১৯৮০ সালে থাইল্যান্ডে। ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং নেপালে ১৯৯০ সালে এই প্রকল্প চালু হয়। অন্যান্য শিক্ষামূলক সংস্থার থেকে আইআরআই-এর পার্থক্য হল এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য শিক্ষার মান ও পরিধি বাড়ানো যা প্রথাগত ও অপ্রথাগত দু’ধরনের শিক্ষাতেই কার্যকর। বিশ্ব-গবেষণা বলছে যে আইআরআই-এর একটি সফল প্রভাব আছে শিক্ষাক্ষেত্রে এবং আর্থিক দিক থেকে এটি প্রমাণ করেছে যে এর পদ্ধতি অনেক কম ব্যয়বহুল এবং অন্যগুলির থেকে সুযোগ্য।
কেন্দ্রীয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান বেতারের সাহায্যে সারা দেশে সম্প্রচারিত হয় বিদ্যালয়ের সময়ে যা একই পদ্ধতিতে কাজ করে সর্বত্র। প্রত্যেক ঘণ্টায় বিভিন্ন নির্দিষ্ট বিষয় তুলে ধরা হয় এবং শিক্ষামূলক তথ্য দেওয়া হয়। ছাত্ররা বিভিন্ন ধরনের শিক্ষকের সঙ্গে পরিচিত হয় এর ফলে কিন্তু এক জন গৃহ শিক্ষক থাকেন যিনি প্রত্যেককে নিয়ম করে শেখান।
“বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তির উন্নতি ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটেছে, কথা বলার যন্ত্রের পরিবর্তে আরও উন্নত কার্যকর যন্ত্র এসেছে, যা পদ্ধতির সাংগঠনিক বিকাশে সাহায্য করে। এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাংগঠনিক সমন্বয় করা হয়, শিশুদের পরিশীলিত শিক্ষা দেওয়া হয়, ছোট সংস্থাকে বড় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করা এবং শিশুদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য সাংগঠনিক কাজ করা হয়।”
টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসাহ প্রদানে পড়া ছেড়ে দেওয়ার পরিসংখ্যান সাধারণ বিদ্যালয় ও উন্নত প্রযুক্তির বিদ্যালয়ে কম। এশিয়ার চিনে ৪৪টি রেডিও এবং টিভি বিশ্ববিদ্যালয় আছে (চায়না কেন্দ্রীয় রেডিও এবং টিভি বিশ্ববিদ্যালয় সহ) ইন্দোনেশিয়ার টারবুকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্দিরা গান্ধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় রেডিও ও টেলিভিশন শিক্ষার প্রচলন করেছে। প্রথাগত এবং দূরশিক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই এই সম্প্রচার অনেকদূর প্রসারিত হয়েছে। এই সম্প্রচার প্রায়ই ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয় অথবা বেতারে সম্প্রচারিত হয়।
জাপান বিশ্ববিদ্যালয় ২০০০ সালে রেডিওর জন্য ১৬০টি এবং টেলিভিশনের জন্য ১৬০টি কোর্স চালু করেছে। প্রত্যেকটি কোর্সে সপ্তাহে এক বার সারা দেশে ১৫-২০ মিনিটের একটি শিক্ষা সম্প্রচার হয় যা ১৫ সপ্তাহের জন্য হয়। এই সম্প্রচার সকাল ৬ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যানেলে হয়। ছাত্রদের ছাপানো বিষয়বস্তু সামনাসামনি, তথ্য ও অনলাইন শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রায়ই ছাপানো বিষয়বস্তু, ক্যাসেট, সিডি-রম, বিদ্যালয় সম্প্রচার, সরাসরি শ্রেণিশিক্ষা জাতীয় স্তরে চলে যায় এবং বিষয় ভিত্তিক স্তরে উন্নীত হয়। শিক্ষা সম্প্রচার শ্রেণিশিক্ষার তুলনায় বেশি কার্যকর নয় বা শিক্ষকের থেকে বেশি গ্রহণীয় নয়। তবে এটা একটি ধারাবাহিক শিক্ষার থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু পাওয়া যায়। আইআরআই-এর তুলনায় বিদ্যালয় সম্প্রচার অনেক বেশি গ্রহণীয় যেখানে শিক্ষকরা বিষয়বস্ত ঠিক করে দেয়। বৃহৎ সম্প্রচার সংস্থা যেখানে বিদ্যালয় সম্প্রচার ব্রিটিশ সম্প্রচার সংস্থার সঙ্গেসঙ্গে যুক্ত এবং জাপানের এনএইচকে সম্প্রচার কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত। উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষা সম্প্রচার প্রায়ই শিক্ষা মন্ত্রক এবং তথ্য মন্ত্রকের মধ্যে সংযোগ ঘটায়।
সাধারণ শিক্ষা পদ্ধতিতে বৃহৎ পরিকাঠামো যুক্ত হয়, যেমন সংবাদ প্রকল্প, তথ্য প্রকল্প, কুইজ, শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ইত্যাদি যা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য প্রযোজ্য। রেডিও এবং টিভি-র যে কোনও তথ্য এবং শিক্ষানির্ভর অনুষ্ঠান এই শ্রেণিভুক্ত হতে পারে। কিছু উদাহরণ হল ইউনাইটেড স্টেটস-এর সেসেম স্ট্রিট, জাতীয় ভৌগোলিক ও ডিস্কভারি চ্যানেল এবং আমেরিকার রেডিও অনুষ্ঠান। দূরশিক্ষার ক্ষেত্রে আরও একটি উদাহরণ হল ১৯৪০ সালে প্রচলিত কানাডার ফার্ম রেডিও ফোরাম যা আজও সারা বিশ্বে শিক্ষা সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/4/2020